কমলকৃষ্ণ দে, বর্ধমান : মর্মান্তিক। বাবার মৃত্যুর খবর পাওয়ার পর হাসপাতালের ছয় তলা থেকে ঝাঁপ দিয়ে আত্মহত্যা করলেন এক যুবক। শুধু তাই নয়, নিজেকে বাবার মৃত্যুর জন্য দায়ী করে দাদার কাছে মেসেজও পাঠিয়েছেন তিনি। দুর্গাপুরের একটি বেসরকারি হাসপাতালের ছয় তলা থেকে ঝাঁপ দিয়ে আত্মঘাতী হন ছোট ছেলে। মৃতের নাম অশোক রুইদাস। তিনি বর্ধমানের বিবেকানন্দ কলেজের ইংরাজি অনার্সের তৃতীয় বর্ষের ছাত্র ছিলেন।
স্থানীয় ও পরিবার সূত্রে জানা গেছে, গতকাল বিকেল সাড়ে পাঁচটা নাগাদ দুর্গাপুরের একটি বেসরকারি হাসপাতালে মৃত্যু হয় কার্তিক রুইদাসের (৪৯)। বিগত কয়েক দিন ধরে ব্রেন স্ট্রোকে আক্রান্ত হয়ে বর্ধমানের মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে এবং বর্ধমানে একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন তিনি। সেখানে চিকিৎসা চলছিল তাঁর। এর পর অবস্থার অবনতি হওয়ায় দুর্গাপুরের একটি বেসরকারি হাসপাতালে তাঁকে ভর্তি করা হয়েছিল। গতকাল বিকেল সাড়ে পাঁচটা নাগাদ তাঁর(কার্তিক রুইদাস) মৃত্যু হয়। বাবার মৃত্যুর খবর আসতেই ভেঙে পড়েন অশোক। দাদা অলোক রুইদাসকে খবরটা জানান। খবর পেয়ে ভেঙে পড়বেন বলে মা-কে তাঁরা কিছুই জানাননি।
এরপর সাড়ে নটা নাগাদ একটা ফোন আসতেই বেরিয়ে যান অশোক। জানা গেছে, দাদা বারে বারে ফোন করলেও ভাই ফোন কেটে দেন। অবশেষে অশোক তাঁর দাদার ফোনে একটি মেসেজ পাঠান, "বাবার মৃত্যুর জন্য আমি দায়ী"। এই ঘটনার আধ ঘণ্টা পর হাসপাতাল চত্বরে পৌঁছে তাঁর দাদা জানতে পারেন, ভাই ছয় তলা বিল্ডিংয়ের উপর থেকে ঝাঁপ দেওয়ায় মৃত্যু হয়েছে।
অশোক রুইদাসের ইংলিশ অনার্স শেষ করে ব্যাঙ্গালোরে পড়তে যাওয়ার কথা ছিল । আজ বাবা ও ছেলের মৃতদেহ খণ্ডঘোষের তোড়কোনার বাড়িতে নিয়ে আসা হয়। সেখানেই তাঁদের শেষকৃত্য হয়। ঘটনার জেরে এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে। আচমকা এই ধরনের ঘটনায় হতবাক সকলেই। তাঁরা বিশ্বাসই করতে পারছেন না।