কলকাতা: এখনও তিনি ছুটিতে! নতুন রাজনৈতিক দীক্ষা কোথা থেকে নেবেন, তা নিয়ে জল্পনা চলছেই! কিন্তু এরইমধ্যে মুকুল রায়ের ঘনিষ্ঠদের উপর চাপ বাড়তে শুরু করেছে।
বেআইনি আর্থিক প্রতিষ্ঠানকাণ্ডে আগেই ধরা পড়েছেন মুকুল রায় ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত পৃথ্বীশ দাশগুপ্ত। ওই মামলায় এবার দেবাশিস দাসকে গ্রেফতার করল সিআইডি। একযোগে গোয়েন্দারা তল্লাশি চালালেন, মুকুল-ঘনিষ্ঠ সুজিত শ্যামের বাঁকুড়ার বাড়িতে।
ঘটনার সূত্রপাত গত ১৩ অক্টোবর। সুব্রত সাহা নামে এক ব্যক্তি হাবড়া থানায় ৮ জনের নামে প্রতারণার অভিযোগ দায়ের করেন। অভিযোগকারীর দাবি, ‘ওয়ার্ল্ড ওয়েলথ প্রোজেক্ট ইন্ডিয়া’ নামে একটি সংস্থায় টাকা রেখে প্রতারিত হয়েছেন তিনি। ওই সংস্থার ডিরেক্টর পৃথ্বীশ দাশগুপ্ত।
মামলার তদন্তভার নেয় সিআইডি। ১৯ অক্টোবর গ্রেফতার করা হয়, মুকুল-ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত পৃথ্বীশ দাশগুপ্তকে। মঙ্গলবার রাতে বাগুআইটির জ্যাংরায় মুকুল ঘনিষ্ঠ পৃথ্বীশের বাড়িতে তল্লাশি চালায় সিআইডি। উদ্ধার হয় একাধিক হার্ড ডিস্ক ও পেন ড্রাইভ।
গোয়েন্দা সূত্রে দাবি, একসময় ন্যাশনালিস্ট তৃণমূল কংগ্রেস পার্টির কোষাধ্যক্ষ ছিলেন পৃথ্বীশ। সোশাল নেটওয়ার্কিং সাইটে মুকুল রায়ের সঙ্গে একাধিক ছবি পোস্ট করতেন তিনি। ধৃত পৃথ্বীশের বাবা দেবকুমার দাশগুপ্ত বলেন, মুকুল মনসা পুজোয় এসেছিল। তারপর মুকুল দল ছাড়ল। আমার মনে হচ্ছে রাজনৈতিক কারণে গ্রেফতার। প্রতারণা নয়। পৃথ্বীশ বলেছিল, ঝড়ঝাপটা আসবে।
সিআইডি সূত্রে দাবি, পৃথ্বীশকে জেরা করে, তাঁর ছায়াসঙ্গী দেবাশিস দাসের নাম পাওয়া যায়। এই ব্যক্তিও মুকুল রায়ের পরিচিত। মঙ্গলবার রাতে গ্রেফতার করা হয় বাগুইআটির জ্যাংরারই বাসিন্দা দেবাশিসকে। তিনিই পৃথ্বীশের অর্থলগ্নি সংস্থার টাকা লোপাটের দায়িত্ব সামলাতেন।
পৃথ্বীশের বাবা বলেন, পৃথ্বীশের গাড়ি চালাত দেবাশিস। ছেলেমেয়ের স্কুলে দিয়ে আসত।
মঙ্গলবার রাতে বাঁকুড়ার ইন্দাসেও তল্লাশি চালান সিআইডির গোয়েন্দারা। সেখানেই মুকুল রায়ের ছায়াসঙ্গী সুজিত শ্যামের বাড়ি। সিআইডি সূত্রে খবর, পৃথ্বীশ দাশগুপ্তর বেআইনি অর্থলগ্নি সংস্থার টাকা তছরুপের অভিযোগ রয়েছে সুজিতের বিরুদ্ধে।
যদিও সিআইডি অভিযানের খবর পেয়ে গা ঢাকা দেন তিনি। গোয়েন্দা সূত্রে দাবি, তাঁর মোবাইল ফোনটি বন্ধ রয়েছে। বুধবার সকালে একবার ফোন অন করেন।
সিআইডি সূত্রে দাবি, শেষবার সুজিতের মোবাইলের টাওয়ার লোকেশন বাঁকুড়ার পাত্রসায়র দেখিয়েছে। সেখানে তাঁরর মামাবাড়ি। গোটা ঘটনায় মুকুল রায়ের প্রতিক্রিয়া, সুজিত আমার পরিচিত। কিন্তু দেবাশিস আমার ঘনিষ্ঠ নয়।