কলকাতা: রাজ্যের বিভিন্ন জায়গায় টোলপ্লাজায় সেনা মোতায়েন নিয়ে নরেন্দ্র মোদী সরকারের সঙ্গে সরাসরি সংঘাতের পথে হেঁটেছেন মুখ্যমন্ত্রী। অবস্থানে অনড় থেকে প্রায় সাড়ে তিরিশ ঘণ্টা তিনি নবান্নে কাটিয়েছেন। অভিযোগ তুলেছেন, নোট বাতিল ইস্যুতে তিনি সরব হয়েছেন বলেই প্রতিহিংসামূলক আচরণ করছে দিল্লি। এই সংঘাতেই নয়া মাত্রা যোগ করল কেন্দ্রের একটি চিঠি!
নবান্নে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছেন, নগরোন্নয়ন দফতরের আন্ডার সেক্রেটারিকে চিঠি পাঠিয়েছেন কেন্দ্রীয় রাজস্ব সচিব। তিনি লিখেছেন, ২০১৫ সালের নভেম্বর মাস থেকে চলতি বছরের নভেম্বর মাস পর্যন্ত রাজস্ব বাবদ কলকাতা পুরসভার তহবিলে কত অর্থ এসেছে, তা জানতে চেয়েছে প্রধানমন্ত্রীর দফতর। তাই এ বিষয়ে সবিস্তার তথ্য দিতে নগরোন্নয়ন দফতরের আন্ডার সেক্রেটারিকে বলেছেন কেন্দ্রীয় রাজস্ব সচিব।
সেনা মোতায়েন ও নোট বাতিল ইস্যুতে ডাকা শুক্রবার সন্ধের সাংবাদিক বৈঠকে এ নিয়ে ক্ষোভ উগড়ে দেন মুখ্যমন্ত্রী। ফের যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামোয় হস্তক্ষেপের অভিযোগ তুলেছেন তিনি। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, মোদী একটা ডাকু গভর্নমেন্ট। গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় এভাবে চিঠি দেওয়া যায় না। এভাবে আন্ডার সেক্রেটারিকে সরাসরি চিঠি লিখে তথ্য জানতে পারে না। এটা গণতন্ত্রের প্রতি অবমাননা।
৮ নভেম্বর নোট বাতিলের সিদ্ধান্ত ঘোষণার পর, মানুষের ভোগান্তি দূর করতে, ‘পুরনো নোটে কর জমা’র সময়সীমা বাড়িয়েছিল তৃণমূল পরিচালিত কলকাতা পুরসভা। ১০ থেকে ১৫ নভেম্বরের মধ্যে ‘কর বাবদ’ পুর-তহবিলে জমা পড়েছে ২২ কোটি টাকা। ২৪ নভেম্বর সেই অঙ্ক বেড়ে হয় ৭৩ কোটি ৮৪ লক্ষ টাকা। এর মধ্যে ২৪ নভেম্বরই জমা পড়ে ৯ কোটি ৫৬ লক্ষ টাকা।
বহু মানুষ তাঁদের বকেয়া কর মিটিয়েছেন বাতিল ৫০০ ও হাজার টাকার নোটে। এবার সেই আদায় হওয়া রাজস্বেরই পরিমাণ জানতে চাইল মোদী সরকার! এদিকে, মোদী সরকারের সঙ্গে একের পর বিতর্কের প্রেক্ষাপটে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পাশে দাঁড়িয়েছেন অরবিন্দ কেজরীবাল। তিনি ট্যুইট করে বলেছেন, পশ্চিমবঙ্গকে টার্গেট করা হচ্ছে, কারণ মমতাদি নোট বাতিলের বিরুদ্ধে কথা বলার স্পর্ধা দেখিয়েছেন। মমতাদি আপনি লড়াই জারি রাখুন। গোটা দেশ আপনার সঙ্গে রয়েছে।
সম্প্রতি একশো দিনের কাজের মজুরি সরাসরি শ্রমিকদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে পাঠানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে কেন্দ্র। যা নিয়েও কেন্দ্রকে তুলোধনা করেছে তৃণমূল সরকার। সেনা মোতায়েনের ক্ষেত্রেও রাজ্যকে এড়িয়ে যাওয়ার অভিযোগ তুলেছে তারা। এবার কলকাতা পুরসভার আয় জানতে চেয়ে চিঠি! চলতি সংঘাতে যা ‘অনুঘটকের’ কাজ করবে বলেই মত পর্যবেক্ষকদের একাংশের।