নয়াদিল্লি: জামিয়া মিলিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে অশান্তি, হিংসায় পুলিশের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা চেয়ে পেশ হওয়া একগুচ্ছ পিটিশনের ব্যাপারে কেন্দ্র ও দিল্লি পুলিশের বক্তব্য জানতে চাইল দিল্লি হাইকোর্ট। সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন (সিএএ) বিরোধী বিক্ষোভ ঘিরে জামিয়ার অশান্তির ব্যাপারে তথ্যানুসন্ধানী কমিটি গঠনের দাবি করা হয়েছে একটি পিটিশনে। এ ব্যাপারে প্রধান বিচারপতি ডি এন পটেল, বিচারপতি সি হরি শঙ্করকে নিয়ে গঠিত হাইকোর্টের বেঞ্চ কেন্দ্র, পুলিশকে নোটিস দিয়েছে। তবে বেঞ্চ গ্রেফতারি সহ পড়ুয়াদের বিরুদ্ধে দমনমূলক ব্যবস্থা নেওয়া থেকে অন্তর্বর্তী সুরক্ষার দাবি খারিজ করে দেয়। আইনজীবীরা এর প্রতিবাদে ‘শেম’, ‘শেম’ ধ্বনি দেন।
এদিন বিশ্ববিদ্যালয় পুনরায় খোলার দাবিতে দীর্ঘ সময় ধরে সওয়াল করেন একাধিক সিনিয়র আইনজীবী। এক পিটিশনারের আইনজীবী বলেন, রিপোর্টে প্রকাশ, এক ছাত্র প্রতিবাদ, বিক্ষোভের সময় দৃষ্টিশক্তি হারিয়েছেন। ৪৩২টি কাঁদানে গ্যাসের শেল ছোড়া হয়েছে, যা ২০১২-র পর সর্বাধিক। হিংসায় ৫২ জন পড়ুয়া জখম হয়েছেন। জামিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের চিফ প্রোক্টর পুলিশকে ক্যাম্পাসে ঢুকতে দেননি। এমন জরুরি পরিস্থিতি তৈরি হওয়ার কারণ জানাতে বলা হোক পুলিশকে। সিনিয়র আইনজীবী সঞ্জয় হেগড়ে বলেন, আদালতকে ঠিক করতে হবে, ক্যাম্পাসের ভিতরে পুলিশি বলপ্রয়োগের প্রয়োজন ছিল কিনা, পুলিশকে বলপ্রয়োগের অনুমতি দেওয়া হয়েছিল কিনা, তার যৌক্তিকতাই বা কী ছিল? বিনা অনুমতিতে পুলিশের লাইব্রেরি, শৌচাগারে ঢোকার কারণ ব্যাখ্যা করা উচিত বলেও উল্লেখ করেন তিনি।
পড়ুয়ারা ও পুলিশ পরস্পরের মুখোমুখি হয়েছে বলে উল্লেখ করেন সিনিয়র আইনজীবী ইন্দিরা জয়সিংহ। কী করে আশা করব যে, ভীত, সন্ত্রস্ত ছাত্রসমাজ আত্মরক্ষা করবে, পুলিশি নৃশংসতার বিরুদ্ধে নিজেদের অধিকার প্রয়োগ করবে? বলেন তিনি। আরও বলেন, আমি উদ্বিগ্ন পড়ুয়াদের অন্যায়, বেলাগাম গ্রেফতারি নিয়ে। আইনজীবীরা আত্মরক্ষা করতে পারেন, কী করে বিপন্ন পড়ুয়ারা পারবে বলে ভাবব? এমনকী গ্রেফতার পড়ুয়ারা ছাড়া পেয়েছেন নাগরিক সমাজের চাপে। পড়ুয়াদের বিরুদ্ধে রুজু হওয়া এফআইআরে তাদের বিরুদ্ধে কোনওরকম দমনমূলক ব্যবস্থা নেওয়া থেকে পুলিশকে বিরত রাখার পাশাপাশি দ্রুত মেডিকেল সহায়তা দেওয়ার দাবিও করেন তিনি। বলেন, আমরা চাই, তিস হাজারি সংঘর্ষের ঘটনায় যে ধরনের নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল, এক্ষেত্রেও একই পদক্ষেপ করা হোক।
আরেক আইনজীবী কলিন গনজালভেস বলেন, জামিয়ার পড়ুয়ারা উপাচার্য নাজমা আখতারকে পরীক্ষার আয়োজন করার অনুরোধ করেছিলেন। এটা দাঙ্গা করা পড়ুয়ারা এটা করবে না। কিন্তু তা সত্ত্বেও তারা পুলিশের হাতে মার খেলেন। এটা সংখ্যালঘু পড়ুয়াদের ওপর সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য আক্রমণ বলে উল্লেখ করে তিনি বলেন, উপাচার্য পর্যন্ত হিংসার তদন্ত চেয়েছেন। গনজালভেস বলেন, কিছু ছাত্র হয়ত পাথর ছুড়েছেন, কিন্তু মূল হামলা পুলিশই করেছে।