কলকাতা: শিশুপাচারকাণ্ডের তদন্তে কয়েকদিন আগেই বিজেপি নেত্রী রূপা গঙ্গোপাধ্যায়কে তলব করেছিল সিআইডি। কিন্তু হাজিরা না দিয়ে, ট্যুইট করে জিজ্ঞাসাবাদে সম্মতি জানান তিনি। সিআইডি ঠিক করে, শনিবার তারা রূপার বাড়িতে যাবে। এরপরই, এদিন সকাল এগারোটা কুড়ি নাগাদ রূপার গল্ফগ্রিনের বাড়িতে পৌঁছে যান তদন্তকারীরা। নেতৃত্বে ছিলেন এক মহিলা ইন্সপেক্টর। শুরু হয় জিজ্ঞাসাবাদ।


সিআইডি সূত্রে দাবি, রূপার কাছে জানতে চাওয়া হয়, তিনি কীভাবে জুহি চৌধুরীকে চিনলেন? বিজেপি নেত্রী দাবি করেন, দলের মহিলা মোর্চার সভানেত্রী হিসেবে উত্তরবঙ্গ গিয়েছিলেন সেখানেই পরিচয় হয়েছিল। তদন্তকারীরা জানতে চান, জুহি আপনাকে কী বলেছিলেন? রূপা বলেন, জুহি তাঁকে জানান, হোম থেকে কয়েকটি শিশু চুরি হয়েছে। পুলিশ ব্যবস্থা নিচ্ছে না। আমি যেন হস্তক্ষেপ করি। সিআইডির প্রশ্ন ছিল, বঙ্গভবনে কেন জুহির সঙ্গে দেখা করেছিলেন রূপা? কেনই বা জাতীয় মহিলা কমিশনের চেয়ারপার্সনের কাছে জুহির হয়ে সুপারিশ করেছিলেন?

সিআইডি সূত্রে দাবি, শেষ দুটি প্রশ্নের উত্তর এড়িয়ে যান রূপা! জিজ্ঞাসাবাদ পর্বে দু’একবার মেজাজও হারান তিনি! জিজ্ঞাসাবাদ চলাকালীন এদিন রূপার বাড়িতে যান বিজেপির কয়েক জন নেতা। তাঁরা অভিযোগ করেন, রূপাকে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে ফাঁসানোর চেষ্টা হচ্ছে। সিআইডি অফিসাররা বেরিয়ে যাওয়ার পর একই সুর শোনা যায় রূপার গলাতেও। পাশাপাশি জুহিকে কার্যত শংসাপত্র দেন সাংসদ!

যদিও সিআইডি সূত্রে দাবি, রূপাকে জেরা করে তদন্তকারীরা সন্তুষ্ট নন। জুহির বয়ান এবং রূপার বয়ান পরস্পরবিরোধী। বেশ কয়েকটি বিষয়ে রূপা সদুত্তর দিতে পারেননি। কয়েকটি ক্ষেত্রে আবার মিথ্যে বলেছেন! তাই রূপাকে ফের তলব করা হবে বলে সিআইডি সূত্রে খবর।

শিশুপাচারকাণ্ডে সিআইডি যে চার্জশিট পেশ করেছিল, তাতে রূপার পাশাপাশি, কৈলাস বিজয়বর্গীয়রও নাম ছিল। তবে অভিযুক্ত হিসেবে নয়। জলপাইগুড়িতে যে হোমের আড়ালে শিশুপাচার চক্র চালানোর অভিযোগ ওঠে, তার কর্ণধার চন্দনা চক্রবর্তী জেরার মুখে রূপা ও কৈলাসের নাম বলেন বলে চার্জশিটে উল্লেখ করা হয়। কৈলাসকেও সিআইডি তলব করেছে। কিন্তু তিনি এই নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে আদালতের দ্বারস্থ হয়েছেন। তাঁর হাজিরার ওপর স্থগিতাদেশ জারি করেছে মধ্যপ্রদেশ হাইকোর্ট।