কলকাতা: মাস আটেক আগে বাড়ি থেকে উধাও হয়ে গিয়েছিল দামী ল্যাপটপ। তারপর ৭ মার্চ বাড়ি থেকেই খোয়া যায় আইপড, প্লে স্টেশন, মোবাইল ফোন। ঘোর চিন্তায় পড়ে গিয়েছিলেন, কসবার বাসিন্দা, উচ্চপদস্থ এক সরকারি আধিকারিক। থানা-পুলিশ কম করেননি। কিন্তু, প্রথমে কোনও সূত্রই মিলছিল না। শেষমেষ যা সামনে এল, তাতে চক্ষু চড়কগাছ!


চুরির অভিযোগে আটক করা হয়েছে ওই সরকারি কর্তার ছেলের ২ সহপাঠীকে। পুলিশ সূত্রে দাবি, জেরায় অপরাধ কবুল করেছে কলকাতার নামী ইংরেজি মাধ্যমের ২ পড়ুয়া।

কীভাবে চুরির কিনারা করলেন তদন্তকারীরা? পুলিশ সূত্রে দাবি, ওই সরকারি কর্তার ছেলের সঙ্গে কথা বলে জানা যায় বাড়িতে প্রায়ই যাতায়াত করত তার স্কুলের ২ বন্ধু। এরপর ওই দুই বন্ধুকে জিজ্ঞাসাবাদ এবং তাদের মোবাইল ফোন খতিয়ে দেখে পুলিশ। তাদের হোয়াটস অ্যাপ অ্যাকাউন্ট থেকে জানা যায়, চ্যাটে এক ছাত্র আরেক ছাত্রকে বলেছে, ‘ওদের বাড়িতে যেমন কাকাতুয়া রয়েছে, আমিও একটা গিনিপিগ কিনব’।

পুলিশও তদন্ত করে জানতে পারে ওই ছাত্র সত্যিই গিনিপিগ কিনেছে। কিন্তু টাকা কে দিল? পুলিশ সূত্রে খবর, পরিবারের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, বাড়ির লোক কোনও টাকা দেননি। এরপরই জেরার মুখে ভেঙে পড়ে ২ কিশোর। জেরায় তারা স্বীকার করে, বন্ধুর ব্যাগ থেকে প্রথমে একটি চাবি চুরি করে তারা। তারপর আরও দু’টি চাবি হাতিয়ে, সেগুলি থেকে নকল চাবি তৈরি করে। এরপর বন্ধু ও তার পরিবারের লোকেদের অনুপস্থিতিতে বাড়িতে ঢুকে তারা ল্যাপটপ, মোবাইল ফোন ও আইপড চুরি করে।

কিন্তু এভাবে কেন বন্ধুর বাড়িতে চুরি করতে গেল ২ কিশোর? পুলিশ সূত্রে দাবি, জেরায় ধৃতরা জানিয়েছে, মোবাইল ফোনের ইন্টারনেট রিচার্জ, বাইকের তেলের খরচের জন্য তাদের টাকার দরকার পড়েছিল। এর আগেও ওই ২ কিশোর অন্য এক বন্ধুর মোবাইল ফোন চুরি করেছিল বলে জানতে পেরেছেন তদন্তকারীরা। ছেলের বন্ধুদের এই কীর্তিতে হতবাক ওই সরকারি কর্তা। সোমবার ২ নাবালককে জুভেনাইল জাস্টিস বোর্ডে পেশ করবে পুলিশ।