কলকাতা: পাক গুপ্তচর সংস্থা আইএসআই-র মদতে দেশ জুড়ে জাল নোট ছড়িয়ে দেওয়ার চক্রের চার পাণ্ডার বিরুদ্ধে চার্জশিট দিল এনআইএ। জাতীয় তদন্তকারী সংস্থার দাবি, জাল নোট পাচারকারীরা সন্ত্রাসের কাজেও জড়িত। উদ্ধার কোটি টাকারও বেশি জাল নোট।
পাকিস্তান থেকে বাংলাদেশ হয়ে বাংলা। অথবা পাকিস্তান থেকে নেপাল, বিহারের রক্সৌল হয়ে ভারত। এই দুই পথেই কোটি কোটি টাকার জাল নোট ঢুকছে ভারতে এবং তা ছড়িয়ে পড়ছে বিভিন্ন রাজ্যে। পাশাপাশি, দেশ জুড়ে সন্ত্রাসের বীজ বপনেও সক্রিয় পাক মডিউলের মাথারা।
বছর খানেক আগে জাল নোটের কারবারের তদন্তে নেমে এমনই চাঞ্চল্যকর তথ্য উঠে আসে এনআইএ-র হাতে। ২০১৫ সালের মে মাসে মালদায় গোয়েন্দারা গ্রেফতার করেন হরিয়ানার আম্বালাপ বাসিন্দা সুরেশ কুমার এবং পঞ্চাবের ফতেগড় শাহিব-র বাসিন্দা রাজেন চোপড়াকে।
গত বছরের নভেম্বরে নগর দায়রা আদালতে ওই দু’জনের বিরুদ্ধে চার্শজিট দেয় এনআইএ। পরে মালদা থেকেই ধরা হয় আমিরুল শেখ, জাহিরুল শেখ ও আলম শেখ নামে তিনজনকে। ফেরার মাস্টারমাইন্ড অসীম সাহা। মঙ্গলবার এই চার জনের বিরুদ্ধে নগর দায়রা আদালতে সাপ্লিমেন্টারি চার্জশিট জমা দিল এনআইএ। তদন্তকারী সংস্থা তরফের আইনজীবী তমাল মুখোপাধ্যায় বলেন, সন্ত্রাসদমন আইন ধারায় মামলা দায়ের হয়েছে।
এনআইএ-র দাবি, পশ্চিমবঙ্গ থেকে জাল নোট মহারাষ্ট্র, গুজরাত দিল্লি, বেঙ্গালুরু সহ বিভিন্ন রাজ্যে ছড়িয়ে দিচ্ছে ওই দুষ্কৃতীরা। চার্জশিটে এনআইএ জানিয়েছে, বাংলাদেশের জাল নোট সরবরাহ চক্রের কাছ থেকে জাল নোট নিয়ে মালদার আলম শেখ সীমান্ত টপকে তা পৌঁছে দিত জাহিরুলের কাছে। মিডলম্যান জাহিরুল তার ক্যুরিয়র আমিরুলকে দিত সেই টাকা। তদন্তে জানা গিয়েছে ঝাড়খণ্ড থেকে চুরি করা মোটর বাইকে চেপে আমিরুল লক্ষ লক্ষ জাল টাকা পৌঁছে দিত মূল রিসিভার অসীম সাহার কাছে। আন্তঃরাজ্য পাচারকারী অসীম তা সুরেশ ও রাজেনের মাধ্যমে পাঠাত ভিন রাজ্যে।
গোয়েন্দাদের উদ্বেগের মূল কারণ, জাল নোট এখন এতটাই উন্নত, যে খালি চোখে দেখে বোঝা তো দূর অস্ত্, হাতে নিয়েও চেনা ক্রমশ দুঃসাধ্য হয়ে উঠছে। সূত্রের খবর, বিদেশ থেকে ভারতের টাকা ছাপানোর সম মানের কাগজ জোগাড়ের উদ্যোগ নিয়েছে আইএসআই। কয়েকটি ক্ষেত্রে সেই উদ্যোগ সফল হোয়ার ফলেই উন্নত মানের জাল নোট ছাপিয়ে বেশি পরিমাণে তা ভারতে ঢোকানোর চেষ্টা চলছে।