কলকাতা: ৪ বছর পরে খাগড়াগড়কাণ্ডের অন্যতম চক্রী বুরহান শেখ গ্রেফতার। কলকাতার মুচিপাড়া থেকে বুরহান শেখকে গ্রেফতার করল কলকাতা পুলিশের এসটিএফ। খাগড়াগড়কাণ্ডের পরই পালিয়ে বেড়াচ্ছিল বাংলাদেশের জঙ্গি সংগঠন জামাত-উল মুজাহিদিনের (জেএমবি) নেতা বুরহান শেখ। পলাতক বুরহানের মাথার দাম ছিল ৩ লক্ষ টাকা। এনআইএর ওয়ান্টেডের তালিকায় ছিল বুরহান। বর্ধমানের মঙ্গলকোটে মাদ্রাসার প্রতিষ্ঠাতা ছিল এই বুরহান। শিমুলিয়ার মাদ্রাসাতেই চলত জঙ্গি প্রশিক্ষণ, মগজ ধোলাই।
২০১৪ সালের ২ অক্টোবর দুর্গাষ্টমীর দিন বিস্ফোরণে কেঁপে ওঠে বর্ধমান জেলার খাগড়াগড়। গৃহস্থ বাড়িতে ভাড়া নিয়ে চুপিসাড়ে সেখানে বম্ব ও রকেট বানানোর সময় আচমকা আইইডি (ইম্প্রোভাইজড এক্সপ্লোজিভ ডিভাইস) বিস্ফোরণ ঘটে। তদন্তে নেমে বাংলাদেশি জঙ্গিগোষ্ঠী জেএমবি-র মডিউল ও স্লিপার সেলের খোঁজ পায় এনআইএ। কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা আরও জানতে পারে যে, শুধু বর্ধমান নয়, এরাজ্যের একাধিক জেলায় জঙ্গিরা ডেরা খুলে রেখেছে।
এই ঘটনার তদন্তে নেমে এক-এক করে এরাজ্যে বর্ধমান, মুর্শিদাবাদ, নদিয়া, মালদা, বীরভূম এবং অসমের বরপেটা, সাহিবগঞ্জ ও ঝাড়খণ্ডের পাকুরে জঙ্গি-নেটওয়ার্কের হদিস পান তদন্তকারীরা। তাঁরা জানান, এরাজ্যের বিভিন্ন জায়গায় অবৈধ মাদ্রাসার আড়ালে সেখানে জেহাদি প্রশিক্ষণ শিবিরও চালাত জেএমবি। সেরকমই জঙ্গি-শিবিরের খোঁজ মেলে মুর্শিদাবাদের বেলডাঙা ও মোকামনগরে, বীরভূমের নানুরে এবং বর্ধমানের খাগড়াগড় ও শিমুলিয়াতে।
ঘটনার প্রায় ৬ মাসের মাথায় আদালতে চার্জশিট পেশ করেছিল এনআইএ। ২০১৫ সালের মার্চ মাসে দায়রা আদালতে ১৬৪ পাতার চার্জশিট পেশ করে এনআইএ। অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে বেআইনি কার্যকলাপ রোধ আইন বা ইউএপিএ-র পাশাপাশি দেশদ্রোহিতা, প্রতারণা-সহ একাধিক ধারায় মামলা রুজু করেছে জাতীয় তদন্তকারী সংস্থা। অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে বিস্ফোরক, অস্ত্র আইনেও মামলা রুজু হয়।