প্রকাশ সিন্হা, কলকাতা: গরু পাচার চক্রের বিপুল অঙ্কের টাকা কি সন্ত্রাসবাদীদের হাতে যাচ্ছে? তারই রহস্যভেদে দেশজুড়ে তল্লাশি অভিযানে নেমেছে সিবিআই। কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থার নজরে এনামুল হক নামে কলকাতার এক ব্যবসায়ী। এনামুলের অবশ্য দাবি, তিনি কোনও অনিয়মের সঙ্গে জড়িত নন।
আল কায়দা জঙ্গি সন্দেহে এরাজ্য থেকে ছ’জনের গ্রেফতারি ঘিরে যখন তোলপাড় চলছে, তখনই গরু পাচার চক্রের বিরুদ্ধে ম্যারাথন অভিযান শুরু করল সিবিআই। একদিনে পশ্চিমবঙ্গের ১৫টি জায়গায় চলল ম্যারাথন তল্লাশি। পাশাপাশি তল্লাশি চলল দেশজুড়ে!!
জঙ্গি সন্দেহে গ্রেফতারির কয়েকদিনের গরু পাচার চক্রের বিরুদ্ধে অভিযান দেখে অনেকেই প্রশ্ন তুলছেন, তাহলে কি দুইয়ের মধ্যে কোনও সম্পর্ক আছে? সিবিআই সূত্রের দাবি, সীমান্তে বেআইনি অর্থনীতির চাকা ঘোরাতে সাহায্য করে গরু পাচারের বিপুল টাকা! ঘুরপথে সেই টাকার একটা বড় অংশ পৌঁছে যায় জঙ্গিদের হাতে!!
টাকার অঙ্কটাও চোখ কপালে তোলার মতো। সূত্রের দাবি,প্রতি বছর ভারত-বাংলাদেশ সীমান্ত দিয়ে গরু পাচারে অন্তত ১০০ কোটি টাকার ব্যবসা হয়!
উত্তাল নদী হোক...কিংবা সীমান্তে কাঁটাতার বর্জিত অংশ...সেখান দিয়েই পার হয়ে যায় গরু...পার হয়ে যায় আরও অনেক কিছুই।আর পাচার হওয়া গরুর বদলে সীমান্ত পেরিয়ে বাংলায় ঢোকে বিপুল টাকা....বেআইনি সোনা আর আগ্নেয়াস্ত্র!


গোয়েন্দা সূত্রে দাবি, এই টাকা এবং অস্ত্রই ঘুরপথে পৌঁছোয় জেএমবি জঙ্গিদের হাতে। টেরর ফান্ডিংয়ের উৎস কি সেটাই?

বুধবার সকাল থেকে সিবিআইয়ের ১১০ জন অফিসার, দলে দলে ভাগ হয়ে রাজ্যের ১৫টি জায়গায় তল্লাশি চালান।
এই তালিকায় যেমন মুর্শিদাবাদের বহরমপুর, লালগোলা ও জঙ্গিপুর আছে,তেমনই আছে ভারতের চিকেন নেক শিলিগুড়ি,আছে উত্তর ২৪ পরগনার বিস্তীর্ণ এলাকা এবং কলকাতাও!
সিবিআই সূত্রের খবর, গরু পাচার নিয়ে গত কয়েকমাস ধরেই তাঁরা তদন্ত চালাচ্ছিলেন। বিভিন্ন সূত্র ধরে তাঁদের হাতে আসে কলকাতার এক ব্যবসায়ীর তথ্য!যাঁর নাম এনামুল শেখ।তপসিয়ায় বিরাট বাড়ি...ঝাঁ চকচকে অফিস এনামুল শেখের। এদিন সেখানেই হানা দেন সিবিআই অফিসারেরা।
সিবিআই সূত্রে দাবি, সামনে অনেক রকমের ব্যবসার চাদর দিয়ে ঢাকা এনামুলের গোপন কারবার!অর্থাৎ গরু পাচার!
গোয়েন্দাদের দাবি, গোটা রাজ্যের গরু পাচার চক্রের চক্র কন্ট্রোল করে এনামুলই!যদিও, অভিযুক্ত এনামুল এসব অভিযোগ খারিজ করে দিয়েছেন।

তবে সন্দেহভাজন আল কায়দা জঙ্গিদের গ্রেফতারির পর গরু পাচার চক্রের তদন্তে যথেষ্ট জোর দিচ্ছে সিবিআই। গরু পাচারের টাকা কীভাবে জঙ্গিদের হাতে যেত, খতিয়ে দেখা হচ্ছে তা-ও।