নয়াদিল্লি: দিল্লির হিংসার আগুনে যাঁদের ঘর আক্ষরিক অর্থেই পুড়ে ছাই হয়েছে, সেই হতভাগ্যদেরই একজন মহম্মদ আনিস। বিএসএফের কনস্টেবল ২৯ বছরের আনিস কর্মসূত্রে আছেন শিলিগুড়ির   কাছে রাধাবাড়িতে সীমান্ত রক্ষী বাহিনীর ক্য়াম্পে।  তিনি  যখন বাড়ি, পরিবার থেকে বহু দূরে, তখন তাঁর দিল্লির খাজুরিখাসের বাড়িতে আগুন লাগিয়েছে দাঙ্গাবাজরা। মিডিয়ার মাধ্যমে  বিএসএফ কর্তৃপক্ষ তা জানতে পারে তাঁকে নতুন একটি বাড়ি তৈরি করে দেবে বলে ঘোষণা করেছে। তারা আনিসকে এটা ‘বিয়ের উপহার’ হিসাবে দেবে। আর আনিস যাতে পরিবারের সঙ্গে থেকে নিজের বিয়ের প্রস্তুতি নিতে পারেন, সেজন্য় তাঁকে ‘খুব শীঘ্রই’  দিল্লিতে বদলি করার সিদ্ধান্তও নেওয়া হয়েছে।


জনৈক বিএসএফ অফিসার বলেছেন,  উত্তরপূর্ব দিল্লির সাম্প্রতিক সাম্প্রদায়িক সংঘর্ষে  ওই জওয়ানের বাড়ির বিরাট ক্ষতি হয়েছে। পরিবারের সদস্যরা বেঁচে  গেলেও গোটা বাড়িটাই নতুন করে বানিয়ে সংস্কার করতে হবে।


শনিবার আনিসের বাবা-মা ও পরিবারের বাকিদের সঙ্গে  দেখা করে তাঁদের যাবতীয় সহায়তার প্রতিশ্রুতি ও ভরসা দেন। তিনি বলেন, আমরা বাহিনীর কল্যাণ তহবিল থেকে ওঁকে ১০ লাখ টাকা সাহায্যের সিদ্ধান্ত নিয়েছি। এছাড়া এক পক্ষকালের মধ্যেই বাহিনীর ইঞ্জিনিয়ারিং শাখা ওঁদের নতুন বাড়ি বানিয়ে দেবে। বিএসএফ প্রধান তথা ডিরেক্টর জেনারেল ভি কে জোহরি কনস্টেবলের পরিবারকে যাবতীয় সাহায্যের বন্দোবস্ত করতে বলেছেন বলে জানান ওই অফিসার।


তিনি বলেন, এপ্রিলেই ওই জওয়ানের বিয়ে। তার আগেই আমাদের নতুন বাড়ি করে দেওয়া উচিত বলে মনে হয়। ব্য়াপারটা ওঁর  কাছে বিয়ের গিফটই হবে একপ্রকার। বিএসএফ একটা পরিবার, যখনই তার কোনও একজন সদস্যের প্রয়োজন হয়, বাহিনীর যাবতীয় রসদ সেজন্য জোগাড় করা হয়। আমরা ওঁদের বলেছি, আর কোনও সাহায্য়ের দরকার হলে যেন অবশ্যই আমাদের জানানো হয়।


২০১৩-য় বিএসএফে যোগ দিয়েছিলেন আনিস। ওড়িশায় নকশাল-দমন অভিযানে ডিউটি শেষ করে পশ্চিমবঙ্গে পোস্টিং পান তিনি। নিজের বাড়ি হিংসায় ভস্মীভূত হওয়ার কথা তাঁদের বিন্দুমাত্র আনিস জানাননি, বলেছেন বাহিনীর শীর্ষকর্তারা। বাহিনীর প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশের পর আনিসের পরিবার বলেছেন, শান্তি, ভ্রাতৃত্ব, স্বাভাবিক পরিবেশ ফিরে আসুক, শুধু এটুকুই চান তাঁরা।