কলকাতা: পাড়ায় শাক-সবজি কিনতে বেরিয়েছিলেন এক ব্যক্তি। আচমকা একটি বাড়ির বারান্দা থেকে মাথার উপর এসে পড়ল একটি বাছুর। তার ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয়েছে। মারাত্মক জখম হয়ে ন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি আবদুল মান্নান (৪৩) নামে ওই ব্যক্তি। তাঁর পা, পাঁজর ভেঙে গিয়েছে। মাথাতেও চোট লেগেছে। ঘটনাটি কলকাতার তিলজলার মসজিদ বাড়ি লেনে। তবে পুলিশে অভিযোগ দায়ের হয়নি।

স্থানীয় বাসিন্দারা জানিয়েছেন, প্রায় চার দশক আগে কলকাতা শহরে খাটাল নিষিদ্ধ হয়ে গেলেও, তিলজলা ও তপসিয়া অঞ্চলে বেশ কয়েকটি বেআইনি খাটাল আছে। অনেকেই বাড়িতে গরু-বাছুর রাখেন। সেভাবেই একটি চারতলা বাড়ির বারান্দায় গত সপ্তাহ থেকে বাছুরটিকে বেঁধে রাখা হয়েছিল। ওই বাড়ির এক ভাড়াটে বাছুরটিকে এনেছিলেন। তার বয়স ৬ মাস। ওজন ৮৫ কেজি। তাকে খড় দেওয়া হত। তার দেখভালের জন্য একটি ছেলেকেও রাখা হয়েছিল। রবিবার সকালে বাছুরটিকে চান করানো হয়। এরপরেই সে ছোটাছুটি শুরু করে দেয়। দড়ি ছিঁড়ে ৭০ ফুট উপর থেকে মান্নানের উপর গিয়ে পড়ে। রক্তাক্ত অবস্থায় মান্নানকে প্রথমে স্থানীয় একটি নার্সিংহোমে নিয়ে যাওয়া হয়। পরে ন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজে নিয়ে যাওয়া হয়।

মান্নান বলেছেন, ‘আমি এক সবজিওয়ালার কাছে ঝুঁকে পড়ে শশা কিনছিলাম। সেই সময়ই ভারী একটা বস্তু আমার উপর এসে পড়ে। মাটিতে পড়ে যাওয়ার পর বুঝতে পারি, আমার উপর বাছুর এসে পড়েছে। এরপরেই আমি অজ্ঞান হয়ে যাই।’ মান্নানের স্ত্রী সীমা বেগম বলেছেন, ‘মাথার উপর একটি বাছুর পড়ে আমার স্বামী জখম হয়েছেন, এটা ভাবতেই পারছি না। ঈশ্বরের আশীর্বাদে তিনি বেঁচে আছেন। পা ভাঙা, পাঁজরে চিড় ধরা ছাড়াও মাথার পিছন দিকে চোট লেগেছে। এছাড়া শরীরের বিভিন্ন অংশে চোট। ১৮টি সেলাই পড়েছে।’

যে বাড়ির বারান্দা থেকে মান্নানের উপর বাছুরটি এসে পড়েছিল, সেই বাড়ির মালিক অঞ্জুম আলম বলেছেন, তাঁর এক ভাড়াটে দু মাস আগে বাড়ি ছেড়ে দিলেও, সবার অজ্ঞাতসারে বারান্দায় ওই বাছুরটিকে রেখে দিয়েছিলেন। সেই ব্যক্তির খোঁজ করা হচ্ছে। মান্নানের চিকিৎসার যাবতীয় খরচ তিনিই বহন করবেন বলে জানিয়েছেন আলম।