ঘড়িতে তখন বুধবার সকাল ৭টা। আচমকাই তিনতলা এই বাড়ির ছাদে আগুন জ্বলতে দেখেন প্রতিবেশীরা। খবর যায় পুলিশে। তারপর যে ঘটনা সামনে আসে, তাতে তো চক্ষু চড়কগাছ!
এই বাড়ির একতলায় থাকেন শোভনা চক্রবর্তী, তাঁর মেয়ে শ্রীপর্ণা এবং শ্রীপর্ণার বর্তমান স্বামী। তাঁরাই এই বাড়ির মালিক। স্থানীয় সূত্রে খবর,
বছর চারেক আগে বাড়িতে থাকতে আসেন শ্রীপর্ণার প্রাক্তন স্বামীর আত্মীয় অসিত দে, তাঁর স্ত্রী চিত্রা দে এবং ছেলে অমিত।
চার বছর ধরে এই বাড়িতেই রয়েছেন তাঁরা। শ্রীপর্ণার দাবি, বারবার বলা সত্বেও, বাড়ি ছেড়ে যেতে চাইছিলেন না অসিত-চিত্রারা। এনিয়ে বেশ কিছুদিন ধরে তাঁদের মধ্যে বিবাদ চলছিল। শ্রীপর্ণার দাবি, এদিন সকালে ঘুমন্ত অবস্থায়, তাঁর মায়ের উপর অ্যাসিড হামলা করেন চিত্রা দে।
শ্রীপর্ণার আরও দাবি, হামলার পর, ছাদের ঘরে গিয়ে ঘুমের ওষুধ খান চিত্রা। তারপর ঘরে আগুন লাগিয়ে দেন। প্রাথমিকভাবে মনে করা হয়েছিল, তিন তলা থেকে পড়ে গিয়ে জখম হন চিত্রার স্বামী। পরে হাসপাতালে যাঁর মৃত্যু হয়। কিন্তু, জয়েন্ট সিপি ক্রাইম জানিয়েছেন,
তিনতলা থেকেই উদ্ধার করা হয় অসিতকে। সংজ্ঞাহীন অবস্থা পড়ে ছিলেন তিনি।
এদিকে, ঘটনায় গৃহকর্ত্রীর মেয়ে শ্রীপর্ণাকেও সন্দেহের ঊর্ধ্বে রাখছে না পুলিশ। কারণ, স্থানীয় বাসিন্দাদের একাংশের দাবি, চিত্রা ও অসিত দে-র ছেলে অমিতের সঙ্গে সম্পর্ক গড়ে উঠেছিল শ্রীপর্ণার। যা নিয়ে মা-মেয়ের মধ্যে ঝামেলাও হত বলে বহু প্রতিবেশীরই দাবি।
শুধু তাই নয়! গোয়েন্দাদের প্রশ্ন, একতলায় যেখানে শ্রীপর্ণার মায়ের উপর অ্যাসিড হামলা হয়, সেখানে তো আরও দু’জন ছিলেন। শ্রীপর্ণার বর্তমান স্বামী এবং চিত্রা দে-র ছেলে। তাঁদের ঘুম কেন ভাঙল না?
গোটা ঘটনাক্রম কীভাবে ঘটল, তা নিয়েও ধোঁয়াশা রয়েছে। কারণ এখনও পর্যন্ত শ্রীপর্ণা এবং বাড়ির এক পরিচারিকা ছাড়া আর কারও বয়ান মেলেনি। তাছাড়া, চিত্রার স্বামীর মৃত্যু কীভাবে হল, তা নিয়েও রহস্য দানা বেধেছে! এদিকে, সূত্রের খবর, এদিন সকাল ৮টা নাগাদ একটি ফোন যায় ১০০ ডায়ালে। ফোনে পুলিশকে দ্রুত পাটুলির এই বাড়িতে পৌঁছনোর কথা বলা হয়। কে এই ফোন করেছিলেন, তাঁর সঙ্গে ঘটনার কোনও যোগ রয়েছে কিনা, তদন্তে পুলিশ!