সন্দীপ সরকার ও ঝিলম করঞ্জাই, কলকাতা: রাজ্যে প্রথম করোনা-আক্রান্তের মৃত্যু। সল্টলেক আমরিতে মৃত্যু দমদমের প্রৌঢ়ের। হাসপাতাল সূত্রে খবর, ভেন্টিলেশনে থাকাকালীন হৃদরোগে আক্রান্ত হন ওই ব্যক্তি। দেহ দেওয়া হবে না পরিবারকে। নিয়ম মেনেই হবে ডিসপোজাল। সংক্রমণ রুখতে ইলেকট্রিক চুল্লিতে দ্রুত সৎকারের নির্দেশ মুখ্যমন্ত্রীর।


১৬ তারিখ থেকে সল্টলেকের আমরি হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন দমদমের বাসিন্দা ৫৭ বছরের ব্যক্তি। হাসপাতাল সূত্রে খবর, জ্বর ও কাশির উপসর্গ নিয়ে ভর্তি করোনা আক্রান্ত ব্যক্তি ছিলেন ভেন্টিলেশনে। সোমবার দুপুর ৩টে ৩৫মিনিটে ভেন্টিলেশনে থাকা অবস্থাতেই হৃদরোকে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয় তাঁর। হাসপাতাল থেকে আরও জানানো হয়েছে, মৃতের দেহ দেওয়া হবে না পরিবারের হাতে।



মৃতদেহ সত্কার করা হবে কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রকের নির্দেশিকা মেনে। নবান্নে সর্বদলীয় বৈঠক চলাকালীন করোনায় রাজ্যে প্রথম মৃত্যুর খবর পান মুখ্যমন্ত্রী। চিকিত্সকদের পরামর্শ অনুযায়ী দ্রুত সৎকারের নির্দেশ দেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।


কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রকের নির্দেশিকা অনুযায়ী, চূড়ান্ত সতর্কতার সঙ্গে দেহ ওয়ার্ডে থেকে বের করে শেষকৃত্যে নিয়ে যেতে হবে। দেখতে হবে, শরীর থেকে কোনও ভাবে যাতে রস গড়িয়ে না পড়ে। লিক প্রুফ প্যাকেটে বিশেষ রাসায়নিক দিয়ে সিল করে নিয়ে যেতে হবে দেহ। না ছুঁয়ে সত্কারের সময় ধর্মীয় আচার পালন করতে হবে বন্ধ ব্যাগের ওপর থেকে। তবে শেষকৃত্যের পর সংগ্রহ করা যাবে ছাই।


পরিবার সূত্রে খবর, ফেব্রুয়ারি মাসে স্ত্রীকে নিয়ে ছত্তীসগঢ়ের বিলাসপুরে গিয়েছিলেন ওই ব্যক্তি। ২ মার্চ, পুণে থেকে আসা আজাদ হিন্দ এক্সপ্রেসে কলকাতায় ফেরেন।


পড়ুন: রাশিয়ায় লকডাউন নিশ্চিত করতে রাস্তায় ৮০০ ক্ষুধার্ত সিংহ ও বাঘ ছেড়েছেন পুতিন! সত্যিই কি তাই?


জানা গিয়েছে, ৮ মার্চ নিউটাউনের একটি শপিং মলে যান প্রৌঢ় ও তাঁর স্ত্রী। গত ১৩ তারিখ থেকে জ্বর-সর্দি-কাশির উপসর্গ দেখা দেয়। তারপরই ভর্তি করা হয় সল্টলেকের বেসরকারি হাসপাতালে। হাসপাতাল সূত্রে খবর, ২০ ও ২১ মার্চ, দু’বার ওই ব্যক্তির নমুনা পরীক্ষা হয় নাইসেড ও এসএসকেএম হাসপাতালে। দু’টি টেস্টই পজিটিভ আসে।


মহারাষ্ট্রে নোভেল করোনা ভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা প্রায় ৯০। পরিজনদের আশঙ্কা, পুণে থেকে ট্রেনে ট্রেনে আসার সময়ই সংক্রমণ হয়েছে। স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে খবর, মৃতের ছেলে থাকেন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে। সম্প্রতি মৃতের ছেলে পরিবারের কাছে এসেছিলেন কিনা, তাও খতিয়ে দেখা হচ্ছে। পরিজন সহ যাঁরা ওই ব্যক্তির সংস্পর্শে এসেছিলেন, তাঁরাও এম আর বাঙ্গুর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। তাঁদের মধ্যে রয়েছেন, মৃতের স্ত্রী, মেয়ে, শাশুড়ি ও পরিচারিকা।