রাজ্যপালের ভাষণ তৈরি করে দেয় রাজ্য সরকার। রাজ্য সরকারের লেখা বক্তব্য পাঠ করেন রাজ্যপাল। এটাই প্রথা। তাই এবারও বাজেট অধিবেশনের শুরুতে রাজ্যপালের ভাষণে মুখ্যমন্ত্রীর প্রশংসা। শাসকের সুর। এদিন বিধানসভার বাজেট অধিবেশনের প্রথম দিন উদ্বোধনী বক্তৃতায় রাজ্যপাল কেশরীনাথ ত্রিপাঠী বলেন, কুৎসা ও প্রতিহিংসার রাজনীতি মানুষ প্রত্যাখ্যান করেছে। উন্নয়নের পক্ষে রায় দিয়েছে।
এ বার ভোটে, তৃণমূলের বিরুদ্ধে সারদা থেকে নারদার মতো দুর্নীতির অভিযোগকে হাতিয়ার করেছিল বিরোধীরা। কিন্তু, তারপরেও তৃণমূল একাই ২১১। এই প্রেক্ষাপটে, এ দিন রাজ্যপালের ভাষণের পরই রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে সুর চড়ান বিরোধীরা। তাদের দাবি, ভোটের ফল দিয়ে সততা প্রমাণ হয় না। বিরোধী দলনেতা আব্দুল মান্নান বলেন, এত দিশাহীন বাজেট আগে দেখিনি। অনেক চোর-ডাকাতও ভোটে জেতেন। ফুলন দেবীও সাংসদ। ভোটের ফল দিয়ে প্রমাণ হয়ে যায় না কেউ চুরি করেনি। পাশাপাশি, সবংয়ের কংগ্রেস বিধায়ক মানস ভুঁইয়ার দাবি, রাজ্যপালের ভাষণ তৈরি করে দেয় রাজ্য সরকার। উন্নয়নের প্রতিফলন নয়, এটা ব্যক্তিগত সুবিধা দেওয়ার রাজনীতির প্রতিফলন। সাম্প্রদায়িক রাজনীতির প্রতিফলন। আরএসএস থেকে ভোট ট্রান্সফারের প্রতিফলন।
প্রসঙ্গত, ২০১৪ লোকসভা ভোটের ফলের নিরিখে বিজেপির ভোট কমেছে প্রায় সাত শতাংশ আর ওই একই নিরিখে তৃণমূলের এবার ভোট বেড়েছে প্রায় ৬ শতাংশ।পর্যবেক্ষকদের অনেকের মতে, বিজেপির ভোটের একাংশ জোটের দিকে না গিয়ে তৃণমূলের ঝুলিতে গিয়েছে। সেদিকেই কি ইঙ্গিত করলেন সবংয়ের কংগ্রেসের বিধায়ক? কংগ্রেসের মতোই এ দিন রাজ্যপালের ভাষণের বিষয়বস্তু নিয়ে সরব হয় বামেরাও। ফ্রন্টের পরিষদীয় দলনেতা
সুজন চক্রবর্তী বলেন, মূল্যবৃদ্ধির উল্লেখ নেই। আইনশৃঙ্খলার উল্লেখ নেই। প্রতিদিন রক্ত ঝড়ছে, হাজার হাজার মানুষ ঘরছাড়া, ভাষণে এর প্রতিফলন নেই।
বিরোধীদের নিশানা করে পাল্টা কটাক্ষের সুর সরকারের গলায়। সব মিলিয়ে প্রত্যাশিত পথেই বাজেট অধিবেশনের প্রথম দিন থেকে শাসক-বিরোধী চাপানউতোর তুঙ্গে।