কলকাতা: অভিনেতার গাড়ি দুর্ঘটনায় মডেলের মৃত্যুর ১১ দিন পর অবশেষে সামনে এল চাঞ্চল্যকর তথ্য! বিক্রম চট্টোপাধ্যায় বলেছিলেন, তিনি বেপরোয়া গতিতে গাড়ি চালাননি। যদিও পুলিশ সূত্রে দাবি, দুর্ঘটনার আগের মুহূর্তে তাঁর গাড়ির গতিবেগ ছিল ঘণ্টায় ১০৫ কিলোমিটার। এ নিয়ে তথ্য-প্রমাণও পেয়েছেন তদন্তকারীরা।
বৃহস্পতিবার বিক্রমের গাড়িটি তৃতীয়বার পরীক্ষার জন্য, টালিগঞ্জ থানায় আসেন ফরেন্সিক বিশেষজ্ঞরা। পুলিশের বার্তা পেয়ে, চেন্নাই থেকে আসেন, গাড়ি প্রস্তুতকারী সংস্থা টয়োটার তিন প্রতিনিধিও। গাড়ির বিভিন্ন যন্ত্রাংশ খুঁটিয়ে পরীক্ষা করেন তাঁরা। ছবি তোলার পাশাপাশি, বেশ কিছু পার্টস তাঁরা নিয়ে যান। পুলিশ সূত্রে দাবি, গাড়ির ‘ক্র্যাশ ডেটা রিট্রিভার’ বা সিডিআর থেকে চাঞ্চল্যকর তথ্য পাওয়া গিয়েছে!
প্রাথমিক ভাবে জানা গিয়েছে, দুর্ঘটনার ২.৬ সেকেন্ড আগে পর্যন্ত সব ডেটা স্টোর করেছে সিডিআর। সেই তথ্যই বলছে, দুর্ঘটনার ঠিক ছ’সেকেন্ড আগে বিক্রমের গাড়ি চলছিল ঘণ্টায় প্রায় ১০৫ কিলোমিটার বেগে! যা পুলিশের বেঁধে দেওয়া গতিবেগের থেকে দ্বিগুণেরও বেশি! যদিও বিক্রম কিন্তু দাবি করে আসছেন, তিনি মোটেও অত্যন্ত জোরে গাড়ি চালাচ্ছিলেন না!
সূত্রের খবর, তদন্তকারীরা বিক্রমের এই দাবিকে মোটেই গুরুত্ব দিচ্ছেন না! তাঁরা একপ্রকার নিশ্চিত, যে বেপরোয়া গতি তোলার কারণেই, সেই রাতে নিয়ন্ত্রণ হারিয়েছিল বিক্রমের গাড়ি! পুলিশ সূত্রে দাবি, ‘সিডিআর’ ডিকোড করে প্রাথমিকভাবে জানা গিয়েছে, দুর্ঘটনার ঠিক ৬ সেকেন্ড আগে হাল্কা করে ব্রেক কষেছিলেন বিক্রম! কিন্তু সঙ্গে সঙ্গে আবার পা তুলেও নিয়েছিলেন ব্রেক থেকে!
তদন্তকারীদের অনুমান, হালকা করে খুব কম সময় ব্রেকে পা রাখায়, তা কোনও কাজে আসেনি। তার জেরেই প্রথমে বাঁ দিকের ডিভাইডার পরে এই স্তম্ভে ধাক্কা মেরেছিল গাড়িটি! আর সেই আঘাতেই মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েছিলেন বিক্রমের পাশের সিটে বসা সোনিকা!
কিন্তু কেন বেপরোয়া গতিতে ছুটছিল গাড়ি? বিক্রম বলছেন তিনি মত্ত ছিলেন না, তাহলে সত্যিটা কী? উত্তর খুঁজছে পুলিশ। গাড়ির এয়ার ব্যাগ কেন খুলল না, তা নিয়েও ধন্দ তৈরি হয়েছে। পুলিশ সূত্রে দাবি, বিক্রমের গাড়ির মুখোমুখি ধাক্কা না লাগায়, সেন্সর কাজ করেনি। সে কারণেই এয়ারব্যাগ খোলেনি বলে প্রাথমিক তদন্তে অনুমান। তবে গাড়ি সংক্রান্ত বিষয়ে, বিশেষজ্ঞদের পূর্ণাঙ্গ রিপোর্টের অপেক্ষায় রয়েছে টালিগঞ্জ থানা।