কলকাতা: বৃহস্পতিবার টোল প্লাজায় সেনা মোতায়েনের পরই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কেন্দ্র ও সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে একের পর এক অভিযোগ করেন। বৃহস্পতিবার রাতে দফায় দফায় ট্যুইটের পর শুক্রবার সকালে আসরে নামে সেনার শীর্ষ কর্তৃত্ব।
সেনা বিবৃতিতে জানানো হয়েছে, পশ্চিমবঙ্গ-সহ পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্যগুলিতে সেনার রুটিন কর্মসূচি চলছে। ২৮ নভেম্বর থেকে শুরু হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু পুলিশের অনুরোধে তারিখ পিছিয়ে ১ ডিসেম্বর করা হয়। বাহিনীর তরফে বলা হয়েছে, সমস্ত টোল প্লাজায় ৫-১০ জন সেনাকর্মী রয়েছেন। তাঁরা নিরস্ত্র। ওই সেনাকর্মীরা গাড়ির সংখ্যা সংক্রান্ত তথ্য সংগ্রহ করছেন।
[embed]https://twitter.com/easterncomd/status/804376400278921216[/embed]
নবান্নর টোল প্লাজা থেকে তথ্য সংগ্রহের পর সেনা প্রত্যাহার করা হয়েছে। এরপর যে কোনও জায়গায় তথ্য সংগ্রহের কাজে এই সেনাকর্মীদের মোতায়েন করা হতে পারে। সমস্ত পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্যগুলিতে এই কর্মসূচি চলবে। সেনার আরও দাবি, পশ্চিমবঙ্গে মোট ১৯টি পয়েন্টে এই প্রক্রিয়া একযোগে চলছে। এমনকী, পূর্ব ও উত্তর-পূর্ব ভারতের একাধিক রাজ্যেও এই প্রক্রিয়া চলছে।
এরা আগে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় দাবি করেন, রাজ্যকে অন্ধকারে রেখে সেনা নামানো হয়েছে। এটা সেনা অভ্যুত্থান। এই প্রেক্ষিতে মুখ্যমন্ত্রীর প্রথম অভিযোগ ছিল, টোল প্লাজায় সেনা মোতায়েন করা হয়েছে রাজ্যকে না জানিয়ে।
[embed]https://twitter.com/easterncomd/status/804399349987872768[/embed]
পাল্টা সেনার দাবি, রাজ্য সরকারকে পুরো প্রক্রিয়ার কথা জানানো হয়েছে। এই দাবির স্বপক্ষে শুক্রবার কয়েকটি চিঠিও প্রকাশ করেছে সেনা। তাদের দাবি, ২৪ নভেম্বর বিদ্যাসাগর সেতু টোলপ্লাজায় গাড়ি সমীক্ষা কর্মসূচির ব্যাপারে পরিবহণ দফতরের প্রিন্সিপাল সেক্রেটারিকে জানানো হয়। জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়। দ্বিতীয় হুগলি সেতুর টোল প্লাজায় কর্মসূচি চালানোর জন্য হুগলি রিভার ব্রিজ কমিশন (এইচআরবিসি)-কে চিঠি দেওয়া হয়।
সেনার আরও দাবি, ২৩ নভেম্বর হেস্টিংস থানাকে চিঠি দেয় তারা। ২৪ নভেম্বর কলকাতা পুলিশকে চিঠি দেয় তারা। ২৪ নভেম্বর হাওড়ার জেলাশাসক এবং হাওড়ার পুলিশ কমিশনারকেও চিঠি দিয়ে জানানো হয় বলে দাবি সেনার। একইভাবে সেনা দাবি করে, অন্যান্য যে জেলার টোল প্লাজায় সেনা মোতায়েন করা হয়, সেখানকার জেলাশাসকদেরও লিখিতভাবে বিষয়টি জানানো হয়।
এরপরই চিঠির পাল্টা কলকাতা পুলিশের। তারা দাবি করে, ২৫ নভেম্বর তারা সেনাকে চিঠি দিয়ে জানিয়েছিল, বিদ্যাসাগর সেতু টোল প্লাজা হাই সিকিওরিটি জোন। এখানে রাজ্য সচিবালয় রয়েছে। এখান দিয়ে প্রচুর গাড়ি যাতায়াত করে। তাই এই কর্মসূচি অন্য কোথাও করুন। কলকাতা পুলিশের তরফে একটি ট্যুইটেও দাবি করা হয়, ২৭ তারিখ যৌথ পরিদর্শনের সময়ও ফের সেনাকে একথা জানায় তারা।
[embed]https://twitter.com/KolkataPolice/status/804612512973029376[/embed]
[embed]https://twitter.com/easterncomd/status/804593532644098049[/embed]
কয়েক মুহূর্তের মধ্যে সেনা পাল্টা ট্যুইট করে দাবি করে, ২৭ তারিখেই বিষয়টি মিটে গিয়েছিল। এমনকী, রাজ্য সরকারের আনা সেনা অভ্যুত্থানের অভিযোগও উড়িয়ে দেয় সেনা। বাহিনীর ভারপ্রাপ্ত জিওসি বেঙ্গল এরিয়া (হেড কোয়ার্টার) মেজর জেনারেল সুনীল যাদব বলেন, (অভ্যুত্থানের) অভিযোগের কোনও ভিত্তি নেই। তিনি জানিয়ে দেন, প্রতিবছরই এই সমীক্ষা করা হয়। তিনি জানান, গত বছর এই প্রক্রিয়া একই জায়গায় ১৯-২১ নভেম্বর করা হয়েছিল।
পাশাপাশি, মুখ্যমন্ত্রী আনা জওয়ানেদের বিরুদ্ধে টাকা আদায়ের অভিযোগও খারিজ করে দেওয়া হয় সেনার তরফ থেকে।