কলকাতা: এসএসকেএমে দালালচক্র ভাঙতে তৎপর প্রশাসন। পুলিশের পাতা ফাঁদে গ্রেফতার আরও দুই। ধৃতদের তিনদিনের পুলিশ হেফাজতের নির্দেশ। সরকারি হাসপাতালগুলিতে দালাল-রাজের অভিযোগ ভুরিভুরি। ব্যতিক্রম নয় রাজ্যের একমাত্র সরকারি সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালও। সেই দালালচক্রেরই কোমর ভাঙতে উদ্যোগী প্রশাসন। চলছে লাগাতার অভিযান। সূত্রের খবর, এসএসকেএম কর্তৃপক্ষ ও রোগী কল্যাণ সমিতি কয়েকজন দালালকে চিহ্নিত করেছে। তাদের হাতেনাতে ধরতে হাসপাতালে মোতায়েন করা হয়েছে সাদা পোশাকের পুলিশকর্মী। রয়েছে মহিলা পুলিশও। সূত্রের খবর, কোনও দালাল এসে জিজ্ঞাসা করলে, রোগীর আত্মীয় সেজে থাকা পুলিশকর্মীরা বলছেন, তাঁদের বেডের দরকার, কিন্তু বেড পাচ্ছেন না। তখনই মোটা টাকা দাবি করছে দালালরা। সেইমতো টাকাও বের করছন পুলিশকর্মীরা। আর টাকা নেওয়া মাত্রই গ্রেফতার করা হচ্ছে দালালদের! পুলিশ সূত্রে খবর, প্রথম দিনের অভিযানে এভাবেই ধরা পড়ে এক দালাল। গত ১০ তারিখ গ্রেফতার করা হয় তিন জনকে। সোমবার রাতে জালে আসে আরও দুই দালাল। ধৃত সুমন পাত্র ডোমজুড়ের বাসিন্দা এবং শেখ সুমনের বাড়ি মুর্শিদাবাদ। ধৃতদের বিরুদ্ধে প্রতারণার অভিযোগের ধারায় মামলা রুজু হয়েছে। কিন্তু কীভাবে বাড়বাড়ন্ত হচ্ছে দালালদের? কীভাবে জাল বিস্তার করছে তারা? পুলিশ সূত্রে দাবি, দালাল-চক্রের শিকড় অনেক গভীরে! তদন্তে উঠে এসেছে, এসএসকেএমের চিকিৎসক এবং গ্রুপ-ডি কর্মীদের একাংশের মদতেই দালালচক্রের রমরমা। ইতিমধ্যেই মদতদাতাদের চিহ্নিত করা হয়েছে। উপযুক্ত তথ্যপ্রমাণ পেলেই গ্রেফতার করা হবে। ক’দিন আগে এসএসকেএমের রোগী কল্যাণ সমিতির চেয়ারম্যান পদে এসেছেন, রাজ্যের মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস। তিনি জানিয়েছেন, মানুষকে বিনামূল্যে চিকিৎসা পরিষেবা দেওয়ার জন্য মুখ্যমন্ত্রী বদ্ধপরিকর। তা যাতে যথার্থভাবে রূপায়িত হয়, তার জন্য সর্বোতভাবে চেষ্টা চালানো হচ্ছে। সেক্ষেত্রে দালালরাজ বন্ধ করাটা অত্যন্ত প্রয়োজন। দালালরাজ বন্ধে অভিযানের পাশাপাশি, অবৈধ গাড়ি পার্কিং নিয়েও এসএসকেএমে কড়াকড়ি করা হয়েছে। স্বাস্থ্যের শরীর থেকে, এই সব ‘ব্যাধি’ দূর করতে ‘প্রশাসনের প্রেসক্রিপশনকে’ সাধুবাদ জানাচ্ছেন রোগী ও তাঁদের পরিজনরা।