বৃহস্পতিবার কলকাতায় এক অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করার ফাঁকে এই কথা জানালেন দেশের প্রতিরক্ষা গবেষণা সংস্থা (ডিআরডিও)-র ডিরেক্টর জেনারেল তথা ডিপার্টমেন্ট অফ ডিফেন্স (আর অ্যান্ড ডি)-এর সচিব ডঃ এস ক্রিক্টোফার।
তিনি জানান, ‘বরুণাস্ত্র’ নামের এই হেভি ইলেকট্রিক্যাল টর্পেডোর নকশা তৈরি করেছে ডিআরডিও-র অধীনে থাকা বিশাখাপত্তনমের নেভাল সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজিক্যাল ল্যাবোরেটরি (এনএসটিএল)। আর টর্পেডোটির নির্মাণ করেছে ভারত ডায়নামিক্স লিমিটেড (বিডিএল)।
বেশ কয়েক বছর ধরেই দেশীয় টর্পেডো নির্মাণ করার গবেষণা চালাচ্ছে ডিআরডিও। যার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল এনএসটিএল-এর ওপর। প্রসঙ্গত, নৌসেনার ব্যবহারযোগ্য বিভিন্ন অস্ত্র নিয়েই প্রধানত গবেষণা চালিয়ে থাকে এনএসটিএল। জলের নীচ দিয়ে চলতে পারা অস্ত্র এবং প্রযুক্তি সংক্রান্ত গবেষণায় এই প্রতিষ্ঠানের সুখ্যাতি রয়েছে।
এই টর্পেডোর গবেষণায় প্রধান ছিলেন বিজ্ঞানী আব্রাহাম ভার্গিজ, যাঁকে সকলেই বিজ্ঞানী ‘জি’ নামেই চেনেন। ডিআরডিও সূত্রে খবর, ৮-মিটার দৈর্ঘ্যের অত্যাধুনিক প্রযুক্তি দিয়ে তৈরি হওয়া এই টর্পেডো উচ্চপ্রযুক্তিসম্পন্ন সফটওয়্যার দ্বারা চালিত। ‘বরুণাস্ত্র’-র বিশেষত্ব হল, এটি শত্রু সাবমেরিনকে খুঁজে বের করে ধ্বংস করতে সক্ষম। এটি ২৫০ কেজি বিস্ফোরক বহনে সক্ষম।
জানা গিয়েছে, সম্প্রতিই এই টর্পেডোর একাধিকবার সফল পরীক্ষা চালিয়েছে নৌসেনা। ‘ইউজার-ট্রায়াল’ বা কার্যকারিতা পরীক্ষায় সফলভাবে উত্তীর্ণ হওয়ার পরই নৌসেনায় অন্তর্ভুক্ত করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। টর্পেডোর বরাত দেওয়া হবে বিডিএল-কেই।
এখানে বলে রাখা প্রয়োজন, আগামী ১০ বছরে ভারতীয় নৌসেনার প্রচুর পরিমাণ টর্পেডোর প্রয়োজন পড়বে। কারণ, নতুন রণনীতি অনুসারে, ভারত সাবমেরিন সংখ্যা বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত নিয়েছে। ইতিমধ্যেই ৬টি স্করপিন শ্রেণির সাবমেরিনের কাজ প্রায় শেষ।
পাশাপাশি, শুরু হচ্ছে ‘প্রজেক্ট ৭৫ আই’-র আওতায় থাকা ৬টি সাবমেরিনের নির্মাণ। এছাড়া, বাহিনীতে চার থেকে ছয়টি পরমাণু-শক্তিচালিত সাবমেরিনকে অন্তর্ভুক্ত করার সিদ্ধান্তও নেওয়া হয়েছে। সব মিলিয়ে ৫০০-৬০০ টর্পেডোর প্রয়োজন নৌসেনার।
বিদেশ থেকে টর্পেডো আমদানি করতে বিপুল পরিমাণ খরচ। তাই নিজস্ব টর্পেডো থাকলে, আখেরে লাভ ভারতেরই।