শিলিগুড়ি: খুব শীঘ্রই সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন (সিএএ) , ২০১৯ চালু হবে বলে সোমবার শিলিগুড়ির সভা থেকে জানালেন জেপি নড্ডা। কোভিড-১৯ সংক্রমণের জেরে তার রূপায়ণে দেরি হচ্ছে বলে অভিমত জানিয়েছেন বিজেপি সর্বভারতীয় সভাপতি। সোমবার স্থানীয় কিছু সামাজিক সংগঠনের সঙ্গে বৈঠকে তিনি বলেছেন, আপনারা সকলে সিএএ-র সুবিধা ভোগ করবেন। সংসদে আইন পাশ রয়েছে। আমরা তার প্রতি দায়বদ্ধ। কোভিড-১৯ অতিমারীর কারণে সিএএ-র বাস্তবায়নে বিলম্ব হচ্ছে। কিন্তু পরিস্থিতির ধীরে ধীরে উন্নতি হতে থাকায় কাজ শুরু হয়েছে, নিয়মকানুন তৈরি হচ্ছে। খুব দ্রুত সিএএ চালু হবে।
এর পাশাপাশি রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে তীব্র আক্রমণ করে তাঁর সরকার বিভাজন ঘটিয়ে শাসনের রাজনীতি করছে বলে অভিযোগ করেন নড্ডা। বলেন, বিজেপি সবার উন্নয়নের জন্য কাজ করে, কিন্তু মমতার সরকার বিভাজন ঘটিয়ে শাসন চালাচ্ছে। তৃণমূল সরকার রাজ্যে প্রধানমন্ত্রী-কিষাণ সম্মান নিধি যোজনা রূপায়ণ করতে দিচ্ছে না বলেও অভিযোগ করেন নড্ডা। আশ্বাস দেন, সামনের বছর বিধানসভা নির্বাচনে জিতে রাজ্যে ক্ষমতায় এলে বিজেপি রাজ্যের সব কৃষকের জন্য এই স্কিম চালু করবে। তিনি জানান, কেন্দ্রের সরকার ১০ কোটি কৃষকের জন্য প্রকল্পটি এনেছে। অথচ, মমতা সরকার তার প্রয়োগ করতে না দিয়ে তার সুফল থেকে মানুষকে বঞ্চিত করছে। বলেন, আপনাদের দায়িত্ব এপ্রিলের নির্বাচনে বিজেপিকে জিতিয়ে ক্ষমতায় আনা, এক মাসের মধ্যে আমরা এই প্রকল্প কার্যকর করব। তিনি বলেন, বাংলায় যা যা হয়নি, তালিকা করুন, মোদি সরকার করে দেবে। চিকিৎসা বিমার সুবিধাযুক্ত আয়ুষ্মান ভারত প্রকল্প মমতা এরাজ্যে কার্যকর করেননি বলেও অভিযোগ করেন তিনি।
নড্ডার ভাষণে ছিল আত্মনির্ভর ভারত প্যাকেজের কথাও, যাতে এফপিও ও কৃষি পরিকাঠামোর জন্য ১ লক্ষ কোটি টাকার সংস্থান করা হয়েছে। তিনি বলেন, আমাদের কৃষকদের জন্য এর আওতায় হিমঘর ও সাধারণ স্টোরেজ তৈরি করা হবে।
বিজেপি সাংসদদের তিনি পশ্চিমবঙ্গের স্থানীয় স্তরে উত্পাদিত পণ্যের তালিকা বানাতে ও সেগুলির বিপণনে রোডম্যাপ তৈরি করতেও বলেন। কেন্দ্রের মোদি সরকার স্থানীয় ভিত্তিতে তৈরি পণ্যের সঠিক ব্র্যান্ড বানিয়ে রাজ্যের স্থানীয় উত্পাদনকারীদের বাজারের বন্দোবস্ত করবে বলে জানান নড্ডা।
নড্ডা গোর্খা সম্প্রদায়কেও ধন্যবাদ দিয়ে তাঁরা সবসময় আমাদের পাশে থেকেছেন বলে মন্তব্য় করেন। বলেন, ওঁদের দুটো দাবির উল্লেখ আমাদের সংকল্প পত্রে অন্তর্ভূক্ত করা হয়েছে। একটি হল স্থায়ী রাজনৈতিক সমাধান, অপরটি গোর্খাদের ১১টি জনজাতির স্বীকৃতি।
মমতা সরকার হিন্দু সমাজের ওপর আঘাত করেছে বলেও অভিযোগ করেন নড্ডা। বলেন, ওরা ক্ষমতায় থাকার জন্য স্রেফ ভোটব্যাঙ্কের রাজনীতি করছে।
সোমবার উত্তরবঙ্গের নেতাদের নিয়ে শিলিগুড়িতে সাংগঠনিক বৈঠক করেন জে পি নাড্ডা। শুরুতে অমিত শাহর উত্তরবঙ্গে আসার কথা থাকলেও, পরে তাঁর কর্মসূচি বাতিল করা হয়। সেই জায়গায় এলেন জে পি নাড্ডা।