কলকাতা: তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব সামলাতে কড়া বার্তা তিনি আগেও দিয়েছেন। তবে এবার একেবারে দলের একাধিক শীর্ষনেতার নাম করে চরম হুঁশিয়ারি দিতে শোনা গেল মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের গলায়। শনিবার কালীঘাটের বৈঠক থেকে যে পাঁচজনকে তিনি সতর্ক করেছেন, তাঁরা হলেন কাকলি ঘোষদস্তিদার, সব্যসাচী দত্ত, সুজিত বসু, কৃষ্ণা চক্রবর্তী, এবং তাপস চট্টোপাধ্যায়।


শনিবার কালীঘাটে তৃণমূলের নীতি নির্ধারক কমিটির বৈঠক ছিল। সেখানেই তৃণমূলনেত্রী এই পাঁচজনকে চরম হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, বারবার সতর্ক করা সত্ত্বেও শুনছ না।। অবিলম্বে গোলমাল বন্ধ কর। আর বরদাস্ত করব না। এবার ব্যবস্থা নিতে বাধ্য হব।

রাজারহাট-নিউটাউন এলাকায় তৃণমূল সাংসদ কাকলি ঘোষ দস্তিদার এবং তৃণমূল বিধায়ক সব্যসাচী দত্তর অনুগামীদের লড়াইয়ের অভিযোগ নতুন নয়।এই দ্বন্দ্ব ঘিরে একাধিকবার রণক্ষেত্র হয়েছে এই এলাকা। দলের দুই বিধায়ক সব্যসাচী দত্ত এবং সুজিত বসু তো বিধানসভার মধ্যেই একে অপরের সঙ্গে তরজায় জড়িয়েছেন। কখনও কখনও অন্তর্কলহে নাম জড়িয়েছে কৃষ্ণা চক্রবর্তী থেকে তাপস চট্টোপাধ্যায়েরও।

স্থানীয়দের অভিযোগ, এই যাবতীয় দ্বন্দ্বের মূলেই রয়েছে সিন্ডিকেট। এনিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় একাধিকবার কড়া বার্তা দিলেও এই লড়াই থামেনি। তাই দ্বিতীয় ইনিংসের শুরু থেকেই শক্ত হাতে লাগাম ধরেছেন মমতা। স্পষ্ট বুঝিয়ে দিয়েছেন, দলের ভাবমূর্তি রক্ষায় কোনও বেচাল তিনি সহ্য করবেন না। কখনও তোলাবাজিতে অভিযুক্ত তৃণমূল কাউন্সিলর অনিন্দ্য চট্টোপাধ্যায়কে গ্রেফতারের নির্দেশ দিয়ে। কখনও মন্ত্রিসভার বৈঠকে কড়া বার্তা দিয়ে।

পর্যবেক্ষকদের একাংশের মতে, এটা তো শুধু সিন্ডিকেটের বিষয় নয়। সাংসদ, বিধায়কদের এই অন্তর্দ্বন্দ্বে যে শেষমেশ দলের ভাবমূর্তি ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে, সেটাও মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় পরিষ্কার বুঝতে পারছেন। দলের ঐক্যবদ্ধ চেহারা সামনে না আনতে পারলে পঞ্চায়েত ভোটে বিরূপ প্রভাব পড়তে পারে। তাই দলের নেতাদের একাংশের এই বেপরোয়া মনোভাবে রাশ টানতে তিনি এবার এবার রাফ অ্যান্ড টাফ। শনিবার পাঁচজনের নাম করে কড়া বার্তা তারই ইঙ্গিত বলে মত পর্যবেক্ষকদের একাংশের।