কলকাতা: মুখ্যমন্ত্রীর কড়া বার্তার পর সিন্ডিকেট-দৌরাত্ম্যের রাশ টানতে অব্যাহত ধরপাকড় অভিযান। সিন্ডিকেটের নামে তোলাবাজি, হুমকির অভিযোগে মঙ্গলবার গ্রেফতার করা হল আরও চারজনকে। দু’জনকে গ্রেফতার করেছে নিউটাউন থানা। একজনকে ইলেকট্রনিক কমপ্লেক্স থানা এবং
অপরজনকে বিমানবন্দর থানা।
এর মধ্যে ইলেকট্রনিক কমপ্লেক্স থানার পুলিশের হাতে ধরা পড়েছেন রমেশ মণ্ডল। যাঁর বিরুদ্ধে কেন্দ্রীয় সংস্থা নাবার্ডের একটি নির্মাণ প্রকল্পের ঠিকাদার সংস্থাকে তোলা চেয়ে হুমকি দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে।
উত্তরপ্রদেশের এই ঠিকাদার সংস্থাটি বহু রাজ্যে সরকারি প্রকল্পের কাজ করেছে। কিন্তু, কলকাতায় এসে তারা প্রথম একটি শব্দের মুখোমুখি হল। সিন্ডিকেট। অভিযোগ, প্রথমদিন প্রকল্পস্থলে আসতেই স্থানীয় এক তৃণমূল কাউন্সিলরের ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত রমেশ মণ্ডল তাঁর শাগরেদদের নিয়ে সেখানে হাজির হন।
প্রজেক্ট ম্যানেজার উমেশ কুমারের দাবি, রমেশ মণ্ডলের সঙ্গে ১৫ জন আসে। বলে র মেটেরিয়াল (নির্মাণসামগ্রী) নিতে হবে। রেট চার্ট দিয়ে যায়। সবের দাম বেশি। বলে না নিলেও টাকা দিতে হবে। কোথাও এরকম সমস্যা হয় না। স্টাফরা আতঙ্কে রয়েছে। যার জেরে শেষমেশ তাঁরা উত্তরপ্রদেশের এক মন্ত্রীর দ্বারস্থ হন। সেই মন্ত্রী কথা বলেন বিধাননগরের মেয়র সব্যসাচী দত্তর সঙ্গে।
এরপর সব্যসাচীর কথা মতো ঠিকাদার সংস্থাটি তাঁর কাছে একটি লিখিত অভিযোগপত্র জমা দেয়। সব্যসাচী সেই অভিযোগপত্রটি পাঠিয়ে দেন বিধাননগরের পুলিশ কমিশনারের কাছে। এরপরই পুলিশ তল্লাশি চালিয়ে তৃণমূল কাউন্সিলর জয়দেব নস্করের ঘনিষ্ঠ রমেশ মণ্ডলকে গ্রেফতার করে। এবিষয়ে তৃণমূল কাউন্সিলর জয়দেব নস্করের কোনও প্রতিক্রিয়া অবশ্য পাওয়া যায়নি।
রমেশ মণ্ডল ছাড়া বাকি যে তিনজনকে গ্রেফতার করেছে, তাঁদের বিরুদ্ধেও অভিযোগ যথেষ্ট গুরুতর। রাজারহাটের সৌরভ গাঙ্গুলি অ্যাভিনিউয়ে বাড়ি তৈরির জন্য ৫ লক্ষ টাকা তোলা দাবিতে মূল অভিযুক্ত স্থানীয় ক্লাবের সম্পাদক বাবু শীলকে গ্রেফতার করেছে বিমানবন্দর থানা। নিউটাউন থানার পুলিশ তোলাবাজির অভিযোগে নৌশাদ আলি সর্দার ও আরিফ আলি নামে দু’জনকে গ্রেফতার করেছে। বিচারপতি অসীমকুমার রায়ের বাড়ির সামনে থেকে ইরামতি দ্রব্য বোঝাই লরি সরাতে বলায় পুলিশকর্মীকে কটুক্তির অভিযোগ এই দু’জনের বিরুদ্ধে।
এই নিয়ে সিন্ডিকেট দৌরাত্ম্যের অভিযোগে ১০ দিনে গ্রেফতারির সংখ্যা বেড়ে দাঁড়াল ৪৫।