কলকাতা: সিবিআই যখন নারদকাণ্ডে অভিযুক্তদের জিজ্ঞাসাবাদের প্রস্তুতি নিচ্ছে বলে সূত্রের দাবি, তখন তৃণমূলের সাংগঠনিক নির্বাচনের মঞ্চ থেকে তাঁদের পাশে দাঁড়ালেন খোদ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। নারদকাণ্ডে যাদের বিরুদ্ধে সিবিআই এফআইআর করেছে, এদিন মঞ্চে দাঁড় করিয়ে তাঁদের পাশে থাকার বার্তা দেন তৃণমূলনেত্রী। তিনি বলেন, 'কেউ ভয় পাবেন না। কোন ১৩ জনের বিরুদ্ধে এফআইআর হয়েছে দাঁড়ান। কেস হলে মিথ্যে প্রমাণিত হবে।'

অভিযুক্তদের পাশে মুখ্যমন্ত্রীর দাঁড়ানো নিয়ে প্রশ্ন তুলছে বিরোধীরা। প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী বলেছেন, তদন্ত চলাকালীন মুখ্যমন্ত্রীর এধরনের মন্তব্য সমীচীন নয়। সিপিএম রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য সুজন চক্রবর্তী বলেছেন, মুখ্যমন্ত্রী যাদের পাশে দাঁড়াচ্ছেন, তাঁরা সকলেই জেলে যাবে।

তবে শুধু নারদকাণ্ডই নয়, এদিন সারদা এবং রোজভ্যালিকাণ্ডে অভিযুক্ত নেতাদেরও পাশে দাঁড়াতে দেখা গিয়েছে মমতাকে। কখনও তাঁর মুখে উঠে এসেছে রোজভ্যালিকাণ্ডে জেল হেফাজতে থাকা তৃণমূল সাংসদ সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়ের কথা। আবার কখনও সারদাকাণ্ডে অভিযুক্ত প্রাক্তন মন্ত্রী মদন মিত্রর কথা। তৃণমূলনেত্রী বলেছেন, সুদীপকে কেন জেলে ভরল? নোট বাতিল নিয়ে বলেছে বলে? মদন এখানে বসে আছে। কী দোষ? কার সঙ্গে নাকি মিটিংয়ে দেখা গিয়েছে।

পাল্টা কটাক্ষ ছুড়ে দিয়েছে বিজেপি। রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ বলেছেন,  সুদীপের জেল বাংলার রাজনীতির জন্য লজ্জার। সুস্বাস্থ্য কামনা করি। চাই অভিযোগমুক্ত হয়ে আসুন। দুর্নীতির জন্য মানুষের থেকে দূরে সরে যাচ্ছে। তৃণমূলনেত্রী অবশ্য রাজনৈতিক প্রতিহিংসার অভিযোগেই অনড়। তাঁর দাবি, রাজনীতির নামে জুলুম চলছে। আমরা মানুষের কথা বলি বলে আমাদের ওপর অত্যাচার। ভয় পাই না। হামসে জো টকরায়েগা, চুর চুর হো জায়েগা।

সম্প্রতি কলিঙ্গে বসে বঙ্গ দখলের ডাক দিয়েছেন মোদি-অমিত শাহরা। শুক্রবার পাল্টা হুঁশিয়ারি শোনা গিয়েছে মমতার গলায়। নারদকাণ্ডে সিবিআই এফআইআর দায়ের করার পর থেকেই তৃণমূল-বিজেপি তরজা তুঙ্গে। আগামীদিনে তদন্ত যত এগোবে, বাগযুদ্ধের পারদও তত চড়বে বলেই মত পর্যবেক্ষকদের।