কলকাতা:  রানাঘাটে সন্ন্যাসিনী ধর্ষণ মামলায় দোষী সাব্যস্ত ছয়। ধর্ষণে জড়িত নজরুল, বাকি ৫ জন ডাকাতিতে। কাল সাজা ঘোষণা।


এই বাংলায় সিস্টার নিবেদিতা কাজ করে গিয়েছেন, মাদার টেরেসা কাজ করেছেন। সেই বাংলাতেই একজন প্রবীণ সন্ন্যাসিনীকে ধর্ষণের শিকার হতে হয়েছে, সেটা সবার কাছে অত্যন্ত লজ্জার।

রানাঘাটকাণ্ডের রায় ঘোষণা করতে গিয়ে এমনই মন্তব্য করেছেন নগর দায়রা আদালতের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা বিচারক কুমকুম সিংহ। ২ বছরের পুরনো এই মামলায় মঙ্গলবার ৬ জনকে দোষী সাব্যস্ত করল আদালত।

বিচারক বলেন, এটি গণধর্ষণের ঘটনা হিসেবে চিহ্নিত হয়েছিল। সেইভাবেই চার্জগঠন হয়েছিল। কিন্তু গণধর্ষণের ঘটনার প্রমাণ মেলেনি। একজনই বৃদ্ধা সন্ন্যাসিনীকে ধর্ষণ করেছিল। তার নাম নজরুল। ধর্ষণের পাশাপাশি তাকে শ্লীলতাহানি, ডাকাতি, অপরাধমূল ষড়যন্ত্রের ধারায় দোষী সাব্যস্ত করেছেন বিচারক।

শুধু ডাকাতি, অপরাধমূলক ষড়যন্ত্রের ধারায় দোষী সাব্যস্ত করা হয়েছে মিলন সরকার, ওহিদুল ইসলাম ওরফে বাবু, মহম্মদ সেলিম শেখ এবং খালেদুল রহমান ওরফে মিন্টুকে। অপরাধমূলক ষড়যন্ত্র ও দুষ্কৃতীদের আশ্রয়দানের ধারায় দোষী গোপাল সরকার।

২০১৫ সালের ১৪ মার্চ ভোররাতে রানাঘাটের গাঙনাপুর কনভেন্ট স্কুলে ঢুকে লুঠপাটের পাশাপাশি এক বৃদ্ধ সন্ন্যাসিনীকে ধর্ষণের অভিযোগ ওঠে।

ঘটনার পর বেশ কিছুদিন কোনও সূত্র না মেলায় সিবিআইকে দিয়ে তদন্ত করানোর সিদ্ধান্ত নেয় রাজ্য সরকার। এরই মধ্যে টাওয়ার ডাম্পিং প্রযুক্তির সাহায্য নেয় সিআইডি। যে পদ্ধতির সাহায্যে বিশেষ একটি এলাকার নির্দিষ্ট সময়ে কোন কোন মোবাইল ফোন থেকে কী কী কথা হয়েছে, তা খতিয়ে দেখা হয়।

এই পদ্ধতির সাহায্য নিয়ে ৬ জনকে গ্রেফতার করে সিআইডি।

একজন এখনও ফেরার।  ঘটনার ৮৮ দিনের মাথায় চার্জশিট জমা দেয় সিআইডি।

৪২ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ করা হয়। এঁদের মধ্যে মূল সাক্ষী চার জন।

শুধু দেশ নয়, রানাঘাটকাণ্ড নাড়িয়ে দিয়েছিল গোটা বিশ্বকে। গত ৩০ অক্টোবর শেষ হয় সেই সন্ন্যাসিনী ধর্ষণ মামলার শুনানি। ওইদিনই বিচারক জানিয়ে দেন সাত নভেম্বর রায় ঘোষণা করবেন। সেইমতো এদিন দোষী সাব্যস্ত করা হয় ৬ জনকে। দোষী সাব্যস্ত হওয়ার পর ২ জন নিজেদের নির্দোষ বলে দাবি করেছে।