সৌভিক মজুমদার, কলকাতা: বন সহায়ক পদে নিয়োগ সংক্রান্ত মামলায় রাজ্য সরকারের কাছে হলফনামা তলব করল কলকাতা হাইকোর্ট। ৪ মার্চের মধ্যে হলফনামা জমা দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
বন সহায়ক পদে নিয়োগে অনিয়মের অভিযোগ ঘিরে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও সদ্য তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যোগদানকারী রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়ের বাগযুদ্ধ ইতিমধ্যেই চরমে উঠেছে। এরইমধ্যে বন সহায়ক পদে নিয়োগ নিয়ে একটি মামলার প্রেক্ষিতে রাজ্য সরকারের হলফনামা তলব করল কলকাতা হাইকোর্ট।
বছর খানের আগে এই অভিযোগ ওঠে বন আইন মেনে বনসহায়ক পদে নিয়োগ করা হয়নি। এমনকি যাঁরা এতদিন ধরে স্বেচ্ছায় জঙ্গল সুরক্ষার কাজ করে আসছেন, তাঁদের সুযোগ না দিয়ে অযোগ্য প্রার্থীদের সুযোগ দেওয়া হয়েছে বলেও অভিযোগ ওঠে।
মমতা-মন্ত্রিসভায় বনদফতরের দায়িত্ব ছিল রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়ের হাতে। ভোটের মুখে সম্প্রতি তিনিই দিল্লিতে বিজেপিতে যোগ দেন তিনি। আর তারপরই আলিপুরদুয়ার প্যারেড গ্রাউন্ড থেকে নাম না করে দুর্নীতির অভিযোগে রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়কে আক্রমণ করেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, একটা ছেলে চলে গেছে বিজেপিতে। এখন বড় বড় কথা বলছে। বন সহায়কের পদে নিয়োগ নিয়ে কিছু কারসাজি করেছে। আমাকে অনেকে খবর দিয়েছে। আমি তদন্তের নির্দেশ দিয়েছি।
রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায় এর আগে জানিয়েছিলেন, কে কে সুপারিশ করেছে। কোন জেলার নেতা করেছে। কালীঘাট থেকে কে সুপারিশ করেছে, সব নথি আছে। আমি নিরপেক্ষভাবে কাজ করতে চেয়েছিলাম। তৃণমূলের কোন নেতা-মন্ত্রী সুপারিশ করেছেন সব আমার কাছে আছে ।
এরপরই কলকাতা হাইকোর্টে মামলা করেন কয়েকজন চাকরিপ্রার্থী। সেই মামলায় এদিন, বিচারপতি রাজশেখর মান্থা বলেন, বন সহায়ক পদে কীভাবে নিয়োগ করা হয়েছে? নিয়োগের মেধাতালিকার কী অবস্থা? হলফনামার আকারে তা রাজ্য সরকারকে জানাতে নির্দেশ দিয়েছে কলকাতা হাইকোর্ট। ৪ মার্চের মধ্যে রাজ্যকে হলফনামা জমা দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
এই অবস্থায় নিয়োগে দুর্নীতির অভিযোগ নিয়ে তৃণমূলকে আক্রমণ করেছে বিজেপি। ২০১৬-র বিধানসভা ভোটের টেট কেলেঙ্কারি একটি গুরুত্বপূর্ণ ইস্যু হয়েছিল। আর ২০২১-এর বিধানসভা ভোটের আগে বন সহায়ক পদে নিয়োগে অনিয়মের অভিযোগকে হাতিয়ার করছে বিরোধীরা।