কলকাতা: আইন আছে, নিয়ম আছে। কিন্তু তার ফাঁক গলেই, রমরমিয়ে চলছে ছোট ইলিশের বিক্রি। নজরদারি চলছে, সচেতনামূলক প্রচারও শুরু হবে, দাবি মৎস্যমন্ত্রীর।
ইলিশ! রুপোলি এই শষ্যের চাহিদা বছরভর। কিন্তু মৎস্যজীবীদের জালে ওঠে ইলশেগুঁড়ি শুরু হলেই। বড়দের সঙ্গে বাজারে হাজির হয় খোকারা। এবারও তার ব্যতিক্রম হয়নি। কলকাতা থেকে জেলা, বাজার এখন খোকা-ময়! আকারে ছোট, দামেও কম। কিন্তু স্বাদে-গন্ধে বড়দের তুলনায় খুব একটা কম যায় না এই খুদেরা। তাই আইনকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে অবাধে চলছে খোকা বিক্রি।
কাকে বলে খোকা ইলিশ? মৎস্য দফতর সূত্রে খবর, ২৩ সেন্টিমিটার বা ৯ ইঞ্চির কম দৈর্ঘের ইলিশকেই ‘খোকা ইলিশ’ বলা হয়। ওজনে যা ৫০০ গ্রামের থেকে বেশ কিছুটা কম।
আইন বলছে, খোকা ইলশের বাজারে প্রবেশ নিষেধ! তাহলে কী করে ছোট ইলিশে ছেয়ে যাচ্ছে বাজার? মৎস্য দফতর সূত্রে খবর, ইলিশ ধরার জালের একটি ফাঁসের পরিধি হতে হয় ৯০ মিলিমিটার। এর চেয়ে ছোট ফাঁসের জাল ব্যবহার করা যায় না।
কিন্তু অনেকক্ষেত্রেই নজরদারি এড়িয়ে ছোট জাল ব্যবহার করছেন মৎস্যজীবীরা। যার ফলে ফাঁস এড়াতে পারছে না খোকা ইলিশের দল। মৎস্য দফতর সূত্রে খবর, খোকা ইলিশ ধরা পড়লে, তা বাজেয়াপ্ত করে বিক্রি করে দেওয়া হয়। বিক্রির ৫০% টাকা দেওয়া হয় সংশ্লিষ্ট মৎস্যজীবীদের, বাকি টাকা চলে যায় সরকারি কোষাগারে।
কিন্তু এই সব নিয়মকেই বুড়ো আঙুল দেখিয়ে ‘জল থেকে তুলে বাজারে’ আনা হচ্ছে খোকাদের! প্রায় এক কেজি ওজনের ইলিশের দাম যেখানে ৮০০-১০০০ টাকা, সেখানে খোকা ইলিশের দাম দুশো থেকে আড়াইশো টাকা। বিকোচ্ছেও হট কেকের মতো! বিশেষজ্ঞদের বক্তব্য, ‘খোকা ইলিশের’ বাজারে আসার বহর যদি এরকম হয়, তাহলে তো শিয়রে সঙ্কট!
একেই আকাল বড় সাইজের ইলিশের, তার ওপর এভাবে যদি খোকা ধ্বংস করা হয়, তাহলে অদূর ভবিষ্যতে তো ইলিশেরই সঙ্কট দেখা দেবে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।
যদিও রাজ্যের মৎস্যমন্ত্রী চন্দ্রনাথ সিংহ জানিয়েছেন, মৎস্যজীবী সংগঠনগুলির মধ্যে সচেতনতা বৃদ্ধির কাজ শুরু হয়েছে। যে সব জায়গা থেকে মৎস্যজীবীরা মাছ ধরতে যাচ্ছেন, সেখানেও নজরদারি চালানো হচ্ছে। বাজারগুলিতেও শীঘ্রই নজরদারি শুরু হবে।
খোকা ইলিশ বিক্রি বন্ধে সচেতনতা গড়ে তুলতে, বাজারগুলিতেও প্রচার চালানো হবে বলে মৎস্য দফতর সূত্রে খবর। তাতে কাজ না হলে নেওয়া হতে পারে কড়া পদক্ষেপ।