কলকাতা: খেলতে খেলতে আচমকাই চোখে পেরেক ঢুকে যায় দক্ষিণ ২৪ পরগনার জীবনতলার বাসিন্দা বছর আটেকের করিম মোল্লার। চোখে ঢুকে রয়েছে অর্ধেক পেরেক, বীভৎস এই দৃশ্য দেখে শিউরে ওঠে সবাই। কিন্তু এই দৃশ্য দেখেও অমানবিক জেলা থেকে শহরের ৫ টি হাসপাতাল। এমনটাই অভিযোগ পরিবারের।

করিমের পরিবার সূত্রে দাবি, দুর্ঘটনার সঙ্গে সঙ্গে ছোট্ট করিমকে নিয়ে ক্যানিং মহকুমা হাসপাতালে ছোটে পরিবার। সেখান থেকে রেফার করা হয় ন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে। কিন্তু, তাকে ভর্তি নেওয়া হয়নি বলে অভিযোগ। এরপর করিমকে নিয়ে যাওয়া হয় এসএসকেএমে। সেখানেও ভর্তি নেওয়া হয়নি বলে অভিযোগ। এরপর বাঙুর ইনস্টিটিউট অফ নিউরোলজিতে নিয়ে যাওয়া হলেও ছোট্ট করিমকে ভর্তি নেওয়া হয়নি বলে অভিযোগ উঠেছে।

চোখে পেরেক ঢোকা অবস্থাতেই তাকে নিয়ে যাওয়া হয় কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে। অভিযোগ তারাও ফিরিয়ে দেয়। এই করতে করতে রাত ৮ টা বেজে যায়। দিশেহারা পরিবার হাল ছেড়ে দিয়ে বসে থাকে এনআরএস হাসপাতালের গেটে। অবশেষে ৯ ঘণ্টা পর এবিপি আনন্দের উদ্যোগে আট বছরের করিমকে এনআরএস-এ ভর্তি করা হয়। আধ ঘণ্টার অস্ত্রোপচারে চোখ থেকে বার করা হয় পেরেক। এবিপি আনন্দের জন্যই করিমকে হাসপাতালে ভর্তি করা সম্ভব হলে বলে জানিয়েছেন তার বাবা।

কিন্তু, আধ ঘণ্টার মধ্যেই যখন অস্ত্রপচার করে চোখ থেকে পেরেক বার করা গেল, তখন পাঁচ পাঁচটি হাসপাতাল ফেরাল কেন? এ বিষয়ে স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিকর্তা জানিয়েছেন, এরকম রেফারেল বাঞ্ছনীয় নয়। স্পেশালিটি সেন্টারে চিকিৎসা হওয়া জরুরি ছিল। পুরো বিষয়টি খতিয়ে দেখছি।

গত ফেব্রুয়ারি মাসে টাউন হলের বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী সাফ জানিয়ে দিয়েছিলেন, জরুরি অবস্থায় কোনও রোগীকে ফেরানো যাবে না। মুখ্যমন্ত্রীর কড়া বার্তা সত্ত্বেও কেন এই ছবি? কেন দিশেহারাভাবে সরকারি হাসপাতালের দরজায় দরজায় ঘুরতে হল ছোট্ট করিমের পরিবারকে? ঘটনায় তদন্তের নির্দেশ দিয়েছে স্বাস্থ্য দফতর।