ময়ূখ ঠাকুর চক্রবর্তী ও পার্থপ্রতিম ঘোষ, এবিপি আনন্দ

 

কলকাতা:খাবার নিয়ে বচসা। এজরা স্ট্রিটে ফুটন্ত ঝোলের কড়াইয়ে মালিককে ধাক্কা ক্রেতার। গুরুতর আহত হয়ে হাসপাতালে মৃত্যু। গ্রেফতার অভিযুক্ত। অনিচ্ছাকৃত খুনের মামলা দায়ের।

ঘটনার সূত্রপাত গত রবিবার। দোকানে এসে রুটি খেতে চেয়েছিলেন এক ক্রেতা। জবাবে দোকানেরই এক মালিক বলেছিলেন, এই সময় রুটি হয় না! অভিযোগ, শুধুমাত্র এইটুকু কারণেই তাঁকে ফুটন্ত মাছের ঝোলের কড়ায় ফেলে দেন ওই ক্রেতা!

ক্রেতার পছন্দমতো খাবার দিতে পারেননি। এটাই ছিল তাঁর অপরাধ! অভিযোগ, এই কারণেই এমন নির্মম আচরণের মুখে পড়তে হল অতি সাধারণ, খেটে খাওয়া এক মানুষকে! নিঃস্ব হয়ে গেল একটা পরিবার!

দোকানটি মূলত দুই ভাই মিলে চালাত।

মহম্মদ জাকির নামে ওই ক্রেতাকে লালন বলেন, যে সময় সে এসেছে, তখন দোকানে রুটি হয় না। অভিযোগ, এটা বলাতেই ক্ষেপে যান ওই ক্রেতা। চিত্কার করে বলেন, রুটি দিতেই হবে! অসহায় দোকান-মালিক বলেন, ‘এটা সম্ভব নয়’। অভিযোগ, এরপরই রূদ্রমূর্তি ক্রেতা তাঁকে ফুটন্ত মাছের ঝোলের কড়ার দিকে ধাক্কা দেন। কড়ার উপরই পড়ে যান লালন। কড়া উল্টে ফুটন্ত ঝোল ছড়িয়ে পড়ে তাঁর গোটা গায়ে!

আশঙ্কাজনক অবস্থায় দোকানকর্মীকে মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলেও, শেষরক্ষা হয়নি। চারদিন মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা কষার পর, বৃহস্পতিবার মারা যান লালন।

৩০৪ ধারায় অনিচ্ছাকৃত খুনের মামলা রুজু করেছে পুলিশ। গ্রেফতার করা হয়েছে অভিযুক্ত ক্রেতাকে!

এজরা স্ট্রিটে প্রতিদিন এই এলাকায় অসংখ্য মানুষ রাস্তার ধারে খাবার খান! হঠাৎই এই ঘটনা। হতবাক প্রতিদিন এখানে খেতে আসা মানুষগুলো।

মানুষ কি মনুষ্যত্ব হারাচ্ছে? সামান্য একটা রুটির জন্যও, ফুটন্ত কড়ায় ফেলে নৃশংসভাবে হত্যা করা যায় কাউকে?