কলকাতা:  তলব পেয়েই জানিয়েছিলেন, সোমবার তিনি হাজিরা দেবেন। সেই মতো এদিন দুপুরে ভবানী ভবনে যান বসিরহাট দক্ষিণের প্রাক্তন বিজেপি বিধায়ক শমীক ভট্টাচার্য। গোটা জিজ্ঞাসাবাদ পর্ব ভিডিও রেকর্ডিং করে রাখা হয়। সিআইডি সূত্রে দাবি, শমীক তদন্তকারীদের কাছে দাবি করেছেন,


বসিরহাটে প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনায় প্রতারণার অভিযোগ অনেক আগেই রাজ্য বিজেপির এক শীর্ষ নেতাকে জানানো হয়েছিল। ওই নেতাকে ১৬০টি ফাইলে করে অভিযোগের স্বপক্ষে নথিও দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু রাজ্য বিজেপির ওই শীর্ষ নেতা সব জেনেও কোনও পদক্ষেপ নেননি।

ভবানী ভবন থেকে বেরিয়ে অবশ্য জিজ্ঞাসাবাদ নিয়ে সবিস্তারে কিছু জানাতে চাননি শমীক।

এদিকে, দলের নেতা শমীক ভট্টাচার্যকে যেদিন সিআইডি জিজ্ঞাসাবাদ করল, তাৎপূর্ণভাবে সেদিনই এই ঘটনায় শমীকের নাম শোনা গেল বিজেপি রাজ্য সভাপতির মুখে!

বিজেপি-র রাজ্য সভাপতির দাবি, বসিরহাটে তাঁদের দলীয় অফিস থেকে প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনার ফর্ম ফিলাপ করা হয়নি। সিআইডি সূত্রে অবশ্য দাবি,

বসিরহাটে বিজেপির দলীয় কার্যালয় থেকেই, ফর্ম দেওয়া হয়েছে। ওই অফিসে বিজেপি-র এক শীর্ষ নেতাও উপস্থিত ছিলেন। কয়েকজন সাক্ষীর কাছ থেকে, এই সংক্রান্ত তথ্য প্রমাণ ও ছবি পেয়েছেন তদন্তকারীরা।

প্রতারণার এই অভিযোগ উঠেছে বসিরহাটের সবুজপল্লিতে। যেখানকার অধিকাংশ বাসিন্দাই হতদরিদ্র। কেউ ঠেলাগাড়িতে করে চানাচুর বিক্রি করেন, কেউ ইটভাটার শ্রমিক, কেউ বিড়ি বাঁধেন।

অভিযোগ, প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনার আওতায় বাড়ি তৈরি করে দেওয়ার নাম করে দিন আনি দিন খাই এই মানুষগুলির থেকে পাঁচশো থেকে এক হাজার টাকা পর্যন্ত নেওয়া হয়।

কুড়ি থেকে পঁচিশ হাজার মানুষের থেকে নেওয়া টাকার অঙ্ক প্রায় দেড়-দু’কোটি

স্থানীয়দের দাবি,  বিজেপির স্থানীয় কার্যালয়ে ফর্মের বিনিময়ে এই টাকা নেন রঞ্জিত পাল এবং বিকাশ সিংহ নামে দুই বিজেপি নেতা।

কিন্তু, তারপর বাড়ি তো দূরের কথা, কিছুই হয়নি। এরপরই বসিরহাট থানায় অভিযোগ দায়ের করেন স্থানীয়রা। তদন্তে নেমে গত বুধবার বিজেপি নেতা রঞ্জিত পালকে গ্রেফতার করে সিআইডি। গোয়েন্দা সূত্রে দাবি, তাঁকে জেরা করেই উঠে আসে বসিরহাট দক্ষিণের প্রাক্তন বিজেপি বিধায়ক শমীক ভট্টাচার্যের নাম।