কলকাতা: ভোটের আগের দিন জেলবন্দি মদন মিত্রকে এসএসকেএমে ভর্তি করাতে উদ্যোগ। আড়ালে বসে ভোট পরিচালনার ছক, অভিযোগ বিরোধীদের। ভর্তির দরকার নেই, জেলে গিয়ে মদনের স্বাস্থ্য পরীক্ষার পর জানাল এসএসকেএমের মেডিক্যাল বোর্ড।
জেলের সামনে অনুগামীরা ভিড় জমিয়েছিলেন। বেলঘরিয়া থেকে অ্যাম্বুল্যান্সও এসে গিয়েছিল। সেজে উঠেছিল এসএসকেএমের উডবার্ন ওয়ার্ডের ২১ নম্বর কেবিনও। এমনকী, এম জি মিত্রর নামে টিকিটও বুক করা হল জরুরি বিভাগে।
কিন্তু সব ব্যবস্থাই সার। ভোটের আগের দিন তাতেও বদলাল না মদন মিত্রর অস্থায়ী ঠিকানা। তাঁকে থেকে যেতে হল সেই আলিপুর সেন্ট্রাল জেলেই!
জেল সূত্রে খবর, রবিবার সকাল পর্যন্তও মন্দির ওয়ার্ডের বন্দি মদন মিত্রর অসুস্থতা নিয়ে কোনরকম তথ্য ছিল না কর্মরত কারারক্ষীদের কাছে! জেল আধিকারিকদের তৎপরতা দেখে বিষয়টি জানতে পারেন তাঁরা।
জেল কর্তৃপক্ষের তরফে বার্তা পেয়ে, দুপুরে জেলে যান এসএসকেএমের কার্ডিওলজিস্ট, চেস্ট, এন্ডোক্রেনোলজি, মেডিসিন বিভাগের বিশেষজ্ঞরা। সূত্রের খবর, তাঁরা জানান, এসএসকেএমে স্থানান্তর করার মতো অসুস্থ নন মদন মিত্র। এতেই কার্যত ভেস্তে যায় মদন-অনুগামীদের সমস্ত তৎপরতা!

বিরোধীদের অভিযোগ, কামারহাটির ভোট করানোর জন্য মদনকে জেলের বাইরে নিয়ে যাওয়ার পরিকল্পনা তৈরিই ছিল তৃণমূলের। সেইমতো তৈরি হয় অসুস্থতার চিত্রনাট্য! এসএসকেএমে নিয়ে যাওয়ার জন্য সবরকম প্রস্তুতি সেরে রাখা হয়।
কিন্তু সংবাদমাধ্যমে খবর সম্প্রচারের পর বিষয়টি নিয়ে হইচই পড়ে যায় নানা মহলে! আর তাতেই ভেস্তে যায় মদনের ঠিকানা-বদলের ছক!
যদিও আলিপুর জেল কর্তৃপক্ষের তরফে জানানো হয়েছে, রবিবার সকাল থেকেই মদন মিত্রর অসুস্থতা লক্ষ্য করা যাচ্ছিল। পরীক্ষা করে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে বলেন জেলের চিকিৎসক।
এসএসকেএম সূত্রে খবর, পরীক্ষার পর এসএসকেএমের চিকিৎসকরা মনে করেননি, মদনকে স্থানান্তরের প্রয়োজন রয়েছে। যদিও দিনভর নাটকের শেষে আলিপুর জেলের সুপারের দাবি,
মদন মিত্রর সঙ্গে ব্যক্তিগতভাবে কথা বলেছিলাম। তিনি জেলেই চিকিৎসা করাতে ইচ্ছুক।
যদিও, জেল সূত্রে খবর, মদন মিত্রকে এসএসকেএমে পাঠানোর নির্দেশ পেয়ে এদিন দুপুরে তড়িঘড়ি জেলে হাজির হন জেল সুপার। কিন্তু, পরিস্থিতি বেগতিক দেখে সতর্ক হয়ে যান তিনি।
জেল সুপারের মন্তব্য নিয়ে মদন মিত্রর আগের হাসপাতাল-যাপনর প্রসঙ্গ টানছে বিরোধীরা। তাদের দাবি, অতীতেও জেল হেফাজতে থাকাকালীন অসুস্থতার ভান করে মদন মিত্র বেশিরভাগ সময়টাই কাটিয়েছেন সরকারি সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালের ভিভিআইপি কেবিনে!
যা নিয়ে বিতর্ক কিছু কম হয়নি। ভোটের আগের দিনও সারদাকাণ্ডে জেলবন্দি কামারহাটির তৃণমূল প্রার্থীকে ঘিরে দানা বাঁধল নয়া বিতর্ক। তবে এবার আর উদ্যোগ সাফল্যের মুখ দেখল না! কটাক্ষ বিরোধীদের।