কলকাতা: পড়ুয়াদের বিক্ষোভের মুখে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ফিরলেন রাজ্যপাল। যোগ দিতে পারলেন না কোর্ট বৈঠকে।


হাতে কালো পতাকা।গাড়ি ঘিরে বিক্ষোভ।উঠল গো-ব্যাক স্লোগান।সমাবর্তন নিয়ে বিতর্কের মাঝে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের কোর্ট বৈঠকের পৌরহিত্য করতে গিয়ে এভাবেই পড়ুয়া ও শিক্ষাকর্মীদের একাংশের বিক্ষোভের মুখে পড়লেন আচার্য তথা রাজ্যপাল।

জাতীয় নাগরিকপঞ্জি ও সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন বিরোধী প্ল্যাকার্ড হাতে বিক্ষোভ দেখান পড়ুয়া ও শিক্ষাকর্মীদের একাংশ।

গাড়ির বাইরে যখন বিক্ষোভ চলছিল তখন গাড়ির ভিতরে গালে হাত দিয়ে বসে ছিলেন আচার্য তথা রাজ্যপাল।


তাঁদের সঙ্গে কথা বলতে হবে এই শর্তে প্রায় পঞ্চাশ মিনিট গাড়িতে আটকে থাকার পর রাজ্যপালকে অরবিন্দ ভবনের ঢুকতে দেন বিক্ষোভরত পড়ুয়া ও শিক্ষাকর্মীরা। কিন্তু, পড়ুয়াদের বিক্ষোভের মাঝে দীর্ঘক্ষণ আটকে থাকতে হয় যাদবপুরের উপাচার্য, দুই সহ উপাচার্য ও রেজিস্ট্রারকে।

দীর্ঘক্ষণ বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি ঘরে বসে থাকেন রাজ্যপাল জগদীপ ধনকড়। ছাত্ররা রাজি হলেও,তৃণমূল প্রভাবিত কর্মচারী ইউনিয়নের সদস্যরা রাজ্যপালকে কোর্টের বৈঠকে ঢুকতে দিতে রাজি হননি।

জাতীয় নাগরিকপঞ্জি, সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন থেকে দিল্লির জামিয়া মিলিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ুয়া নিগ্রহ বা হায়দরাবাদ এনকাউন্টার নিয়ে ছাত্রদের প্রশ্নের মুখে পড়েন আচার্য।

এর আগে গত ১৯ সেপ্টেম্বর যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে নিগৃহীত হতে হয় কেন্দ্রীয় মন্ত্রী বাবুল সুপ্রিয়কে। কেন্দ্রীয় মন্ত্রীকে উদ্ধার করতে গিয়ে দীর্ঘক্ষণ আটকে থাকতে হয় রাজ্যপালকে। ওই দিনই ক্যাম্পাসে তাণ্ডব চালায় অখিল ভারতীয় বিদ্যার্থী পরিষদ। সেই ঘটনায় বারবার বলা সত্বেও রাজ্য সরকার তাঁকে কোনও জবাব দেয়নি বলে অভিযোগ করেন রাজ্যপাল।

প্রায় দু’ঘণ্টা পর যাদবপুরের কোর্ট বৈঠকে যোগ না দিয়েই ফিরতে হয় রাজ্যপালকে। পরে ট্যুইট করে রাজ্যপাল বলেন, যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে আমার যাওয়া নিয়ে রাজ্য প্রশাসন কোনও পদক্ষেপ নেয়নি। বিক্ষোভকারী পড়ুয়াদের সঙ্গে বিভিন্ন বিষয় নিয়ে কথা হয়েছে। আমি ভবিষ্যতেও তাঁদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখতে আগ্রহী। উপাচার্যকে বলেছি, কোর্টের বৈঠক করতে হলে রাজভবনে এসে করতে।

যদিও, রাজ্যপালের এই ট্যুইটের আগেই বিশ্ববিদ্যালয়ে শুরু হয়ে যায় কোর্টের বৈঠক।

যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে খবর, মঙ্গলবার যাদবপুরের সমাবর্তনে আসতে চান বলে জানিয়েছেন রাজ্যপাল।


যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে রাজ্যপালকে ঘিরে ছাত্র-বিক্ষোভ নিয়ে শুরু হয়েছে তৃণমূল-বিজেপি চাপানউতোর। বিজেপি নেতা সায়ন্তন বসু বলেছেন, রাজ্যপাল বলেই মেনে নিচ্ছেন, অন্য কেই হলে মানবে না। পাল্টা কটাক্ষ করেছেন পঞ্চায়েত মন্ত্রী সুব্রত মুখোপাধ্যায়।

সব মিলিয়ে রাজ্যপালের যাদবপুরে যাওয়া নিয়েও তুঙ্গে রাজনৈতিক তরজা।