কলকাতা: এক আবদার মেনে নেওয়ার পরই আরেক আবদার। ফেল করেও পাস করে যাওয়ার পর এবার নতুন দাবিতে আন্দোলনে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ুয়াদের একাংশ। ক্লাসে প্রয়োজনীয় হাজিরা নেই, তাও পরীক্ষায় বসতে দিতে হবে। এমনই আজব আবদার নিয়ে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে অবস্থানে বাংলা স্নাতকোত্তরের প্রথম ও তৃতীয় সেমেস্টারের পড়ুয়ারা। মঙ্গলবার সন্ধে থেকে ২৪ ঘণ্টারও বেশি সময় ধরে বিশ্ববিদ্যালয়ে আটকে উপাচার্য এবং সহ উপাচার্যরা। নিয়ম অনুযায়ী, সেমেস্টারে বসার জন্য ৬৫ শতাংশ হাজিরা প্রয়োজন। ৫৫ শতাংশের ওপর হাজিরা থাকলে জরিমানা দিয়ে পরীক্ষা দেওয়া যায়। উপস্থিতির হার তার নীচে থাকলে পরীক্ষায় বসা যায় না। কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে বাংলা স্নাতকোত্তরের প্রথম সেমেস্টারে পড়ুয়ার সংখ্যা ৩৮৫। এর মধ্যে পরীক্ষায় বসার মতো উপস্থিতির হার নেই ৩৮ জনের। তৃতীয় সেমেস্টারে পড়ুয়ার সংখ্যা ৩৬৮ জন। এর মধ্যে পরীক্ষায় বসতে পারবেন না ২৪ জন। পরীক্ষায় বসার মতো উপস্থিতির হার না থাকলেও এই পড়ুয়াদের দাবি, তাঁদের পরীক্ষায় বসতে দিতে হবে। এই দাবিতেই মঙ্গলবার সন্ধে থেকে বাংলা বিভাগের বাইরে অবস্থানে বসেন তাঁরা। উপাচার্য অবশ্য ঠারেঠোরে পরিষ্কার বুঝিয়ে দিয়েছেন, কারও জন্যই নিয়ম পাল্টাবে না। মঙ্গলবার রাতে অবস্থানের জেরে আটকে পড়েন বাংলা বিভাগের অধ্যাপকরা। পরে উপাচার্য এসে তাঁদের বার করার ব্যবস্থা করেন। এরপর থেকে তিনি সহ উপাচার্যদের নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ে থেকে যান। অনেকেই বলছেন, সম্প্রতি কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে অকৃতকার্য পড়ুয়াদের একাংশকে যেভাবে পাস করিয়ে দেওয়া হয়েছে, তা থেকেই উৎসাহিত হয়ে এই নতুন আন্দোলনে নেমেছেন পড়ুয়াদের একাংশ। সম্প্রতি কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে বিএ পার্ট ওয়ান অনার্স ও জেনারেলে ফেল করে ৫৭ শতাংশ পরীক্ষার্থী। বিএসসিতে ফেলের হার ছিল ২৯ শতাংশ। এরপরই মারমুখী আন্দোলনে নামে অকৃতকার্য পড়ুয়ারা। মুখ্যমন্ত্রী শিক্ষামন্ত্রীকে অনুরোধ করেন, বিষয়টি খতিয়ে দেখতে। এরপরই শিক্ষামন্ত্রী বিধানসভায় জানান, কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে এত ফেল করায় মুখ্যমন্ত্রী উদ্বিগ্ন। যে কায়দায় পুরনো বিধি পাল্টে নতুন বিধি লাগু করা হয়েছে, তা আমার মতে, বিধিসম্মত নয়। ৬ তারিখ সিন্ডিকেট বৈঠক। উপাচার্যকে অনুরোধ করেছি, বিষয়টি ভেবে দেখার জন্য। ফেল করা ছাত্ররা যে ভাবে আন্দোলন করছে তাকে সরকার মান্যতা দেয় না। কিন্তু তারা যাতে অসুবিধায় না পড়ে তা দেখতে হবে। এরপর পুরনো বিধি ফিরিয়ে নতুন করে ফল প্রকাশের সিদ্ধান্ত নেয় কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়। এর জেরে অকৃতকার্য পড়ুয়াদের একাংশ সহজেই পাস করে যায়। শিক্ষামহলের দাবি, চাপের মুখে বিশ্ববিদ্যালয়ের নতিস্বীকারের ফলেই এবার আরেক নতুন আবদার নিয়ে হাজির পড়ুয়াদের আরেকটি অংশ। এই প্রবণতা যে ভবিষ্যতে আরও মারাত্মক আকার ধারণ করবে না, তার উত্তর মিলবে ভবিষ্যতে।
ক্লাসে হাজিরার হার নেই, তবু পরীক্ষায় বসতে দিতে হবে! আন্দোলনে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ুয়াদের একাংশ
ওয়েব ডেস্ক, এবিপি আনন্দ | 21 Feb 2018 07:59 PM (IST)