কলকাতা: কেন্দ্র হস্তক্ষেপ করতে পারে। তবে করবে, সেটা বলছি না। চাইলে করতে পারে।


বিজেপি নেতা কৈলাস বিজয়বর্গীয়র এই মন্তব্যই রাজনৈতিক মহলে জল্পনা উস্কে দিয়েছে। নানা মহলে প্রশ্ন, আগামী দিনে কি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের রাজ্যে হস্তক্ষেপ করতে পারে মোদি সরকার?

পশ্চিমবঙ্গের দায়িত্বপ্রাপ্ত পর্যবেক্ষক বিজয়বর্গীয় এদিন বলেছেন, আইনশৃঙ্খলা রাজ্যের বিষয়। তবে পশ্চিমবঙ্গের সীমান্তবর্তী এলাকায় লাগামছাড়া অনুপ্রবেশ হচ্ছে, দেশবিরোধী শক্তির বাড়বাড়ন্ত, জালনোটের দৌরাত্ম বেড়েছে। তাতে কেন্দ্র হস্তক্ষেপ করতে পারে। তবে করবে, সেটা বলছি না, চাইলে করতে পারে।

এই আবহে পাল্টা হুঙ্কার ছেড়েছে তৃণমূল কংগ্রেস। দলের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায় বলেছেন, ক্ষমতা থাকলে করে দেখাক। শূন্য কলসির আওয়াজ বেশি। ক্ষমতা থাকলে করে দেখুন। ও ভাবছে, আমরা ভয়ে ভিতরে ঢুকে যাব। বামেদের ক্ষমতাচ্যুত করার ক্ষমতা থাকলে, ওদেরও মানুষ জবাব দেবে।

দু’দিন আগেই বিজেপির প্রাক্তন রাজ্য সভাপতি রাহুল সিংহও তাৎপর্যপূর্ণ মন্তব্য করেছিলেন। তিনি বলেছিলেন, ২০২১- এর আগেই এ রাজ্যে বিধানসভা ভোট হবে।

বিজয়বর্গীয়, রাহুলদের এই মন্তব্যকে এক সারিতে বসালে রাজনৈতিক মহলে এই প্রশ্ন উঠতে বাধ্য, আগামী দিনে কি এ রাজ্যে রাষ্ট্রপতি শাসন জারি হতে পারে? যদিও, পর্যবেক্ষকরা বলছেন, উত্তরাখণ্ডে রাষ্ট্রপতি শাসন জারি করার পর আদালতে ধাক্কা খেয়েছিল, মোদি সরকার! তাই তৃণমূল সরকার ডবল সেঞ্চুরি করে দ্বিতীয়বার ক্ষমতায় আসার পর এ রাজ্যে সেই একই পথে হাঁটা কঠিন!

পাশাপাশি বিজেপি বিরোধীরা এই প্রশ্নও তুলছে, সীমান্তে অবাধ অনুপ্রবেশ কিংবা জাল নোটের বাড়বাড়ন্ত হলে, তা দেখার দায়িত্ব তো বিএসএফের। আর বিএসএফ তো কেন্দ্রের অধীনস্থ। তাহলে এর জন্য রাজ্য সরকারের ঘাড়ে কী করে দায় চাপাতে পারেন বিজেপির এই কেন্দ্রীয় নেতা? তবে, এই প্রশ্নের উত্তর না মিললেও, তৃণমূলকে কিন্তু অন্যান্য ইস্যুতে আক্রমণ করতে ছাড়েননি বিজয়বর্গীয়। তাঁর কটাক্ষ, পশ্চিমবঙ্গের পরিস্থিতি ভয়াবহ। অরাজকতা চলছে। দেশের মধ্যে সবচেয়ে বেশি অরাজক পরিস্থিতি। তৃণমূলই তৃণমূলকে মারছে। আমলাতন্ত্রের রাজনীতি এবং রাজনীতির দুর্বৃত্তায়ন চলছে।

কৈলাসকে পাল্টা কটাক্ষ করেন পার্থ। তিনি বলেছেন, বর্গীয়টা কে? বর্গী এল দেশে একথা শুনেছি। এত অসহিষ্ণুতা কীসের? বিজেপিই তো রাজ্যে অরাজকতা তৈরি করছে। মমতা বাংলাকে এগিয়ে নিয়ে গিয়েছেন, বিজেপি পিছিয়ে দিতে চাইছে। সব মিলিয়ে রাজনৈতিক তরজা তুঙ্গে।