কলকাতা: জঙ্গি মোকাবিলা থেকে উপকূল নিরাপত্তা— ভারতীয় নৌসেনার নতুন হাতিয়ার ‘ত্রিগুণ’।
নৌসেনার তরফে জানানো হয়েছে, পূর্বে বঙ্গ থেকে শুরু করে পশ্চিমে গুজরাত—এখন ভারতের বিস্তীর্ণ অঞ্চল রক্ষায় ‘ত্রিগুণ’ নামের সফটওয়্যারই ভরসা নৌবাহিনীর।
কী কাজ এই সফটওয়্যারের? জানা গিয়েছে, বঙ্গোপসাগর, আরবসাগর ও ভারত মহাসাগর অঞ্চলে প্রতিদিন কয়েক হাজার নৌকো, জাহাজ চলাচল করে। এর মধ্যে কোনটার উৎস থেকে শুরু করে গন্তব্য কোথায়, তা নখদর্পণে রাখে এই সফটওয়্যার।
শুধু তাই নয়, ‘ত্রিগুণ’-এর মাধ্যমে প্রত্যেকটি জাহাজ বা নৌকা তাদের নিজস্ব ও নির্ধারিত রুট অনুসরণ করছে কি না, তার ওপরও নজর রাখে এই সফটওয়্যার।
এক কথায়, বিমানবাহিনী যেমন রেডারের মাধ্যমে গোটা ভারতের আকাশসীমায় নজরদারি চালায়, ঠিক তেমনই উপগ্রহ চিত্র এবং এই বিশেষ সফটওয়্যারের মাধ্যমে ভারতের জলপথকে নিরাপদ রাখে নৌসেনা।
নৌসেনার নেভাল অফিসার ইন চার্জ (পশ্চিমবঙ্গ) কমোডোর সুপ্রভ কুমার দে জানান, যে কোনও নৌকো বা জাহাজের নিজস্ব এআইএস (অটোমেটেড আইডেন্টিফিকেশন সিস্টেম) রয়েছে। যার মাধ্যমে ওই জলযানের সব তথ্য বাহিনীর কাছে মজুত থাকে। বাহিনী জানে, কোন যান কোথায় যাচ্ছে।
এক কথায়, এআইএস হল অনেকটাই জলযানের জিপিএস-এর মতো। কোনও কারণে, কোনও জলযান নিজস্ব পথ থেকে বিচ্যুতি হলে, বা এমন এআইএস-বিহীন কোনও জলযান খুঁজে পাওয়া গেলে, সঙ্গে সঙ্গে সতর্ক হয় নৌসেনা। ওই যানকে ইন্টারসেপ্ট করা হয়। এক্ষেত্রে তাদের সহায়তা করে উপকূলরক্ষী বাহিনী ও মেরিন পুলিশ।
তবে, অনেক ক্ষেত্রে অন্য দেশের যুদ্ধজাহাজ (পড়তে হবে চিন) ইচ্ছাকৃতভাবে তাদের ‘রেডার সিগনেচার’ গোপন করে রাখে। তখন আকাশপথে মেরিটাইম রিকনিসেন্স (এমআর) বা নজরাদারি বিমানের সাহায্যে ওই জাহাজের গতিবিধির ওপর নজর রাখা হয়।
পাশাপাশি, অবগা নামে আরেকটি সফটওয়্যারও ব্যবহার করে নৌসেনা। এর মাধ্যমে উপকূলবর্তী অঞ্চলের গোটা তথ্য এক ছাতার তলায় চলে আসে। নৌকর্তা জানান, যেমন সুন্দরবন অঞ্চলে কোনও বিশেষ গ্রামে কোনও ঘটনা ঘটে থাকলে, এই বিশেষ সফটওয়্যারের সাহায্য নেওয়া হয়।
সঙ্গে সঙ্গে এই বিশেষ সফটওয়্যার ব্যবহার করে সেখানকার যাবতীয় তথ্য যেমন—বাসিন্দার সংখ্যা, বাড়ির সংখ্যা, থানার তথ্য, পঞ্চায়েত তথ্য, সেখানে যাতায়াতের সমস্ত পথের হদিস এক নিমেষে চলে আসে। শুধু তাই নয়, কী করে ওই জায়গায় দ্রুত পৌঁছনো যায়, সেখানে কী কী প্রাথমিক সাহায্য মিলবে, সেই তথ্যও পেয়ে যায় বাহিনী।