কলকাতা: বাড়িতে আপনার ছেলে বা মেয়ে যদি আপনার সামনেই সিদ্ধ মাশরুমে মাখন লাগিয়ে পাঁউরুটির সঙ্গে খায়, আপনার চোখে কি কিছু অস্বাভাবিক ঠেকবে? আপনার কি কখনও মনে হবে, সে মাদক নিচ্ছে? নিশ্চয় না! কিন্তু, জেনে রাখুন, এমনটা হওয়া অসম্ভব নয়।
নারকোটিক কন্ট্রোল ব্যুরো সূত্রে দাবি, কলকাতার আনাচে কানাচে এখন এমনই সব মাদক ছড়িয়ে পড়ছে, যা সকলের মধ্যে বসে নেওয়া যায়। আপনার পাশে বসে কেউ এসব মাদক নিলে আপনি টেরও পাবেন না। তাতে বেরোয় ধোঁয়া, না আছে গন্ধ। একেবারে সাধারণ খাবারের মতো। অথচ, রক্তে মিশলেই নেশায় বুঁদ! কিছু কিছু মাদক তো এমনও রয়েছে, যা নিলে ঘোর থেকে যায় তিনদিন পর্যন্ত!
এমনই এক মাদক হল ‘ম্যাজিক মাশরুম’। যা হেরোইন, ব্রাউন সুগার এমনকী এলএসডি-র থেকেও মারাত্মক! ইনস্টিটিউ অফ সাইকিয়াট্রির অধিকর্তা প্রদীপ সাহা বলেন, প্রাথমিকভাবে দীর্ঘদিন নিলে হাঁটাচলার সমস্যা হবে। একা থাকার চেষ্টা করবে। পরবর্তীকালে ঘুম কমে যাবে। খিদে কমে যাবে। তার থেকে অন্য রোগ ধরবে। বড় রোগ হলে মৃত্যু।
পোশাকি নাম ম্যাজিক মাশরুম ঠিকই। তবে মাদক কারবারিদের কাছে এর ডাকনাম ‘হাসনেওয়ালা ড্রাগ’। কারণ এই মাদক রক্তে মিশলে নাকি শুধুই হাসি পায়। এনসিবি সূত্রে দাবি, এটি বিশেষ ধরনের ছত্রাক। এর মধ্যে থাকে সাইলেসাইবিন, সাইলোসাইন বা বেয়োসিসটিন জাতীয় যৌগ, যার থেকে নেশা হয়।
ম্যাজিক মাশরুম নামে এই মাদক দেখতে একেবারে মাশরুমের মতোই। এটি নেওয়ার উপায় একেবারে সাধারণ খাবারের মতো। গরম জলে সিদ্ধ করে মাখন মাখিয়ে কিংবা চকোলেট সসে ডুবিয়ে তা খাওয়া যায়। তারপরই শরীর ও মন জুড়ে ছড়িয়ে পড়ে ‘হ্যালুসিনোজিক এফেক্ট’ বা মাদকতার প্রভাব। প্রদীপ সাহা বলেন, যে জগৎ চান, সেখানে চলে যান। সেখানেই থাকতে ভালবাসেন। ম্যাজিক মাশরুম সঙ্গে থাকলে কেউ বুঝতে পারবে না, নেশার জিনিস। সঙ্গে রাখা সহজ ব্যাপার।
নেশার খপ্পড়ে পড়ে অঙ্কুরেই নষ্ট হয়ে যাচ্ছে বহু জীবন। খালি হয়ে যাচ্ছে অনেক মা-বাবার কোল। বিশেষজ্ঞদের মতে, মাদকের রমরমা রুখতে গোয়েন্দাদের যেমন নজরদারি বাড়াতে হবে, তেমনই সচেতনতাও অত্যন্ত জরুরি।