কলকাতা: আবেশ দাশগুপ্তর রহস্যমৃত্যু নিয়ে ধোঁয়াশা বাড়ল বন্ধুদের বয়ানের অসঙ্গতিতে। পুলিশ সূত্রে দাবি, শনিবার আবেশের ১৪ জন বন্ধুকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। কিন্তু, আবেশকে উদ্ধার করা নিয়ে তাদের বয়ানে বিস্তর অসঙ্গতি রয়েছে। এই কিশোর-কিশোরীদের ফের লালবাজারে তলব করা হবে বলে সূত্রের খবর।


আবেশ দাশগুপ্তর রহস্যমৃত্যুর তদন্তে মিসিং লিঙ্ক সেই ২২ সেকেন্ড। যার না আছে কোনও ছবি। না আছে অন্য প্রমাণ। আর এবার এই ২২ সেকেন্ডের ঘটনা নিয়ে নতুন করে সন্দেহ তৈরি হচ্ছে আবেশের বন্ধুদের বয়ানে পাওয়া বিস্তর অসঙ্গতিতে।

পুলিশ সূত্রে দাবি, সেদিন রক্তাক্ত আবেশকে উদ্ধার করা নিয়ে এই কিশোর-কিশোরীদের কারও বয়ান কারও সঙ্গে মিলছে না। শনিবার মোট ২১ জনকে লালবাজারে ডেকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। এর মধ্যে ১৪ জন আবেশের বন্ধু। ৭ জন বালিগঞ্জের বহুতলের নিরাপত্তারক্ষী এবং লিফটম্যান। গোটা জিজ্ঞাবাদ পর্বের সময় সেখানে উপস্থিত ছিলেন হোমিসাইড শাখার অফিসার এবং বিশেষ তদন্তকারী দলের সদস্যরা। পুলিশ সূত্রে দাবি, আবেশের একেক জন বন্ধুকে একাধিকবারও জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। কিন্তু, সেদিন রক্তাক্ত অবস্থায় আবেশকে কীভাবে উদ্ধার করা হয়, তা নিয়ে এই কিশোর-কিশোরীদের বয়ানে বিস্তর অসঙ্গতি মিলেছে।

পুলিশ সূত্রে দাবি, বহুতলের পার্কিং লটের যে সিসিটিভি ফুটেজ সামনে এসেছে, তাতে ২২ সেকেন্ডের মিসিং লিঙ্ক রয়েছে। কারণ, বন্ধুদের দাবি অনুযায়ী, আবেশের পড়ে যাওয়ার কোনও ছবি সেখানে ধরা পড়েনি। তাহলে এই সময়টুকুর মধ্যে কী হল? আবেশ কি পড়েই গিয়েছিল, না অন্য কিছু ঘটেছিল? সন্দেহ আরও ঘনীভূত হচ্ছে পরিবারের সদস্যদের মনে।

লালবাজার সূত্রে খবর, আবেশের বন্ধুদের দফায় দফায় জিজ্ঞাসাবাদ করে পুলিশ মূলত যে বিষয়গুলি জানতে চাইছে, তা হল - শনিবার ঘটনার সময় কারা সেখানে ছিল? কার কী ভূমিকা ছিল? কারা আবেশকে সাহায্য করতে এগিয়ে এসেছিল? কারা ১০০ ডায়ালে ফোন করেছিল?
কারা দোলনায় বসেছিল?

তদন্তকারীদের বক্তব্য, যাই ঘটে থাকুক, এই কিশোর-কিশোরীরাই তার প্রত্যক্ষদর্শী। তাদের বয়ানের ভিত্তিতেই এই ২২ সেকেন্ডের ঘটনা সামনে আনা সম্ভব। আবেশের সঙ্গে কী হয়েছিল, তা জানা সম্ভব। কিন্তু, রহস্যের কিনারা তো দূর অস্ত, এই কিশোর-কিশোরীর বয়ানে অসঙ্গতি ধোঁয়াশা আরও বাড়াচ্ছে।

সূত্রের খবর, এই কিশোর-কিশোরীদের ফের লালবাজারে ডাকা হতে পারে। শনিবার যাঁর বাড়ির পার্টিতে আবেশরা গিয়েছিল, সেই লেখক অমিত চৌধুরীকেও সোম বা মঙ্গলবার লালবাজারে ডাকা হতে পারে বলে সূত্রের খবর। শনিবারও হোমিসাইড শাখার অফিসার এবং বিশেষ তদন্তকারী দলের সদস্যরা বালিগঞ্জের বহুতলে যান।