কলকাতা: চারদিন ধরে ফেরার থাকার পর আদালতের দ্বারস্থ হয়েছিলেন, কিন্তু হাজরা রোডে মার্সিডিজের ধাক্কায় একজনের মৃত্যুর ঘটনায়, গ্রেফতারি এড়াতে পারলেন না বরুণ মাহেশ্বরী!
পুলিশ সূত্রে দাবি, দুর্ঘটনার পর গরচা রোডের বাড়িতে ফিরলেও, পরে মোবাইল ফোন বন্ধ করে গা ঢাকা দেন তিনি। আশ্রয় নেন কলকাতা ও সংলগ্ন এলাকায় একাধিক বন্ধুর বাড়িতে।
বুধবার সকালে আচমকাই আলিপুর জেলা ও দায়রা আদালতে আগাম জামিন চেয়ে আবেদন করেন বরুণ। দাবি করেন, রবিবার ভোররাতে ক্লাবে বন্ধুদের পার্টিতে গিয়েছিলেন তিনি। সেখানে দীর্ঘক্ষণ কাটানোর পর এক বন্ধুকে নিয়ে বেরোন।
আলিপুরে ওই বন্ধুকে গাড়ি থেকে নামিয়ে, বাড়ি ফেরার জন্য হাজরা রোড ধরেন। বরুণের দাবি, সতর্ক হয়ে মাঝারি গতিতে গাড়ি চালাচ্ছিলেন তিনি। সামনে দেখেন, স্কুটারে চেপে তিন জন যাচ্ছে। কারও-র মাথায় হেলমেট ছিল না, স্কুটারটি টলছিল। আচমকাই সেটি ইউ-টার্ন করে! ফলে ব্রেক কষেও সংঘর্ষ এড়ানো যায়নি। গাড়ির ধাক্কায় তিন আরোহীই স্কুটার থেকে পড়ে যান!
বরুণের আইনজীবীর দাবি, গাড়ির গতি সীমিত ছিল তার প্রমাণ এটা, কারণ, জোরে চালালে, মার্সিডিজের মতো গাড়ির ধাক্কায় তিনজনের প্রাণহানির আশঙ্কা থাকত। অনিচ্ছাকৃত খুনের অভিযোগ সঠিক নয়, এটা দুর্ঘটনা। যদিও এক প্রত্যক্ষদর্শীদের বয়ানের সঙ্গে মিলছে না বরুণের দাবি!
বরুণের দাবি, দুর্ঘটনার পর আহতদের উদ্ধারের চেষ্টা করেন তিনি। কিন্তু এয়ার ব্যাগ খুলে যাওয়ায় গাড়ি লক হয়ে গিয়েছিল। সেইসময় কয়েক জনকে এগিয়ে আসতে দেখে ভয় পেয়ে গাড়ি ছেড়ে পালান।
কিন্তু কোনটা সত্যি? বরুণের দাবি, নাকি এই প্রত্যক্ষদর্শীর বয়ান? পুলিশ সূত্রে দাবি, বরুণ মার্সিডিজ নিয়ে যে ঢুকছেন, সেটা হাজরা মোড়ের সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজে ধরা পড়েছে। কয়েকজন লোক স্থানীয় পুলিশ কিয়স্কে এসে কিছু বলছেন, এমন ছবিও ক্যামেরাবন্দি হয়েছে। কিন্তু দুর্ঘটনাস্থলে কোনও সিসিটিভি ক্যামেরা ছিল না। ফলে সেখানে ঠিক কী ঘটেছিল, তা নিয়ে ধন্দ তৈরি হয়েছে।
রহস্যভেদ করতে, প্রত্যক্ষদর্শী, কিয়স্কের পুলিশকর্মী এবং আহত দু’জনের বয়ানের সঙ্গে বরুণের বয়ান মেলাবেন গোয়েন্দারা।