মুম্বই : হিন্দুত্ববাদী নেতা বীর সাভারকর সম্বন্ধে পড়াশোনা করে নিজেকে আলোকিত করুক। কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধীকে যেন এই মর্মে নির্দেশ দেয় আদালত। আবেদনকারীর এই আবেদন খারিজ করে দিল বম্বে হাইকোর্ট। 

'অভিনব ভারত কংগ্রেস' নামে একটি সংগঠনের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি এই আবেদনকারী পঙ্কজ কুমুচন্দ্র ফড়ণীশ। আদালতের কাছে পিটিশনে তিনি উল্লেখ করেছেন, গান্ধীর (রাহুল গান্ধী) সাভারকারকে নিয়ে "অপরিণত ও দায়ত্বজ্ঞানহীন" মন্তব্য প্রচুর বিভ্রান্তি ছড়াচ্ছে। প্রসঙ্গত, ফডণীশ একজন সাভারকর-বিশেষজ্ঞ। 

আবেদনকারীকে বম্বে হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি অলোক আরাধে ও বিচারপতি সন্দীপ মার্নের বেঞ্চ জিজ্ঞাসা করে, "আপনি আবেদন করেছেন যে তাঁকে (রাহুল গান্ধীকে) আপনার আবেদনটি ব্যক্তিগতভাবে পড়ার নির্দেশ দেওয়া হোক। আদালত কীভাবে তাঁকে আপনার আবেদনটি পড়তে বাধ্য করতে পারে?" এর উত্তরে আবেদনকারী বলেন, "উনি বিরোধী দলনেতা এবং বিভ্রান্তি ছড়াচ্ছেন। যদি উনি প্রধানমন্ত্রী হন, তাহলে ধ্বংসযজ্ঞ সৃষ্টি করবেন।" তখন আদালত আবেদনকারীকে প্রশ্ন করেন, "আমরা জানি না। আপনি জানেন উনি (রাহুল গান্ধী) প্রধানমন্ত্রী হবেন ?"

যদিও আদালত জানিয়ে দেয় যে, রাহুল গান্ধীর বিরুদ্ধে মানহানির মামলা করার আইনি প্রতিকার আছে আবেদনকারীর কাছে। বেঞ্চ আরও উল্লেখ করেছে যে, বীর সাভারকরের নাতি ইতিমধ্যেই পুণের একটি ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মানহানির অভিযোগ করেছেন এবং একই বিষয়ে ইতিমধ্যে বিচার চলছে।

বেঞ্চ আরও উল্লেখ করেছে যে, আবেদনকারী এই বছরের শুরুতে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিলেন, যেখানে তাঁর আবেদন খারিজ করে দেওয়া হয়েছে। সুপ্রিম কোর্টে ফড়ণীশ ১৯৫০ সালের প্রতীক ও নাম (অনুপযুক্ত ব্যবহার প্রতিরোধ) আইনের শিডিউলে সাভারকরের নাম অন্তর্ভুক্ত করার দাবি জানান। আইনটি পেশাদার ও বাণিজ্যিক উদ্দেশ্যে নির্দিষ্ট প্রতীক ও নামের অনুপযুক্ত ব্যবহার রোধ করার উদ্দেশ্যে তৈরি।

গত এপ্রিল মাসে, সাভারকরের বিরুদ্ধে গান্ধীর আপত্তিকর মন্তব্যের জন্য সুপ্রিম কোর্ট তীব্র সমালোচনা করে বলে যে, স্বাধীনতা সংগ্রামীদের বিরুদ্ধে এই ধরনের মন্তব্য আদালত অনুমোদন করবে না। প্রসঙ্গত, ২০২২ সালে 'ভারত জোড়ো যাত্রার' সময় সাভারকারকে "ব্রিটিশ ভৃত্য" বলার অভিযোগ ওঠে গান্ধীর বিরুদ্ধে। 

প্রসঙ্গত, হিন্দুত্ববাদী নেতা বিনায়ক দামোদর সাভারকর এবং মহাত্মা গাঁধীর হত্যাকারী নাথুরাম গডসের মধ্যে পারিবারিক সম্পর্ক ছিল বলে গত মে মাসে আদালতে দাবি করেছিলেন রাহুল। রাহুলের বিরুদ্ধে মানহানি মামলা দায়ের করেছিলেন বিনায়ক সাভারকরের প্রপৌত্র (ভাইয়ের পৌত্র) সাত্যকি সাভারকর। তার জবাবে যে হলফনামা জমা দেন রাহুল, তাতে তিনি জানান, জেনেশুনে গডসেদের সঙ্গে পারিবারিক সম্পর্ক আড়াল করছেন সাত্যকি।