কলকাতা: নেতাজির স্মৃতি বিজড়িত শিশির বসুর বাড়িতে সিন্ডিকেটের তোলাবাজির অভিযোগ। ৬ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। এরা প্রত্যেকেই বেলতলার পেয়ারাবাগান এলাকার বাসিন্দা। বাকিদের খোঁজে চলছে তল্লাশি।


পুলিশ সূত্রে খবর, বাড়ি মেরামতির কাজে যুক্ত শ্রমিকরাও বেলতলা এলাকার বাসিন্দা। তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করেই রাজু নামে এক যুবকের হদিশ মেলে। রাজুকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদের পর সন্ধান মেলে আরও ৫ জনের। কার নির্দেশে শিশির বসুর বাড়িতে যায় দুষ্কৃতীরা? এলাকায় আর কোন জায়গায় এরা তোলাবাজি করছিল, তোলার টাকা কার কাছে যেত, তা খতিয়ে দেখছে পুলিশ।



প্রসঙ্গত, নেতাজির ভাইপো শিশির বসুর বাড়িতে গিয়ে তাঁর স্ত্রী কৃষ্ণা বসু এবং ছেলে সুগত বসুকে শাসানোর অভিযোগ উঠেছিল  সিন্ডিকেটের তোলাবাজদের বিরুদ্ধে। ৯০ নম্বর শরৎ বোস রোডের দোতলা বাড়িটি শিশির বসুর। বহু ইতিহাসের সাক্ষী এই বাড়িতে এখন থাকেন সুভাষচন্দ্র বসুর ভ্রাতুষ্পুত্রবধূ অর্থাৎ শিশির বসুর স্ত্রী কৃষ্ণা বসু এবং তাঁর ছেলে সুগত বসু। বাড়ির দোতলা থেকে সম্প্রতি চাঙড় ভেঙে পড়ছিল। তাই শুরু হয় মেরামতির কাজ।

অভিযোগ, সোমবার সকাল সাড়ে দশটা নাগাদ হঠাৎ বাইকে চড়ে বাড়িতে আসে কয়েকজন অপরিচিত যুবক। বেশ কিছুক্ষণ দাঁড়িয়ে থেকে মেরামতির কাজ দেখে চলে যায়।

দুপুর একটা নাগাদ ফের তারা এসে হাজির হয়, আরও বেশি সংখ্যায়। অভিযোগ, এই যুবকরা একেবারে বাড়ির ভিতর ঢুকে আসে। বাড়ির একতলায় তখন বসেছিলেন কৃষ্ণা বসু। ওই যুবকরা কার্যত শাসানির সুরে তাঁর কাছে জানতে চায়, মেরামতির কাজের বরাত কাকে দেওয়া হয়েছে? বালি সিমেন্ট কোথা থেকে নেওয়া হচ্ছে? শুনে হকচকিয়ে যান তৃণমূলের প্রাক্তন সাংসদ কৃষ্ণা বসু। বাড়ি থেকে বেরিয়ে আসেন এক পরিচারকও। তিনি ওই যুবকদের নিরস্ত করতে গিয়ে বলেন, এটা একজন সাংসদের বাড়ি।

কিন্তু, তাতেও ওই যুবকরা দমে যায়নি। উল্টে সুর আরও চড়িয়ে তাঁরা প্রশ্ন করে, বাড়িতে কে আছেন? ডাকো তাঁকে। চিৎকার-চেঁচামেচি শুনে বাড়ির দোতলা থেকে নেমে আসেন তৃণমূল সাংসদ তথা ইতিহাসবিদ সুগত বসু।অভিযোগ, পরিচয় জানার পর তাঁর সঙ্গেও বাকবিতণ্ডা শুরু করে দেয় ওই যুবকরা।

শেষমেশ সুগত বসু ওই যুবকদের নাম জিজ্ঞেস করতে, তারা বাড়ি থেকে বেরিয়ে চম্পট দেয়। সূত্রের দাবি, এই ঘটনার পর কৃষ্ণা বসু তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক তথা কলকাতা দক্ষিণের সাংসদ সুব্রত বক্সীকে ফোন করেন। খবর পেয়ে তাঁদের বাড়িতে যায় পুলিশ।
ওই যুবকরা কারা, তা খতিয়ে দেখতে তদন্ত শুরু হয়েছে। কৃষ্ণা বসু বা সুগত বসু কেউ প্রকাশ্যে এনিয়ে কিছু বলতে না চাইলেও, সূত্রের খবর, ঘনিষ্ঠমহলে আক্ষেপের সুরে বলেছেন, সুভাষচন্দ্র বসুর পরিবার, তার ওপর বাড়িতে একজন প্রাক্তন ও একজন বর্তমান সাংসদ। সেই বাড়িতেই সিন্ডিকেটের তোলাবাজরা এমন নির্ভয়ে চড়াও হলে, সাধারণ মানুষের কী হবে?