কলকাতা: মুখ্যমন্ত্রী বনাম রাজ্যপাল সংঘাতের মধ্যেই এবার শাসক দলের রোষের মুখে বিজেপি নেতারা। বৃহস্পতিবার, দিলীপ ঘোষ ও কৈলাস বিজয়বর্গীয়র গাড়ি ঘিরে বিক্ষোভ দেখান তৃণমূল কর্মীরা। যা ঘিরে কার্যত রণক্ষেত্র আরজি কর হাসপাতাল চত্বর।


এদিন দলের রাজ্য সভাপতি ও বিজেপির এরাজ্যের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদকের গাড়ি আটকে রাখার অভিযোগ ওঠে তৃণমূল কর্মীদের বিরুদ্ধে। এমনকী, বিজেপি কর্মীদের সঙ্গে তৃণমূল কর্মীদের মারপিট হয় বলেও অভিযোগ। দুপক্ষের এই ধস্তাধস্তিতে কার্যত রণক্ষেত্রের চেহারা নেয় আর জি কর হাসপাতাল।


প্রসঙ্গত, বসিরহাটে গোষ্ঠীদ্বন্দ্বে এক দলীয় কর্মীর মৃত্যুর দাবি বিজেপির। গুরুতর আহত অবস্থায় ওই বিজেপি কর্মীকে আর জি কর হাসপাতালে আনা হয় বলে দলীয় সূত্রে দাবি। এরপরেই তাঁর মৃত্যু হয় বলে দাবি বিজেপি নেতৃত্বের। এ বিষয়ে পুলিশের কোনও প্রতিক্রিয়া মেলেনি। এদিন মৃতের পরিবারের সঙ্গে দেখা করতে আর জি করে যান লকেট চট্টোপাধ্যায়-সহ বিজেপি নেতারা।


সেখানে হাসপাতালের কাজে বাধা দেওয়ার অভিযোগে কয়েকজনের সঙ্গে তাঁদের বচসা বাধে। তৃণমূলকর্মীরাই তাঁদের বাধা দিয়েছেন বলে অভিযোগ লকেটের। যদিও, এর সঙ্গে তৃণমূলের কোনও যোগ নেই বলে দাবি স্থানীয় তৃণমূল নেতৃত্বের। রাজ্যের মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় গোটা ঘটনার দায় বিজেপির ওপর চাপান। তাঁর প্রশ্ন, অশান্তির মধ্যে বিজেপি কর্মী কী করতে গিয়েছিলেন?


বসিরহাটের অশান্তির প্রেক্ষিতে তৃণমূল যখন বিজেপির দিকে অভিযোগের আঙুল তুলছে, তখন শাসক দলের উদ্দেশে পাল্টা এমনই হুঁশিয়ারি দিলেন কৈলাস বিজয়বর্গীয়।  বলেন, রাজ্যপালকে নিয়ে ওরাই অসাংবিধানিক বক্তব্য রেখেছেন। এরপরই তাঁর হুঁশিয়ারি, মন্ত্রীদের সতর্ক করছি, আপনাদের নিয়ে সব খবর আছে।


এপ্রসঙ্গে, নাম না করে সারদা-রোজভ্যালি প্রসঙ্গও টেনে আনেন তিনি। বলেন, ক’দিন পরে যারা চিটফান্ডকাণ্ডে জেলে যাবে, তারাই রাজ্যপালকে নিয়ে অসাংবিধানিক কথা বলছে।


যদিও, একইসঙ্গে, রাহুল সিংহের করা মন্তব্যের জেরে তৈরি হওয়া বিতর্ক থেকে নিজেকে সরিয়ে নেন কৈলাশ। ড্যামেজ কন্ট্রোলে নেমে তিনি বলেন, রাহুল সিংহের বক্তব্যের সঙ্গে সহমত নই। রাজ্যপাল নিরপেক্ষ, অরাজনৈতিক পদ। কেশরীনাথ সেই পদের মর্যাদা রেখেছেন।


প্রসঙ্গত, এদিনই রাজ্যপাল কেশরীনাথ ত্রিপাঠী মোদী-বাহিনীর সৈনিক বলে উল্লেখ করেন প্রাক্তন বিজেপি রাজ্য সভাপতি রাহুল সিংহ। বলেন, তৃণমূল ভাবছে, রাজ্যপালকে গালাগাল দিয়ে চুপ করাবে। তৃণমূল ভুল করছে, উনি মোদি-বাহিনীর সৈনিক।


তাঁর এই মন্তব্যকে হাতিয়ার করে বিজেপিকে আক্রমণ শানায় শাসক দল। পার্থ চট্টোপাধ্যায় বলেন, রাজ্যপাল যে নিরপেক্ষ নন, দলেরই লোক, স্বীকৃতি দিল বিজেপি।