Uncle Killed Father: 'মা দাঁড়িয়ে দেখছিল। কাকু বাবাকে বালিশ চাপা দিয়ে মেরে ফেলল।'... এমনই হাড়হিম করা স্বীকারোক্তি করেছে ৯ বছরের এক কিশোর। চোখের সামনে বাবাকে শেষ হতে দেখেছে সে। আর তার নেপথ্যে ছিল কিশোরের মা এবং প্রেমিক, যাকে বাচ্চাটি কাকু বলে সম্বোধন করত। রাজস্থানের আলওয়ার জেলার খেরলি এলাকায় এই মর্মান্তিক ঘটনা ঘটেছে। মৃত্যু হয়েছে মান সিং যাতভ ওরফে বীরু নামের এক ব্যক্তির। ওই ব্যক্তির বাড়ি থেকেই উদ্ধার হয় তাঁর মৃতদেহ। মান সিং যাদবের স্ত্রী অনিতা প্রথমে দাবি করেছিলেন, আচমকা অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন তাঁর স্বামী। তবে তদন্তে নেমে পরের ৪৮ ঘণ্টার মধ্যেই কিশোরের স্বীকারোক্তি শুনে আসল তথ্য প্রকাশ করেছে পুলিশ।
পুলিশ সূত্রে খবর, ওই কিশোর জানিয়েছে, ঘটনার দিন রাতে তার মা বাড়ির দরজা খোলা রেখেছিল ইচ্ছে করেই। মাঝরাতে চারজন লোক আসে তাদের বাড়িতে। সঙ্গে ছিল কিশোরের পরিচিত 'কাশী কাকু'। পুলিশ পরে জানতে পেরেছে এই ব্যক্তির আসল নাম কাশীরাম প্রজাপত। এই ব্যক্তির সঙ্গে অনিতার বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্ক তৈরি হয়েছিল বলে পুলিশ সূত্রে খবর। এই প্রেমিক এবং চার ভাড়াটে খুনির সাহায্যেই স্বামীকে মেরে ফেলেছেন অনিতা। কাশী এবং বাকি লোকজন বাড়িতে ঢুকে দেখে বিছানায় শুয়ে ঘুমোচ্ছেন বীরু। সেই সময়ে তাঁকে অত্যাচার করে, মুখে বালিশ চাপা দিয়ে শ্বাসরোধ করে খুন করে কাশী ও তার দলবল। পাশেই শুয়ে ছিল ওই কিশোর। তবে ঘুমের ভান করেছিল সে। তাই সবটাই তার নজরে এসেছিল।
পুলিশ সূত্রে খবর, ওই কিশোর তার স্বীকারোক্তিতে বলেছে, 'আমি সবে ঘুমিয়েছিলাম। তখনই দরজায় হাল্কা শব্দ পাই। চোখ খুলে দেখি মা দরজা খুলে দিচ্ছে। কাশী কাকু বাইরে দাঁড়িয়ে। সঙ্গে আরও চারটে লোক। আমি ভয় পেয়ে গিয়েছিলাম, তাই উঠিনি। চুপ করে সবটা দেখছিলাম। ওরা আমাদের ঘরে এল। আমি জেগে উঠে দেখলাম মা বিছানার পাশে দাঁড়িয়ে রয়েছে। ওই লোকগুলো বাবাকে ঘুষি মারছিল। পা মুচড়ে দিচ্ছিল। গলা টিপে ধরেছিল। কাশী কাকু বাবার মুখে বালিশ চেপে ধরেছিল। যখন আমি বাবার কাছে গিয়েছিলাম, কাশী কাকু আমায় কোলে তুলে নেয়, প্রচণ্ড বকা দেয়, ভয় দেখায়। ভয়ে আমি চুল করে গিয়েছিলাম। কয়েক মিনিট পরে বাবা মরে গেল। তারপর সবাই চলে গেল।'
ইতিমধ্যে অনিতা, কাশীরাম এবং ব্রিজেশ যাতাভ নামের এক ভাড়াটে খুনিকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। বাকি ৩ অভিযুক্তর খোঁজে চলছে তল্লাশি। মৃতের দাদার অভিযোগের ভিত্তিতেই তদন্ত শুরু করেছিল পুলিশ। খতিয়ে দেখা হয়েছিল ১০০-র বেশি সিসিটিভি ফুটেজের ক্লিপিংস। খতিয়ে দেখা হয়েছিল কল রেকর্ড। পুলিশ সূত্রে খবর, স্বামীকে খুন করার জন্য, ভাড়াটে খুনিদের ২ লক্ষ টাকা সুপারি দিয়েছিলেন অনিতা এবং তাঁর প্রেমিক। অনিতা প্রথমে শ্বশুরবাড়ির লোকজন, আত্মীয়-স্বজনকে বলেছিলেন আচমকা অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন বীরু। তবে তাঁর শরীরের আঘাতের চিহ্ন, ভাঙা দাঁত, শ্বাসরোধ করার চিহ্ন সন্দেহ তৈরি করে। তারপর মেডিক্যাল পরীক্ষা করে দেখা যায় বীরু খুন হয়েছেন। এরপরই জোরকদমে তদন্ত শুরু করে পুলিশ। বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্কের জেরেই প্রেমিকের সঙ্গে মিলে অনিতাই তাঁর স্বামীকে খুন করেছেন, প্রাথমিক তদন্তের পর এমনটাই দাবি করেছে পুলিশ।