কলকাতা: করোনা মোকাবিলায় সবথেকে উপযোগী হাতিয়ার কী? গোটা বিশ্বের চিকিৎসক মহল প্রাথমিক দাওয়াই হিসেবে প্রেসক্রাইব করেছে, ‘সামাজিক দূরত্ব’। অর্থাৎ মানুষ থেকে মানুষে ছড়িয়ে পড়া সংক্রমণ ঠেকাতে একে অপরের থেকে যতটা সম্ভব দূরত্ব রাখা যায়, ততই ভাল। পরতে হবে মাস্ক, গ্লাভসও। মহামারী পরিস্থিতি মোকাবিলা করতে উন্নত বিশ্বের একাধিক দেশের মতো ভারতও লকডাউনের সিদ্ধান্ত নেয়। গোটা দেশে সমস্ত রকম পরিবহণ বন্ধ করে দেওয়া হয়। ২৪ মার্চ প্রথম পর্যায়ের লকডাউন চলে একটানা ২১ দিন। তারপর দ্বিতীয় পর্যায়ে তা বাড়িয়ে ৩ মে পর্যন্ত করে কেন্দ্র। তারপর লকডাউনের সময়সীমা আরও বাড়িয়ে ১৭ এপ্রিল পর্যন্ত করার সিদ্ধান্ত জানিয়ে দেওয়া হয়। দেশকে এভাবে গৃহবন্দি করে রাখার সুফলও মিলেছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, ব্রিটেন, স্পেন, ইতালিতে যে হারে মৃত্যু হয়েছে ভারত সেখান তুলনামূলক ‘ভাল’ জায়গায়। তবে এবার আশঙ্কা বাড়ছে সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ার।


কেন্দ্র ও রাজ্য লকডাউনের মধ্যেই মদ বিক্রির অনুমতি দিয়েছে। পঞ্জাব, দিল্লি তো বটেই পশ্চিমবঙ্গও এই ছাড়ে রেকর্ড গড়েছে। রাজ্যে ইতিমধ্যেই একশো কোটির ওপরে মদ বিক্রি হয়েছে। এতে রাজ্যের রাজস্বে পুষ্পবৃষ্টি হলেও শিকেয় উঠেছে সামাজিক দূরত্বের মতো অত্যাবশ্যকীয় সুরক্ষা। যা নিয়ে এবার প্রশ্ন তুললেন তৃণমূল সাংসদ দীপক অধিকারী ওরফে দেব। ট্যুইটারে দেবের প্রশ্ন, “সামাজিক দূরত্ব কিংবা ভিড় নিয়ে যদি এতোই মাথাব্যথা, তাহলে মদের দোকানের লাইনে কী হচ্ছে? আরও একবার ভাবুন।”





ওই ট্যুইটে এই সময়ে পরিযায়ী শ্রমিকদের নিয়ে কেন্দ্র ও রাজ্যের মধ্যে যে রাজনৈতিক তরজা চলছে, তা নিয়েও নিজের মত প্রকাশ করেন তিনি। দেব লেখেন, “আমি মনে করি নিদেন পক্ষে এক সপ্তাহের জন্য ট্রেন চালানো উচিত। এতে পরিযায়ী শ্রমিকরা নিজেরাই তাদের বাড়ি ফিরতে পারবে। কোনও সরকারকেই একে অপরকে দোষারোপ করতে হবে না।”



প্রসঙ্গত, ঔরাঙ্গাবাদে পরিযায়ী শ্রমিকদের ওপর মালগাড়ি চলে যাওয়ার ঘটনায় সরব হয়েছে গোটা দেশ। মহারাষ্ট্রের শিবসেনা ও কংগ্রেস জোটের সরকার দায় চাপায় কেন্দ্রের ওপরে। পাল্টা দায় চাপায় কেন্দ্রও। আসরে নামে তৃণমূলও। প্রশ্ন ওঠে, বাংলায় কেন পরিযায়ী শ্রমিকদের ট্রেন ঢুকতে দেওয়া হচ্ছে না। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে চিঠি লেখেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। তারপরই বাইরের রাজ্য থেকে পরিযায়ী শ্রমিক, তীর্থযাত্রীদের ফিরিয়ে আনতে উদ্যোগী হয় রাজ্য। এই পরিস্থিতিতে ঘাটালের তৃণমূল সাংসদ দেবের এমন ট্যুইট বেশ তাৎপর্যপূর্ণ বলেই মত রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের।