সমিত সেনগুপ্ত, কলকাতা: আগামী ১ জুন থেকে সমস্ত মিষ্টির দোকানে খুচরো মিষ্টি বিক্রির ক্ষেত্রেও ক্রেতাদের জানতে হবে যে কবে সেই মিষ্টি বানানো হয়েছে আর কতদিনের মধ্যে সেটা খাওয়া যেতে পারে। নির্দেশ ফুড সেফটি অ্যান্ড স্ট্যান্ডার্ড অথরিটি অফ ইন্ডিয়া (এফএসএসএআই)-এর।
২০০৬ এর কেন্দ্রীয় খাদ্য সুরক্ষা আইন অনুযায়ী বিজ্ঞপ্তি জারি করেছে এফএসএসএআই। এতদিন পাকেজড্ মিষ্টির কন্টেনারের উপরেই তৈরীর দিন এবং কতদিন পর্যন্ত সেটা খাওয়া যেতে পারে সেটা লেখা থাকত। এই নয়া নির্দেশিকা পাওয়ার পর খুচরো বিক্রেতাদের কপালে চিন্তার ভাঁজ। কারণ নতুন নিয়ম মানতে গেলে মিষ্টির দাম বাড়ার আশঙ্কা করছেন তাঁরা।
সতীশ ময়রার কর্নধার অরূপ কুমার দাসের বক্তব্য, 'কোনও কোনও গ্রাহক মিষ্টি কিনে নিয়ে যাওয়ার পরে বাড়িতে বেশ কিছুদিন রেখে দেন। সেক্ষেত্রে নির্দিষ্ট সময়ের পরে সেই মিষ্টি খেলে যদি তাঁর শরীর খারাপ করে তাহলে তার দায়িত্ব কে নেবে?
অরূপবাবু আরও বলেন, 'অনেক ক্রেতাই আছেন যারা ৫০ গ্রাম বোঁদে কিংবা দুটি সন্দেশ প্রতিদিন পুজোর জন্য নিয়ে যান। এঁদের সকলকে কি বিল দেওয়া সম্ভব? আর এই পদ্ধতি মেনে যদি গ্রাহকদের অল্প মিষ্টির জন্য বিল দিতে হয় কিংবা প্রতিদিন মিষ্টির জন্য নতুন ট্যাগ তৈরি করতে হয়, সেক্ষেত্রে দাম তো বাড়বেই।'
শহরের অভিজাত মিষ্টান্ন বিক্রেতা বলরাম মল্লিক ও রাধারমণ মল্লিক এর কর্ণধার সুদীপ মল্লিকের বক্তব্য প্রায় একই। সুদীপবাবু বলেন, 'জিএসটি-র জন্য ইতিমধ্যেই মিষ্টান্ন বিক্রেতারা মিষ্টির দাম বাড়াতে বাধ্য হয়েছেন। আমরা গত তিন বছর ধরে মানুষের উপর প্রভাব পড়বে বলে মিষ্টির দাম বাড়াইনি। কিন্তু যদি প্রতিটি খুচরো মিষ্টির বিক্রির ক্ষেত্রে প্রতিদিন তার মান সংক্রান্ত তথ্য দিয়ে হয়, তাহলে তো দাম বাড়াতে বাধ্য হব। একটা কম্পিউটারাইজড ট্যাগের দাম ২ থেকে ৮ টাকা পর্যন্ত। তাহলে এর প্রভাব তো মিষ্টির ক্রেতাদের উপর পরবেই।'
মিষ্টিপ্রেমীদের কেউ কেউ কিন্তু এফএসএসএআই-এর এই পদক্ষেপকে স্বাগত জানাচ্ছে। মিষ্টির দোকানের এক ক্রেতা ইন্দ্রাণী গায়েন বলেছেন, 'অনেক দোকান থেকেই দাম দিয়ে মিষ্টি কিনে নিয়ে গিয়ে দেখা যায় তার গুণগত মান ঠিক নেই। তখন কিছুই করার থেকে না। যদি এই নতুন নিয়মে মিষ্টি বিক্রি হয়, তাহলে তার গুণমান নিয়ে নিশ্চিন্ত থাকা যাবে।'
সূত্রের খবর, মার্চ মাসের প্রথম সপ্তাহে এরাজ্যের মিষ্টান্ন বিক্রেতারা দিল্লিতে এফএসএসএআই-এর সঙ্গে বৈঠকে বসবেন।