কলকাতা: যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় দ্রুত ‘গণ্ডগোল, বিশৃঙ্খলার আখড়া’ হয়ে উঠছে বলে মন্তব্য করলেন রাজ্যপাল তথা আচার্য কেশরীনাথ ত্রিপাঠি। গতকাল সেখানে একটি সিনেমার প্রদর্শনীকে ঘিরে চরম অশান্তির প্রেক্ষাপটে এহেন কড়া প্রতিক্রিয়া দিলেন তিনি। পিটিআই সূত্রের খবর, যাদবপুরে কঠোর দাওয়াই দরকার বলেও মত প্রকাশ করেছেন ত্রিপাঠি। কর্তৃপক্ষকে কড়া মনোভাব দেখাতে হবে, বলেছেন তিনি।
গতকাল পরিচালক বিবেক অগ্নিহোত্রীর ‘বুদ্ধ ইন এ ট্র্যাফিক জ্যাম’ ছবিটি যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের হলে দেখানোর অনুমতি বাতিল হওয়ার পর সেখানে বিজেপি-র ছাত্র সংগঠন এবিভিপি-র সদস্যদের সঙ্গে সেখানকার পড়ুয়াদের হাতাহাতি, বাকবিতণ্ডা হয়। ছবিটি দেখতে বিশ্ববিদ্যালয় চত্বরে ঢোকা লোকজনের সঙ্গে আসা বহিরাগতরা বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ুয়াদের শ্লীলতাহানি করে বলে অভিযোগ তোলে সেখানকার বামপন্থী অনুগামী ছাত্র সংগঠনগুলির সদস্যরা। বহিরাগত চার জনকে তারা আটকে রেখেছে, তাদের ওপর নির্যাতন চালিয়েছে বলে পাল্টা অভিযোগ তুলে বিশ্ববিদ্যালয়ের গেটে হাজির হন বিজেপি, এবিভিপি, আরএসএসের লোকজন। আটকে থাকা চারজনকে ছাড়াতে যান রূপা গাঙ্গুলিও। এই নিয়ে উত্তেজনা ছড়ায়। চলে আসেন উপাচার্য সুরঞ্জন দাসও। শেষ পর্যন্ত চারজনকে বাইরে বের করে দেন পড়ুয়ারা। দীর্ঘ রাত পর্যন্ত টানটান উত্তেজনা বহাল থাকে।
এ নিয়ে পিটিআইকে প্রতিক্রিয়া দিয়ে রাজ্যপাল বলেন, যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় এককালে ছিল জ্ঞানচর্চা, উত্কর্ষতার কেন্দ্র। কিন্তু দ্রুত তা বিশৃঙ্খলার কেন্দ্র হয়ে উঠছে। এর মোকাবিলায় কঠোর ব্যবস্থা নিতে হবে কর্তৃপক্ষকে।
তবে এ নিয়ে তিনি উপাচার্যের কাছে রিপোর্ট চাওয়ার ব্যাপারে তিনি এখনই কোনও সিদ্ধান্ত নেননি বলে জানান ত্রিপাঠি।
কিন্তু আচার্য যখন কড়া প্রতিক্রিয়া দিচ্ছেন, তখন ছাত্রদের পাশেই দাঁড়িয়েছেন উপাচার্য সুরঞ্জন দাস। উল্টে এফআইআরের পরও কেউ গ্রেফতার না হওয়ায় তিনি চাপ বাড়িয়েছেন পুলিশের ওপর।
তিনি বলেছেন, ছাত্র-ছাত্রীদের প্রটেক্ট করা দায়িত্ব। যা দায়িত্ব পালন করার করেছি। আশা করছি। আইন অনুযায়ী ব্যস্থা হবে। জবাবদিহি করতেই হবে পুলিশকে।
শুধু ছাত্রদের পাশে দাঁড়ানোই নয়, বিশৃঙ্খলার দায় পুরোপুরি আয়োজক সংস্থার ওপরই চাপিয়েছেন উপাচার্য। বলেছেন, তাদের অনুমতি নেওয়া উচিত ছিল।
শনিবার ঘটনা নিয়ে ফোনে উপাচার্যর সঙ্গে ফোনে কথা বলেন আচার্য । ঘটনার রিপোর্টও চেয়েছেন তিনি। উপাচার্য জানিয়েছেন, যা ঘটেছে, তার প্রেক্ষাপটে কী এফআইআর করতে হয়েছে, সবই রিপোর্টে জানানো হবে।
পুলিশ সূত্রে দাবি, যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের তরফে যে অভিযোগ দায়ের হয়েছে, তার প্রেক্ষিতে আধিকারিকদের নিগ্রহ, বেআইনি অনুপ্রবেশ, শ্লীলতাহানি, মারধরের মামলা রুজু হয়েছে।
এফআইআর করেছে কর্তৃপক্ষ। কিন্তু, যাদবপুরকাণ্ডে এখনও অধরা অভিযুক্তরা।
অন্যদিকে, এবিভিপির তরফেও একটি পাল্টা অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। তার প্রেক্ষিতে মারধর, হুমকি, সহ বেশ কিছু ধারায় মামলা রুজু হয়েছে।
এ ব্যাপারে আপনার মতামত জানান নীচের কমেন্টস বক্সে
‘বিশৃঙ্খলার আখড়া’ হয়ে উঠছে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়, 'কঠোর ব্যবস্থা' চান আচার্য, পড়ুয়াদের পাশে উপাচার্য
ওয়েব ডেস্ক, এবিপি আনন্দ
Updated at:
07 May 2016 07:41 AM (IST)
কলকাতা (calcutta) লেটেস্ট খবর এবং আপডেট জানার জন্য দেখুন এবিপি লাইভ। ব্রেকিং নিউজ এবং ডেইলি শিরোনাম দেখতে চোখ রাখুন এবিপি আনন্দ লাইভ টিভিতে ।
- - - - - - - - - Advertisement - - - - - - - - -