কলকাতা: শুধু তামিলনাড়ু আর পশ্চিমবঙ্গই নয়, সিআইডি-র হাতে ধৃত মুসার সঙ্গে দিল্লি ও কাশ্মীরের আইএস জঙ্গি মডিউলেরও যোগাযোগ ছিল। ২০১৫ সালে দিল্লি ও কাশ্মীরে গিয়েছিল সে। রীতিমতো এক মাস করে বাড়ি ভাড়া নিয়ে মুসা ছিল ওই দুই রাজ্যে। মুসাকে টানা জেরায় এমনই চাঞ্চল্যকর তথ্য মিলেছে।


মুসার কাছ থেকে পাওয়া গিয়েছে কাশ্মীর ও দিল্লির বেশ কয়েকজন সন্দেহভাজনের নাম ও মোবাইল নম্বর। সিআইডি, এনআইএ এবং কেন্দ্রীয় গোয়েন্দারা একযোগে ওইসব সন্দেহভাজনদের চিহ্নিত করার কাজে নেমেছেন। মুসার গতিবিধি যে নানা রাজ্যে ছড়িয়েছিল, তা জানতে পেরে গোয়েন্দারা রীতিমতো উদ্বিগ্ন।
জেরার মুখে অনর্গল ইংরেজিতে কথা বলতে পারদর্শী মুসা কাশ্মীর ও দিল্লিতে গিয়ে কারও সঙ্গেই বিশেষ যোগাযোগ করেনি বললেও গোয়েন্দারা তা বিশ্বাস করছেন না।

গোয়েন্দাদের মতে, নির্দিষ্টভাবে সিরিয়ার নির্দেশেই মুসা ওই দুই জায়গায় গিয়েছিল আইএস মডিউলগুলিকে সক্রিয় এবং সদস্য জঙ্গিদের আরও উদ্বুদ্ধ করার কাজে।

শুধু তাই নয়, গোয়েন্দাদের আশঙ্কা, মুসা দিল্লি ও কাশ্মীরের মডিউলগুলির নাশকতা চালানোর পরিকল্পনা সম্পর্কেও অবগত। জেরায় মুসার কাছ থেকে সেগুলি জানাই এখন গোয়েন্দাদের কাছে বড় চ্যালেঞ্জ।

সূত্রের খবর, দেশ জুড়ে বিভিন্ন রাজ্যের বড় শহরগুলিতে অনেকদিন থেকেই আইএসআইএস হামলা চালানো, অস্থিরতা তৈরির চেষ্টা করছে। সেই কারণেই ইন্ডিয়ান মুজাহিদিন, জৈয়শ-এ-মহম্মদ এমনকি আল-কায়েদার মতো জঙ্গি সংগঠগুলির সঙ্গে একসময়ে যুক্ত ছিল এমন যুবকদের দিয়েই আইএসআইএস নানা জায়গায় মডিউল তৈরির কাজ চালাচ্ছে। প্রসঙ্গত,

আইএস-র শীর্ষ নেতা এবং ভারতে যাবতীয় জেহাদি মডিউল তৈরির দায়িত্বপ্রাপ্ত শফি আরমার নিজেই কর্ণাটের ভাটকলের বাসিন্দা এবং প্রাক্তন আইএম জঙ্গি নেতা।

গোয়েন্দাদের আশঙ্কা, সেই কারণেই শফি আরমার ওরফে ইউসুফ নতুন যুবকদের দলে টানার পাশাপাশি, তার পুরনো জঙ্গি যোগাযোগকেও ভারত জুড়ে মডিউল নেটওয়ার্ক ছড়ানোর কাজে লাগাচ্ছে।

গোয়েন্দাদের আশঙ্কা যে অমূলক নয়, তার প্রমাণ গত ৬ মাসে দিল্লি পুলিশ আইএস মডিউলের সক্রিয় জঙ্গি সন্দেহে ৮ জনকে গ্রেফতার করেছে। বহু সন্দেহভাজনকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদও চালাচ্ছে দিল্লি পুলিশের জঙ্গি দমন শাখার গোয়েন্দারা। সিআইডি সূত্রে খবর,

কেন্দ্রীয় গোয়েন্দাদের সাহায্য নিয়ে মুসার কাছ থেকে পাওয়া সন্দেহভাজনদের যেমন চিহ্নিত করার চেষ্টা চলছে, তেমনই দিল্লি ও কাশ্মীরে সাম্প্রতিক অতীতে আইএস সন্দেহে যারা গ্রেফতার হয়েছে, তাদের ছবি ও তথ্য আনিয়ে মুসাকেও দেখানোর তোড়জোড় চলছে।

সবমিলিয়ে বলা যেতে পারে, দেশ জুড়ে আইএস জঙ্গিদের বর্তমান গতিবিধি জানতে কেন্দ্র ও রাজ্যের গোয়েন্দাদের কাছে মুসাই এখন তুরুপের তাস।