কলকাতা:  নিউআলিপুরে বাড়ির মধ্যেই খুন বৃদ্ধ। লণ্ডভণ্ড ঘর, তছনছ আলমারি, উধাও একটি সুটকেস। শ্বাসরোধ করে লুঠের উদ্দেশ্যেই কি খুন? না কি নেপথ্যে অন্য কোনও কারণ? তৈরি হয়েছে রহস্য।
নিউআলিপুরের ‘ও’ ব্লকের বাসিন্দা, বছর বিরাশির মলয়কুমার মুখোপাধ্যায় বাড়ির দোতলায় একাই থাকতেন। তিন তলায় সন্তান ও স্ত্রীকে নিয়ে থাকেন ছেলে শুভাশিস মুখোপাধ্যায়(৫০)। বার্ধক্যজনিত অসুস্থতার কারণে মলয়কুমার মুখোপাধ্যায়ের দেখভালের জন্য ২৪ ঘণ্টাই আয়া থাকেন।
শনিবার, রাত আটটা থেকে সকাল আটটার ডিউটিতে ছিলেন কবিতা দাস নামে এক প্রৌঢ়া। রাত সাড়ে ১১টা নাগাদ তিনি বৃদ্ধকে খাইয়ে ঘুম পাড়িয়ে দেন। তারপর নিজেও ঘরের সামনের বারান্দায় শুয়ে পড়েন।



রবিবার সকাল সাড়ে ৬ টানা নাগাদ বৃদ্ধের ঘরে ঢুকে তিনি আঁতকে ওঠেন। দেখেন, রক্তাক্ত অবস্থায় বিছানায় বৃদ্ধের দেহ পড়ে।
কিন্তু, এ কাণ্ড কারা ঘটাল? এ নিয়েই তৈরি হয়েছে রহস্য। সূত্রের খবর, পুলিশের প্রাথমিক তদন্তে অনুমান, দুষ্কৃতীরা প্রথমে এই বাড়ির পিছনের দিকে লোহার সিড়ি দিয়ে দোতলায় ওঠে। সেখানে বারান্দার জাল কেটে ভিতরে ঢোকার চেষ্টা করলেও পারেনি। তখন পিছনের দরজার লক ভেঙে বাড়ির দোতলায় উঠে যায়। এই দোতলায় বৃদ্ধের ঘরের দরজা সাধারণত খোলাই থাকে। সেই ঘরে ঢুকে আলমারি তছনছ করে দুষ্কৃতীরা। ঘর লণ্ডভণ্ড করে দেয়।



পুলিশের অনুমান দুষ্কৃতীদের সঙ্গে বৃদ্ধের ধস্তাধস্তিও হয়ে থাকতে পারে। শেষমেশ বৃদ্ধকে খুন করে দুষ্কৃতীরা চম্পট দেয়। লুঠের উদ্দেশ্যেই কি তা হলে বৃদ্ধকে খুন করা হল? বৃদ্ধের ঘর থেকে একটি সুটকেস বেপাত্তা। কী ছিল সেই সুটকেসে? টাকা-পয়সা? না কি গুরুত্বপূর্ণ কোনও নথি?
তদন্ত করে দেখছে পুলিশ। পাশাপাশি, এই প্রশ্নও উঠছে, যে একজন বৃদ্ধকে ঘরে ঢুকে খুন করা হল, অথচ বাড়ির কেউ কিচ্ছু টের পেলেন না? শনিবার রাতে বৃদ্ধের দেখভালের দায়িত্বে থাকা মহিলাকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে পুলিশ। জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে তাঁর ছেলেকেও। এ ভাবে খুনের ঘটনায় এলাকার বাসিন্দারা রীতিমতো আতঙ্কে।
সূত্রের খবর, আরও একটি বিষয় পুলিশকে ভাবাচ্ছে। দুষ্কৃতীরা কি বৃদ্ধকে টার্গেট করেই বাড়িতে ঢুকেছিল? না হলে অন্য কোনও ঘরে কেন তারা ঢুকল না? বেছে বেছে কেন দোতলায় বৃদ্ধের ঘরেই ঢুকল? তা হলে কি পরিচিত কারও হাত থাকতে পারে? এই সব বিষয়ই খতিয়ে দেখছেন তদন্তকারীরা।