কলকাতা: পার্ক স্ট্রিটে তরুণীর হত্যা তদন্তে নয়া মোড়। হোটেলেই খুন তরুণী। ম্যানেজারকে আটক করে দফায় দফায় জেরা। আততায়ী ও তরুণীকে আগেই চিনতেন ম্যানেজার, দাবি পুলিশের।
দেহের ওপর কাঁথা চাপা দিয়েই কাঁচা কাজ করে ফেলেছিলেন হোটেলের ম্যানেজার। সেই ভুলই পুলিশের হাতে ধরিয়ে দিল তাঁকে। আর ম্যানেজারকে জেরা করেই এজেসি বোস রোডে দেহ উদ্ধারের ঘটনায় কিনারার প্রায় কাছাকাছি পৌঁছে গেলেন তদন্তকারীরা। প্রাথমিক তদন্তে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে পুলিশ সূত্রে দাবি,


তরুণী হোটেলের ম্যানেজারের পূর্ব পরিচিত। হোটেলেই তাঁকে খুন করা হয়েছে।
কলকাতা পুলিশের হোমিসাইড শাখা এবং পার্ক স্ট্রিট থানার পুলিশের দাবি,
প্রথম থেকেই তাদের মনে হচ্ছিল, এই খুন বাইরে কোথাও হয়নি। কারণ, এরপর হোটেলে তল্লাশি চালাতে গিয়েই তাঁরা দেখেন, সেখানকার ঘরে যে কাঁথাগুলি রয়েছে, সেরকমই কাঁথা দেহের ওপরও চাপা দেওয়া ছিল।
পুলিশ সূত্রে দাবি, সন্দেহ আরও ঘনীভূত হয় যখন, তদন্তের সময় হোটেলের ম্যানেজার দাবি করেন, তাঁদের সবক’টি সিসিটিভি ক্যামেরা একসঙ্গে খারাপ হয়ে গিয়েছে।
এরপরই ম্যানেজারকে থানায় নিয়ে গিয়ে টানা জেরা শুরু করে পুলিশ। তদন্তকারীদের দাবি, সেই জেরার মুখেই শেষমেশ ভেঙে পড়েন হোটেলের ম্যানেজার। পুলিশ সূত্রে খবর, জেরার মুখে তিনি দাবি করেন,
শুক্রবার ওই তরুণী এক যুবকের সঙ্গে হোটেলে আসেন। চাবি নিয়ে তাঁরা একটি ঘরে চলে যায়।
পুলিশ সূত্রে দাবি, ম্যানেজার জানিয়েছেন,
ওই তরুণী এবং যুবক আগেও এই হোটেলে এসেছেন।
তবে সেদিন একটু পরেই যুবক ঘর থেকে ছুটে এসে বলেন, তরুণী গলায় দড়ি দিয়েছেন। তিনি ডাক্তার ডাকতে যাচ্ছেন।
পুলিশ সূত্রে খবর, ম্যানেজার দাবি করেছেন,

তিনি ঘরে গিয়ে দেখেন তরুণীর দেহ ঝুলছে। অনেকক্ষণ কেটে গেলেও ওই যুবক আর ফিরে আসেননি।

এরপর তিনিই দেহটি বাইরে রেখে দেন। হোটেল থেকে একটি কাঁথা নিয়ে দেহের ওপর চাপা দিয়ে দেন।
তবে পুলিশ সূত্রে দাবি,
ম্যানেজারের এই দাবিকেই তাঁরা একেবারে সত্যি বলে মেনে নিতে পারছেন না। কারণ, তরুণীর ঝুলন্ত দেহ দেখেছেন বলে দাবি করলেও, সেরকম কোনও দড়ি তিনি দেখাতে পাননি। দড়িটি কোথায় গেল, এই প্রশ্নের কোনও সদুত্তরও দিতে পারেননি।
তদন্তকারীদের ধারণা,
হোটেলের ম্যানেজার এই ষড়যন্ত্রে জড়িত। সেই জন্য তাঁকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তাঁকে সঙ্গে নিয়েই তরুণীর সঙ্গী যুবকের খোঁজে তল্লাশি চালানো হবে। খোঁজ মিললে দু’জনকে সামনাসামনি বসিয়ে জেরাও করা হবে।