কলকাতা: এক ব্যক্তি, একাধিক নাম! কখনও মনোতোষ, কখনও শ্যামল, কখনও রতন, আবার কখনও জিয়ারুল। ব্যক্তি এক, কিন্তু পরিচয় একাধিক। কখনও সে মাছ ব্যবসায়ী! কখনও সেনাকর্মী! কিন্তু আড়ালে বেআইনি অস্ত্রের কারবারি!
এসটিএফ সূত্রে দাবি, বেআইনি আগ্নেয়াস্ত্রেরই কারবার করতেন মনোতোষ দে। বাংলাদেশের দুই জঙ্গির সঙ্গে যাকে গ্রেফতার করেছে কলকাতা পুলিশের এসটিএফ। আর এই মনোতোষের পরিচয় ঘিরে যেমন ধোঁয়াশা, তেমনই তাঁর কটা বিয়ে তা নিয়েও বিস্তর ধোঁয়াশা তৈরি হয়েছে! তদন্তে দুই মহিলার নাম উঠে এসেছে।
এঁদের মধ্যে একজন আফরোজা বিবি। যিনি নিজেকে মনোতোষের স্ত্রী বলে দাবি করেছেন। অপরজন গৌরী দে। যিনি আবার নিজেকে মনোতোষের ভাইজি বলে দাবি করেছেন!
কিন্তু, এসটিএফ সূত্রে দাবি, বসিরহাটের মৈত্রবাগানে স্বামী-স্ত্রী পরিচয় দিয়ে ভাড়াবাড়িতে থাকত মনোতোষ ও গৌরী। গৌরীর মা সবিতা সরকারও সেখানে থাকেন। যদিও, ধৃত গৌরী দে নিজেকে মনোতোষ দে-র ‘ভাইঝি’ বলে দাবি করেন।
বুধবার লালবাজারে ডেকে গৌরীকে জিজ্ঞাসাবাদ করেন গোয়েন্দারা। এসটিএফ সূত্রে দাবি, জিজ্ঞাসাবাদে গৌরী জানিয়েছেন, মনোতোষকে তিনি আগে থেকে চিনতেন। মনোতোষের মাধ্যমেই শ্যামল দে নামে এক ব্যক্তির সঙ্গে তাঁর বিয়ে হয়।
এখন শ্যামলের সঙ্গে গৌরীর বিবাহ বিচ্ছেদের মামলা চলছে। তাই বাড়িভাড়া পেতে, মনোতোষকে স্বামী পরিচয় দিয়েছিলেন গৌরী। কিন্তু এসব কিছুই জানতেন না বলে দাবি মৈত্রবাগানের বাড়িওয়ালার।
মনোতোষের সঙ্গে নাম জড়ানো আরেক মহিলা হলেন বসিরহাটের দক্ষিণপাড়ার বাসিন্দা আফরোজা বিবি। তাঁর দাবি, ১১ বছর আগে জিয়ারুল গাজি পরিচয় দিয়ে তাঁকে বিয়ে করেন মনোতোষ। তিনি বলেন, ৫-৬দিন আগে কাজের নাম বেরিয়ে যায় জিয়াউল। ফোন করে জানিয়েছিল, ফিরতে দেরি হবে।
বসিরহাটেরই খোলাপোতায় আরেকটি বাড়ির খোঁজ মিলেছে। সেখানে সেনাকর্মী পরিচয় দিয়ে ২০১৩ থেকে বছর দুয়েক ভাড়া ছিল মনোতোষ। এমনটাই দাবি, বাড়িওয়ালা তথা প্রাক্তন সিআরপিএফ অফিসার রামপ্রসাদ অধিকারীর। বলেন, আধার কার্ডে রতন দে সরকারManatosh নাম ছিল, ইছাপুরের বাসিন্দা লেখা ছিল। তিনি আরও জানান, ওই বাড়িতে গৌরী ও সবিতা আসত।
এহেন মনোতোষকে নিয়েই এখন রহস্যের চক্রব্যূহ!