আবীর দত্ত, কলকাতা: নির্বাচনের নির্ঘণ্ট এখনও ঠিক হয়নি। তার মধ্যেই কলকাতায় সক্রিয় হাওয়ালা চক্র। নির্বাচন কমিশনের ফুলবেঞ্চ বৈঠকে বসার সময় থেকে এখনও পর্যন্ত প্রায় দেড় কোটি টাকার ওপরে উদ্ধার করা হয়েছে। গ্রেফতার করা হয়েছে ৩ জনকে। এই টাকাগুলো হাওয়ালার মাধ্যমেই আসছে অনুমান তদন্তকারীদের। নির্বাচনের জন্যই এই টাকা পাঠানো হচ্ছে এমনটাও সন্দেহ তাঁদের। কিন্তু কারা রয়েছে এর পেছনে? কাদের জন্য আসছে টাকা? এসব প্রশ্নের উত্তর খুঁজছেন তদন্তকারীরা। তাই তল্লাশি ও নজরদারির উপর বাড়তি জোর কলকাতা পুলিশের।


গতকালই পোস্তা থানা এলাকা থেকে গ্রেফতার করা হয় মহাম্মদ নিজাম নামের ৩০ বছর বয়সী এক ব্যক্তিকে। তার কাছ থেকে পাওয়া গেছে ৫০ লক্ষ টাকা। যার মধ্যে ২০০০ টাকার নোট তেরোশোটি আর ৫০০ টাকার নোট ৪,৮০০টি পাওয়া গেছে। একটি মেরুন রঙের ব্যাগ নিয়ে পোস্তা এলাকা থেকে যাচ্ছিল সেই ব্যক্তি। তখনই কর্তব্যরত পুলিশের একজনের সন্দেহ হয়। ঠিক জিজ্ঞাসাবাদ করতে গেলেই বক্তব্যে মেলে অসঙ্গতি। ব্যাগে কি আছে জানতে চাইলে লুকোনোর চেষ্টা হয়। ব্যাগ খুলে দেখা যায়, নোট ভর্তি রয়েছে। কাগজ দেখতে চাইলে, দেখাতে পারেননি কিছুই ওই ব্যক্তি। তারপরই তাকে গ্রেপ্তারের সিদ্ধান্ত নেয় পুলিশ। কয়েকদিন আগেই পোস্তা থানা এলাকা থেকে আরও এক ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল। তার কাছ থেকে ৫০ লক্ষ টাকা পাওয়া গিয়েছিল।

নির্বাচনের আগে বিজেপির জন্য আসছে টাকা দাবি রাজ্যের মন্ত্রী তথা তৃণমূল নেতা জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের। তিনি বলেছেন, বিহার, ঝাড়খন্ড,গুজরাট,মহারাষ্ট্র প্রতিটা রাজ্যে এভাবে আগে থেকে টাকা ঢুকিয়ে ভোট কিনে নেওয়ার চেষ্টা করে এসেছে বিজেপি। গণতন্ত্রের উৎসব নির্বাচন। সেই নির্বাচনে যারা ভোট দেবে তাদের কিনে নেওয়ার চেষ্টা বরাবর তারা করে এসেছে। টাকা দিয়ে মুখ বন্ধ করে দেবার চেষ্টা। এটা বলতে পারি বাংলাতে তাদের এই চেষ্টা বিফল যাবে। তাদের যেকোনও মিটিং এর খরচ দেখেই অবাক হয়ে যাওয়ার মতো।

এই অভিযোগ উড়িয়ে দিয়ে বিজেপি নেতা শমীক ভট্টাচাৰ্য বলেছেন, ‘১৯৮০ সালের পর থেকে যে নির্বাচন হয়েছে সেখানে ২ থেকে শুরু করেছিল বিজেপি। এখন ৩০৩। আইডিওলজিক্যাল ডেইলিউশন না করে অন্য কোন দল না ভাঙিয়ে, দুর্নীতির বিষয়ে সব থেকে সরব ভারতীয় জনতা পার্টি। আঠারোটা সাংসদ রয়েছে। টাকার বিনিময় মানুষ ভোট দিয়ে তাদেরকে সাংসদ বানিয়েছে নাকি? ভোটারদের অসম্মান করছে তৃণমূল কংগ্রেস। টাকা, দুর্নীতি, হাওয়ালা, চিটফান্ডের বিষয় তৃণমূল কংগ্রেসের বক্তব্য রাখার নৈতিক ও রাজনৈতিক অধিকার নেই। বাইরে থেকে টাকা নিয়ে এসে রাজনীতি করার দরকার নেই বিজেপির। আমাদের সর্বভারতীয় দল। আমাদের টাকা রয়েছে। নেতাদের বাড়ি নেই ঠিকই কিন্তু পার্টি অফিসগুলো আমরা বানিয়েছি। তৃণমূল কংগ্রেস হতাশা, ভয় ও বিদায়বেলায় এইসব কথা বলছে। আরও টাকা ধরা পড়বে।’