কলকাতা: পথ দেখিয়েছেন শোভনা সরকার। আর সেই পথে হেঁটেই আরও এক নজির সৃষ্টিকারী মানবিক সিদ্ধান্তের সাক্ষী রইল কলকাতা। এরও এক ব্রেন ডেথ হওয়া রোগীর অঙ্গদানের সিদ্ধান্ত নিল পরিবার। একের অঙ্গে আবারও জীবন ফিরে পেতে চলেছেন অনেকে।


দমদম ক্যান্টনমেন্টের বাসিন্দা, ৪৯ বছরের সমর চক্রবর্তী দীর্ঘদিন ধরে কিডনির সমস্যায় ভুগছিলেন। দু’টি কিডনিই কার্যত বিকল হয়ে পড়েছিল। চলছিল ডায়ালিসিস। সোমবার রাতে মস্তিষ্ক থেকে রক্তরক্ষণের পর অবস্থার মারাত্মক অবনতি হয়।

মাত্র ৪৯ বছরের সমর চক্রবর্তীর ব্রেন ডেথের খবরে পরিবারে শোকের ছায়া নেমে এসেছে। কিন্তু, নিজেদের চরম শোকের মুহূর্তেও তাঁরা মানবিক বোধ হারিয়ে ফেলেননি। মাসখানেক আগে শোভনা সরকারের দৃষ্টান্ত মাথাতেই ছিল। তৎক্ষণাৎ তাঁরা সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলেন, একের অঙ্গে অনেকে জীবন ফিরে পেলে, তাতে আর দেরি নয়।

চিকিৎসকরাও দেরি করেননি। নাগেরবাজারের নার্সিংহোম থেকে দেহ নিয়ে যাওয়া হয় অ্যাপেলো হাসপাতালে। অঙ্গপ্রত্যঙ্গ প্রতিস্থাপনের উপযোগী রাখতে শুরু হয়ে যায় প্রয়োজনীয় প্রক্রিয়া।

সমর চক্রবর্তীর লিভারটি অ্যাপেলোতেই ভর্তি এক রোগীকে দেওয়া হবে। তাঁর দু’টি কর্নিয়া আলো ফেরাবে দুই দৃষ্টিহীনের চোখে।

একমাস আগে পঞ্চসায়রের বাসিন্দা শোভনা সরকারের ব্রেন ডেথের পর তাঁর অঙ্গদানের সিদ্ধান্ত নেয় পরিবার। শোভনা সরকারের কিডনি ও কর্নিয়ায় জীবন ফিরে পেয়েছেন চারজন। সেই চারজনের মধ্যেই নতুন করে বেঁচে উঠেছেন শোভনা। তাঁর দেখানো পথে হেঁটে এবার নজির তৈরি করলেন দমদম ক্যান্টনমেন্টের সমর চক্রবর্তীও। এক মাসের ব্যবধানে দুই পরিবার দেখিয়ে দিল, মানুষ মানুষের জন্য। শরীরের মৃত্যু হয়। মনুষ্যত্বের নয়।