কলকাতা: গৌতম কুণ্ডুর স্ত্রী শুভ্রা কুণ্ডুর সঙ্গে যোগাযোগ রাখার অভিযোগ ওঠার পর বিতর্কের মুখে রোজভ্যালি-তদন্ত থেকে অপসারিত মনোজ কুমার। তদন্তের নির্দেশ ইডির। শুল্ক বিভাগে পাঠানোর প্রক্রিয়া শুরু। পাশাপাশি, ওই অফিসারকে শীঘ্রই তলব করতে চলেছে কলকাতা পুলিশ। তলব করা হতে পারে রোজভ্যালি কর্ণধারের স্ত্রী শুভ্রা কুণ্ডুকেও। খবর লালবাজার সূত্রে।
ইডি-র যে অফিসার রোজভ্যালি মামলার তদন্তের দায়িত্বে ছিলেন, তাঁর সঙ্গেই রোজভ্যালি কর্ণধারের স্ত্রীর নিয়মিত যোগাযোগ ছিল বলে পুলিশ সূত্রে দাবি। এই প্রেক্ষিতে রোজভ্যালির টাকা পাচারের তদন্তে শীঘ্রই এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেটের অফিসার মনোজ কুমারকে লালবাজারে ডেকে পাঠানো হবে বলে জানিয়েছেন পুলিশের এক শীর্ষকর্তা। পাশাপাশি রোজভ্যালি কর্ণধারের স্ত্রী শুভ্রা কুণ্ডুকেও ২-৩ দিনের মধ্যে লালবাজারে ডাকা হবে বলে দাবি ওই শীর্ষকর্তার।
এ প্রসঙ্গে ইডি অফিসার মনোজ কুমারকে প্রশ্ন করা হলে তিনিও নিজে বৃহত্তর ষড়যন্ত্রের শিকার বলে দাবি করেন। বলেন, আমাকে সরিয়ে দেওয়ার জন্য এটা লার্জার কনস্পিরেসি। আই ডোন্ট ওয়ান্ট টু কমেন্ট টু বি এ পলিটিক্যাল ভিক্টিম অর এ ভিক্টিম অফ ক্রস ফায়ার বাই দ্য কলকাতা পুলিশ, ফর দ্য রিসন বেস্ট নোন টু দেম।
পুলিশ সূত্রে দাবি, গৌতম কুণ্ডুর স্ত্রী শুভ্রা কুণ্ডুর সঙ্গে ইডি অফিসার মনোজ কুমারের প্রায়ই কথা এবং মেসেজে চালাচালি হত। এ নিয়ে তথ্য-প্রমাণ পুলিশের হাতে রয়েছে। পুলিশ সূত্রে দাবি, দুজনকে একসঙ্গে বিমানবন্দরেও দেখা গিয়েছে। পুলিশ সূত্রে আরও দাবি, দিল্লির সুন্দরনগরের একটি হোটেলে ইডির ওই সিনিয়র অফিসারের সঙ্গে গৌতম কুণ্ডুর স্ত্রীর ঢোকার ফুটেজ পাওয়া গিয়েছে। যদিও, ইডি অফিসার মনোজ কুমারের দাবি, আমি আমার মতো গিয়েছিলাম। তিনি তাঁর মতো গিয়েছিলেন। আমি অ্যাটাচ করা সম্পত্তি ফাইল করতে গিয়েছিলাম।
পুলিশ সূত্রে অবশ্য দাবি, ফুটেজ ছাড়াও মনোজ কুমার এবং শুভ্রা কুণ্ডুর দিল্লি যাওয়া নিয়ে আরও কিছু তথ্য তাদের হাতে এসেছে। পুলিশ সূত্রে দাবি, মনোজ কুমার যে ক্রেডিট কার্ডের মাধ্যমে হোটেলের বিল মেটান, সেটিও তাঁর ছিল না। ক্রেডিট কার্ডটি ছিল ইডি-র হাতে আসে অন্য এক অভিযুক্তর।
এদিকে, রোজভ্যালি কর্ণধারের স্ত্রীর সঙ্গে ফুটেজ সামনে আসার পর বিষয়টি নিয়ে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছে এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট। ইডি-র তরফে জানানো হয়েছে, বিষয়টি অত্যন্ত গুরুতর। আমরা খুঁটিয়ে তদন্ত করে দেখছি। এই আধিকারিকের বিষয়ে কিছু তথ্য মেলায়, তাঁকে নজরে রাখা হয়। তদন্তের রিপোর্ট দেখে পরবর্তী পদক্ষেপ স্থির করা হবে।
ফুটেজে মনোজ কুমার নামে যে অফিসারকে দেখা গিয়েছে, তাঁকে আপাতত রোজভ্যালি তদন্ত থেকে সরানো হয়েছে। তাঁর জায়গায় নতুন তদন্তকারী অফিসার সৌমেন বসু। ইডি সূত্রে দাবি, অভিযোগ প্রমাণিত হলে সংশ্লিষ্ট অফিসারের বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপ নেওয়া হবে। তবে ইডি সূত্রে এ-ও দাবি, মনোজ কুমার সারদা, রোজভ্যালির মতো হাই প্রোফাইল মামলার তদন্ত প্রভাবিত করতে পারেন বলে তারা মনে করছে না। কারণ, এধরনের তদন্ত বিভিন্ন স্তরের অফিসারদের পর্যবেক্ষণে হয়। কোনও একজনের নয়।